প্রধানমন্ত্রী আইসিইউতে যেভাবে রাত পার করলেন
বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ
বরিস জনসনকে গভীর রাতে শ্বাস নিতে লড়াই করার পরে চার লিটার অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিল কারণ তাকে তড়িৎ যত্নে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
লন্ডনের সেন্ট থমাস হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা চিকিত্সকরা বিকেলে তাঁর অবনতি দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন, তবে আইসিইউ-র অন্যরা যেমন করেন তার মতো অক্সিজেনের দরকার পড়েনি তাঁর।
ডাউনিং স্ট্রিট জানাচ্ছে, তাকে সেখানে দারুন পরিচর্যা দেয়া হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়।
রবিবার তাকে ভর্তি করা হয়েছিল সেন্ট থমাস হাসপাতালে।
বাকিংহাম প্যালেস সূত্র জানিয়েছে, রানী মি. জনসনের শরীরের ব্যাপারে নিয়মিত খবর রাখছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ-সহ বিশ্বনেতারা মি. জনসনের প্রতি সমবেদনা ব্যক্ত করেছেন।
সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, মি. জনসন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে বলেছেন।
করোনাভাইরাসের উপসর্গ কমার কোন লক্ষণ না দেখা দিলে রবিবার ৫৫-বছর বয়স্ক প্রধানমন্ত্রীকে লন্ডনের সেন্ট টমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিবিসির রাজনৈতিক সংবাদদাতা ক্রিস মরিস জানাচ্ছেন, সোমবার বিকেলে মি. জনসনকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। তারপর তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিউতে) নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তাকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়নি বলে ক্রিস মরিস জানিয়েছেন।
দশদিন আগে মি. জনসন পজিটিভ শনাক্ত হবার পর থেকে ডাউনিং স্ট্রিটে আইসোলেশনে ছিলেন।
‘গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন হয়েছে’
”আমাদের বলা হয়েছে তিনি সচেতন আছেন কিন্তু দুপুরের পরে তার অবস্থার অবনতি হয়,” বিবিসি রাজনৈতিক সম্পাদক লরা কুনসবার্গ জানিয়েছেন।
লরা কুনসবার্গ বলেন, গত ১৮ ঘণ্টা ধরে বলা হচ্ছিলো, প্রধানমন্ত্রী ‘নিয়ন্ত্রণে আছেন’ এবং তিনি ‘যোগাযোগ রাখছেন’। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন বার্তা দেয়া হচ্ছে।
”গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন হয়েছে, যার ফলে তিনি তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দায়িত্ব নেবার জন্য অনুরোধ করেছেন, যেখানে তার থাকার কথা,” লরা কুনসবার্গ বলেন।
প্রধানমন্ত্রীকে ভেন্টিলেটারের কাছে রাখা হয়েছে
মি. জনসনকে ইনটেসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিউতে) যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাসে সাহায্য করার জন্য ভেন্টিলেটারের ব্যবস্থা রয়েছে।
বিবিসির স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদদাতা জেমস গ্যালাহার জানাচ্ছেন যাদের অবস্থা সাধারণত খুবই খারাপ তাদের ইনটেনসিভ কেয়ারে রাখা হয়।
প্রধানমন্ত্রী মি. জনসনকে যে ইনটেনসিভ কেয়ারে রাখা হয়েছে তার থেকে বোঝা যায় তিনি কতটা গুরুতর অসুস্থ।
তার অবস্থা সম্পর্কে পুরো তথ্য এখনও জানা যাচ্ছে না, তবে যেটা এখনও পর্যন্ত জানা গেছে সেটা হল তার এখনও ভেন্টিলেটারের প্রয়োজন হয়নি।
মি. গ্যালাহার বলছেন ইনটেনসিভ কেয়ারে সব রোগীকে ভেন্টিলেশনে রাখা হচ্ছে না, তবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত যাদের ইনটেনসিভ কেয়ারে নেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভেন্টিলেটারে দেয়া হয়েছে।
‘সংহতি এবং স্পৃহা’
বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে রানিকে মি. জনসনের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত রাখা হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনে ‘অভাবনীয় সংহতি এবং স্পৃহা কাজ করছে।’
মি. রাব বলেন তিনি এবং মন্ত্রীসভার সদস্যরা ‘যত শীঘ্র সম্ভব’ মি. জনসনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
”এভাবেই আমরা দেশকে করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ থেকে বের করে নিয়ে আসবো,” তিনি বলেন।
ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির সদ্য-নির্বাচিত নেতা স্যার কির স্টার্মার প্রধানমন্ত্রীর অসুস্থতাকে ‘চরম দুঃখজনক খবর’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ”সারা দেশের সহানুভূতি এখন প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের প্রতি রয়েছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ‘একজন ভাল বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, মি. জনসন খুবই শক্তমনা এবং ‘সহজে হার মানেন না।’