কী পরিবর্তন আনবে বৃটেনের কনজারভেটিভ সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার!
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ বুথ ফেরত জরিপ বিবেচনায় সাধারণ নির্বাচনে বড় ধরণের জয় পেতে যাচ্ছে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। সব মিলিয়ে ৩৬৮ আসনে জয় পেতে চলেছে দলটি। একক দল হিসেবেই সরকার গঠন করতে পারবে তারা। এমনটা হলে, আগামী বছরগুলোয় কনজারভেটিভ সরকার বৃটেনের জন্য যা বয়ে আনতে পারে তা নিচে তুলে ধরা হলো:
ব্রেক্সিট
কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ব্রেক্সিট। দলপ্রধান জনসন জানিয়েছেন, তিনি বড়দিনের আগেই পার্লামেন্ট চালু করতে চান। ব্রেক্সিট নিয়ে তার চুক্তি পাস করিয়ে ব্রাসেলসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চান। তার প্রতিশ্রুত সময় অনুসারে, আগামী ৩১শে জানুয়ারির মধ্যেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেড়িয়ে যাবে বৃটেন।
কনজারভেটিভ পার্টির সকল প্রার্থীই জনসনের চুক্তি পাস করাতে সম্মত হয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। সরকার গঠনের পর সহজেই চুক্তিটি পার্লামেন্ট থেকে পাস হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আলোচনার সময়ের কোনো বৃদ্ধি নয়
৩১শে জানুয়ারির মধ্যে ইইউ ও বৃটেন চুক্তিতে সম্মত হলে রূপান্তর বা অবস্থান্তর সময়ে ঢুকবে বৃটেন।
ইইউ’র সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করবে বৃটিশ সরকার। বর্তমান চুক্তি অনুসারে, এই আলোচনার সময় ২০২২ পর্যন্ত চলতে পারে। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় কনজারভেটিভরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, ২০২০ সালের মধ্যেই তারা আলোচনা শেষ করবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছে ২০২০ সালের মধ্যে বৃটেন-ইইউ নতুন বাণিজ্যিক চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তেমনটা হলে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের মতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে পড়তে পারে বৃটেন।
ফেব্রুয়ারিতে বাজেট
সরকার গঠনের পর ফেব্রুয়ারির মধ্যে ব্রেক্সিট পরবর্তী বাজেট পাসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি। ওই বাজেটে দেশের অভ্যন্তরীন বিষয় যেমন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খরচ বৃদ্ধির প্রতি অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
অভিবাসন
কনরভেটিভ পার্টি সরকার গঠনের পর বৃটেনের অভিবাসন নীতিমালা কঠোর করার পরিকল্পনা করছে। অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন নীতিমালার ঘরানায় পয়েন্ট-ভিত্তিক অভিবাসন চালু করার কথা জানিয়েছে তারা। এই পদ্ধতিতে বৃটেনে সার্বিক অভিবাসন হ্রাস পাবে। বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ অভিবাসীর হার কমে আসবে।
নতুন অভিবাসন পদ্ধতির আওতায়, ইইউ ও এর Ÿাইরে বসবাসকারীরা বৃটেনে অভিবাসনের ক্ষেত্রে একই সুবিধা পাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সেখানে অভিবাসনের জন্য চাকরির প্রস্তাব থাকতে হবে। এছাড়া, জনসেবায় লোকবল ঘাটতি পূরণে বিশেষ ব্যবস্থায় অভিবাসী নেয়া হবে।
সরকারি ঋণ গ্রহণ বাড়বে
বৃটিশ অর্থমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জানিয়েছেন, তিনি দেশের অর্থনৈতিক বিধান নতুন করে লিখবেন। এর মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে দেশে ২ হাজার কোটি পাউন্ড বেশি অর্থব্যয় করতে পারবে সরকার। অবকাঠামোগত উন্নয়নে মোট অর্থনীতির ৩ শতাংশ ব্যয় হবে। বর্তমানে এই হার হচ্ছে ১.৮ শতাংশ। বাড়বে সরকারের ঋণ গ্রহণের সক্ষমতা।
বাণিজ্য
জনসনের দল জানিয়েছে, তারা আগামী তিন বছরের মধ্যে বৃটেনের মোট বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় নিয়ে আসতে চায়। তারা যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও জাপানের সঙ্গে নতুন চুক্তি করার পরিকল্পনা করছে।