থমকে গেল ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে সম্পাদিত নতুন ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন প্রশ্নে আজ শনিবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতা অলিভার লেটইনের আনা একটি সংশোধনী প্রস্তাবে পার্লামেন্ট সায় দেওয়ায় আটকে গেছে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি।
এর ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে জটিলতা বেশ বেড়ে গেল। বিরোধী আইনপ্রণেতাদের উদ্যোগে এর আগে পাস হওয়া এক আইনের কারণে প্রধানমন্ত্রীকে এখন ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার জন্য ইইউর কাছে আবেদন করতে হবে। ‘বেন অ্যাক্ট’ নামে পরিচিত ওই আইনে বলা হয়েছে, ১৯ অক্টোবরের (শনিবার) মধ্যে সরকার ব্রেক্সিট চুক্তি পাসে ব্যর্থ হলে অথবা চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকরে পার্লামেন্টের অনুমোদন না পেলে অবশ্যই ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে হবে।
শনিবার সেই দিনক্ষণ পার হলেও প্রধানমন্ত্রী বরিস বলেছেন, তিনি ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করবেন না। আবার আইনও অমান্য করবেন না। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী আসলে কি করতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে এক বড় রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অলিভার লেটউনের আনা প্রস্তাবে বলা হয়, ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটির আগে ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় আইন পাসের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দিতে হবে। ৩২২ বনাম ৩০৬ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। সরকারের অংশীদার ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) ১০ জন আইনপ্রণেতার সবাই প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন। দলটি আগেই বরিসের সম্পাদিত চুক্তি সমর্থন করবে না বলে জানিয়ে দেয়।
অলিভার লেটউইন বলেন, তিনি বরিস জনসনের চুক্তিতে সমর্থন দেবেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের কাজ শেষ না করে চুক্তিতে সমর্থন দেওয়া হলে সরকার ব্রেক্সিট পেছানোর আবেদন না করে রেহাই পেয়ে যাবে। আর ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আইন প্রণয়নের কাজ শেষ না হলে, চুক্তি ছাড়াই বিচ্ছেদ ঘটানোর সুযোগ নিতে পারে সরকার। চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদের ঝুঁকি এড়াতেই তাঁর ওই প্রস্তাব।
পার্লামেন্টে পরাজয়ের প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, আইনপ্রণেতারা অলিভার লেটউইনের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট যে দিয়েছেন, তাতে তিনি আশ্চর্য হননি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিচ্ছেদসংশ্লিষ্ট আইনগুলো পাসের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সরকার ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর ভোটাভুটি সম্পন্ন করতে চায়।
প্রধান বিরোধী দল লেবারের নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ‘বেন অ্যাক্ট’ অনুযায়ী বিচ্ছেদের দিনক্ষণ পেছানোর আবেদন জানাতে সরকার বাধ্য। প্রধানমন্ত্রীর উচিত দ্রুত সেই আইন মানা। অন্য বিরোধী দলগুলোও ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।