ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে?
বাংলা সাংলাপ ডেস্কঃ পদ ছাড়ছেন থেরেসা মে—ঘোষণা এসে গেছে। মন্ত্রিসভা ও দলীয় আইনপ্রণেতাদের প্রবল চাপের মুখে আগামী জুনে পদত্যাগ করবেন বলে গতকাল শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে থেরেসা মে জানিয়েছেন। এরপর থেকে তাঁর জায়গা কে নেবেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে তোড়জোড়। কারণ, তাঁর উত্তরসূরি মানেই তো যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে থেরেসা মে বলেন, আগামী ৭ জুন তিনি কনজারভেটিভ পার্টির প্রধানের পদ ছাড়বেন। তবে নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন তিনি।
এদিকে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি জানিয়েছে, জুলাইয়ের মধ্যেই থেরেসা মের উত্তরসূরি নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। পার্টির প্রধান নেতারা মনে করছেন, জুলাই মাসের শেষ দিকে নতুন নেতা নির্বাচনের কাজ শেষ করতে পারবেন তাঁরা।
টরি দল থেকে ৭ জুন পদত্যাগের পর নেতৃত্ব নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু করার ব্যাপারে কমিটির চেয়ারম্যানের সঙ্গে একমত হয়েছেন মে। এখন পর্যন্ত মের উত্তরসূরি হতে ইচ্ছুক চারজন প্রার্থীর নাম নিশ্চিত করেছে বিবিসি অনলাইন। তাঁরা হলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জেরেমি হান্ট, আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী ররি স্টুয়ার্ট, যুক্তরাজ্যের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন এবং সাবেক কর্ম ও পেনশনবিষয়ক মন্ত্রী ইস্থার ম্যাকভি। এ ছাড়া স্যার গ্রাহামসহ কম করে হলেও আরও ১০ থেকে ১২ জন প্রার্থী প্রতিযোগিতাটিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই নিচ্ছেন।
যুক্তরাজ্যের কর্মসংস্থান ও পেনশনমন্ত্রী অ্যাম্বার রুড অবশ্য প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগেই সম্ভাব্য তালিকা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফকে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না এখনই আমার সময় এসেছে।’ ভবিষ্যতে জনসনের সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে এর আগেও কাজ করেছি। একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ভালো ছিল।’
গতকাল আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী পরিবেশবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল গোভ নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেননি। দিনটিকে তিনি ‘প্রধানমন্ত্রীর দিন’ বলে উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ নাগরিক অবশ্য ধারণা করছেন, বরিস জনসনই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
টরি এমপিরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশীদের ১০ জুনের মধ্যেই নাম জমা দিতে হবে। যে–কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। প্রার্থীদের মধ্যে সর্বশেষ দুজন অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত ভোট দিতে থাকবেন পার্টির সদস্যরা। তাঁদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন পরবর্তী বিজয়ী।
গত বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যসংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার। সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত শেষ নেতা ছিলেন ডেভিড ক্যামেরন, সেটিও ২০০৫ সালের কথা। ২০১৬ সালে নেতৃত্ব চলে যায় থেরেসা মের হাতে।
এবারই প্রথম কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবেন। তাতে অবশ্য আপত্তি জানিয়েছেন বিরোধী দলের এক নেতা।
ডাউনিং স্ট্রিটে নিজের বিদায়ের কথা জানিয়ে থেরেসা মে বলেন, তিনি ব্রেক্সিট কার্যকর করতে পারেননি, এটি খুবই দুঃখজনক কথা। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন, তিনি দেশের সর্বোচ্চ স্বার্থে কাজ করবেন বলে আশা করেন তিনি।
সুইজারল্যান্ডে এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে অংশ নেওয়া বরিস জনসন জানান, নতুন প্রধানমন্ত্রীর হাতে সবকিছু ভিন্নভাবে শুরু করার সুযোগ থাকবে।
ব্রেক্সিটের ব্যাপারে সম্মেলনে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘৩১ অক্টোবর আমরা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছেড়ে চলে আসছি, তাতে কোনো চুক্তি হোক বা না হোক আমরা পরোয়া করি না। ভালো চুক্তি পাওয়ার পূর্বশর্তই হলো কোনো চুক্তি না থাকা।’