প্রধানমন্ত্রী বললেন ‘বেঁচে থাকা কিম্বা মরে যাওয়া, যেকোন কিছুই হতে পারতো’

Spread the love

বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়িতে ফেরার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, “পরিস্থিতি যেকোন দিকেই যেতে পারতো।”

৫৫ বছর বয়সী মি. জনসন করোনাভাইাসে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার পর ঠিক এক সপ্তাহ আগে গত রবিবার তাকে লন্ডনের সেন্ট টমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

এর আগে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর দশ দিন তিনি নিজেই ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে নিজেকে আর সকলের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলেন। সেটাও তিনি ঘোষণা করেছিলেন টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে।

হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন তিনি সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন কিন্তু হঠাৎ করেই সোমবার দুপুরের পর থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

আইসিইউতে তিন রাত কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। পরে অবস্থার উন্নতি হলে বৃহস্পতিবার আবার তাকে সাধারণ ওয়ার্ডে নিয়ে আসা হয়।

আজ রবিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মি. জনসন টুইটারে পোস্ট করা আরেকটি ভিডিওতে বলেছেন, “বেঁচে থাকা কিম্বা মরে যাওয়া, যেকোন কিছুই হতে পারতো।”

তিনি বলেছেন, হাসপাতালের ফ্রন্ট লাইনে হাসপাতালের কর্মীরা কতোটা সাহসের সঙ্গে কাজ করছেন সেটা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন।

বান্ধবী ক্যারি সিমন্ডসের সাথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
বান্ধবী ক্যারি সিমন্ডসের সাথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

মি. জনসন জানিয়েছেন দুজন নার্স তাকে সার্বক্ষণিক সেবা দিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের জেনি এবং পর্তুগালের লুইস তার বেডের পাশে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান করেছেন।

এই সময়টাকে তিনি উল্লেখ করেছেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে। ভিডিওতে তিনি আরো কয়েকজন হাসপাতাল কর্মীর নাম উল্লেখ করে তাদের সবাইকে ধন্যাবদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সুস্থ হয়ে এমন এক দিনে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরে গেলেন যেদিন ব্রিটেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

সরকারের প্রধান একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা স্যার জেরেমি ফারার হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে ইউরোপের মধ্যে ব্রিটেনের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হতে পারে।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেছেন, জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বা এনএইচএসের কর্মীরা প্রাণঘাতী ভাইরাসের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন।

“তাদের সাহস, ত্যাগ ও দায়িত্ববোধকে ধন্যবাদ জানাই। আর এসব কারণেই এনএইএস কখনো পরাজিত হবে না।”

মি. জনসনকে আইসিইউতে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তাকে ভেন্টিলেটর দিতে হয়নি।

ডাউনিং স্ট্রিট বলছে, প্রধানমন্ত্রী আরো কিছু দিন কাজের বাইরে থাকবেন আর এসময়টা তিনি প্রধানমন্ত্রীর কান্ট্রি রেসিডেন্স চেকার্সে কাটাবেন।

“তার মেডিকেল টিমের পরামর্শ অনুসারে প্রধানমন্ত্রী এখনই তার কাজে ফিরছেন না।”

Chequers
কাজে যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ এই সরকারি বাড়িতে থাকবেন বরিস জনসন

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন, ডাক্তারদের পরামর্শেই তিনি আবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনে ফিরে আসবেন।

গাইজ এন্ড সেন্ট টমাস হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী ড. ইয়ান অ্যাবস বলেছেন: “ এই কৃতিত্ব হাসপাতালের পুরো টিমের অসাধারণ পেশাদারিত্বের। প্রধানমন্ত্রীকে যে ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, সাধারণ রোগীকেও এই একই ধরনের চিকিৎসা দেওয়া অব্যাহত থাকবে।”

প্রধানমন্ত্রী জনসনের বান্ধবী ক্যারি সিমন্ডসও সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আর দু’মাস পরেই তার সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা রয়েছে।

টুইটারে তিনি এক পোস্টে লিখেছেন: “যারা সহযোগিতা করেছেন ও সুস্থতা কামনা করে বার্তা দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমি খুবই ভাগ্যবান।”

গত সপ্তাহের কিছু সময়কে তিনি তার জীবনের “এক অন্ধকার সময়” বলে উল্লেখ করেছেন।

ক্যারি সিমন্ডসেরও করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে তিনি নিজেকে সবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন কিন্তু তার কোন টেস্ট হয়নি এখনও।


Spread the love

Leave a Reply