উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব কিম জং আনের পর কার হাতে যাবে
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃউত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আনের স্বাস্থ্য নিয়ে গত ক’দিন ধরে নানা গুজব এবং জল্পনা-কল্পনা শোনা যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত হয়তো দেখা যাবে কিছুই ঘটেনি। কিন্তু তার অনুপস্থিতিতে স্বল্প অথবা দীর্ঘমেয়াদে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রক্ষমতায় তার উত্তরসূরী কে হবেন সেই প্রশ্ন থেমে নেই। বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে বিবিসি জানার চেষ্টা করেছে কে হতে পারেন কিম জং-আনের সম্ভাব্য উত্তরসুরী। ইতিহাস কি এবারও ৭০ বছরেরর বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা এই পরিবারের পক্ষে থাকবে?
কিম ইল-সাং ১৯৪৮ সালে উত্তর কোরিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তারপর থেকে এই পরিবারেরই কোন না কোন পুরুষ সদস্য দেশটির দায়িত্বে আছেন। এই পরিবারকে ঘিরে যেসব জনশ্রুতি, তা উত্তর কোরিয়ার সমাজের সর্বস্তরে গভীরভাবে প্রোথিত।
উত্তর কোরিয়ার এই পরিবারটি কত মহান সে সম্পর্কে প্রোপাগান্ডা আর মগজ ধোলাই শুরু হয় শিশুরা পড়তে শুরু করতে পারার আগেই। স্কুলে যাওয়া শুরু করার আগেই শিশুরা গান গাইতে শুরু করে: “আমি আমাদের নেতা কিম জং-আনকে দেখতে চাই।”
উত্তর কোরিয়া ক্ষমতার শীর্ষে এরকম কোন প্রতীকি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়া দেশটিকে কি কল্পনা করা সম্ভব? দেশটির ক্ষমতাবান অভিজাত শ্রেণি কীভাবে নিজেদেরকে সংগঠিত রাখে এবং পুরো সমাজকে পরিচালিত করে?
এর সহজ উত্তর হচ্ছে: আমরা জানি না। আরো মজা করে বলতে গেলে, তারাও আসলে জানে না। কারণ তাদের এই কাজটা কখনোই করতে হয়নি।
উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বে সবসময়ই ছিল একজন কিম….
কিম জং-আন যখন ক্ষমতা গ্রহণের জন্য তৈরি হচ্ছিলেন, তখন তার শাসনকে বৈধতা দেয়ার জন্য উত্তর কোরিয়ায় ‘পেকটু ব্লাডলাইন’ বলে একটা কথা চালু হয়। ‘পেকটু পর্বতমালাকে’ ঘিরে উত্তর কোরিয়ার অনেক পৌরাণিক গল্পগাঁথা চালু করা হয়েছে। বলা হয়ে থাকে দেশটির প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সাং এই পর্বতমালা থেকে গেরিলা যুদ্ধ চালিয়েছিলেন। কিম জং-ইলের জন্ম নাকি সেখানে। কিম জং-আন এখনো সেখানে যান যখন তিনি কোন গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেন এবং সেটির গুরুত্ব মানুষের কাছে তুলে ধরতে চান।
উত্তর কোরিয়া নামের রাষ্ট্রটি পরিচালিত হয় যে রাজনৈতিক আদর্শের ওপর ভিত্তি করে, তার কেন্দ্রে সব সময় ছিল কোন না কোন একজন কিম।
কিন্তু এরকম একজন উত্তরাধিকারীর অনুপস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ার অবস্থা কেমন হবে?
ধারণা করা হয় কিম জং-আনের তিন সন্তান, কিন্তু তাদের বয়স একেবারেই কম। সবচেয়ে বড়জনের বয়স দশ, আর একেবারে ছোটটির বয়স তিন বছর। কিম জং-আন নিজে যখন ক্ষমতায় আসেন তখন তার বয়স ছিল ২৭ বছর।
এরকম সম্ভাবনা হয়তো আছে যে এক ধরণের যৌথ নেতৃত্ব তার শূণ্যতা পূরণ করতে পারে, যেমনটি ঘটেছে ভিয়েতনামে। এই যৌথ নেতৃত্ব নিজেদের বৈধতা অর্জনের জন্য কমিউনিস্ট বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতাদের আদর্শ এবং নীতির দিকেই বেশি করে ঝুঁকবে।
উত্তর কোরিয়ার ঘটনাবলী যারা পর্যবেক্ষণ করেন, তারা হয়তো বলতে পারেন দেশটিতে কারা গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে অধিষ্ঠিত এবং গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলো সম্পর্কে নানা সূত্র থেকে গোয়েন্দা তথ্যও হয়তো জানতে পারেন। কিন্তু তাদের পক্ষে আসলে বলা সম্ভব নয় সেখানে নেতৃত্ব দখলের জন্য কী ধরনের উপদল তৈরি হচ্ছে এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে কে বেশি ক্ষমতাশালী। অনেক সময় দেখা যায় কোন প্রতিষ্ঠানের যিনি আলংকারিক প্রধান, তার তুলনায় উপ প্রধান বা উপ পরিচালক হয়তো বেশি ক্ষমতাশালী। সুতরাং উত্তর কোরিয়ায় কোন কিছু সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা আসলেই খুবই কঠিন কাজ।
অবশিষ্ট তিন ‘কিম’
যদি কিম জং-আন উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতার দৃশ্যপট থেকে উধাও হয়ে যান তখন তার সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হিসেবে তিনজন ‘কিম’ দৃশ্যপটে আসতে পারেন। তবে পারিবারিক শাসন চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের তিনজনেরই কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।
প্রথম আসে কিম ইয়ো-জং এর কথা। তিনি হচ্ছেন কিম জং-আনের সবচেয়ে ছোট বোন। বলা হয়ে থাকে তিনি তার বাবার খুবই প্রিয় পাত্রী ছিলেন। তার ডেঁপোমি আর রাজনীতির ব্যাপারে আগ্রহের কারণে খুবই অল্প বয়স থেকেই তিনি তার বাবা কিম জং-ইলের প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠেন।
কিম ইয়ো-জং বেশ মার্জিত, নম্র এবং সুশৃঙ্খল। তিনি যে তার ভাই কিম জং-আনের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ, সেটা নিয়ে অনেক কিছুই বলা হয়ে থাকে। সিঙ্গাপুরে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং কিম জং-আনের শীর্ষ বৈঠক হয়, তখন চুক্তি সই করার জন্য পাশ থেকে কলম এগিয়ে দিতে দেখা গেছে তাকে। হ্যানয়ে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকের সময়ও তার উপস্থিতি পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি এড়ায়নি। তার ভাই যখন রাষ্ট্রনায়কোচিত ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন, তখন দেখা গেল পেছনে উঁকি দিচ্ছেন ছোট বোন কিম ইয়ো-জং।
কিন্তু হ্যানয়ের এই শীর্ষ বৈঠকের ব্যর্থতার পর সাময়িক পদাবনতি থেকে নাকি তারও রেহাই মেলেনি। তবে এই খবরটি আসলে কখনোই নিশ্চিত করা যায়নি।
উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নীতিনির্ধারণী সংস্থা, স্টেট এফেয়ার্স কমিশনের সদস্য নন তিনি। তবে কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর একজন বিকল্প সদস্য এবং প্রোপাগান্ডা এন্ড এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের (পিএডি) ভাইস ডিরেক্টর। উত্তর কোরিয়ার এই পিএডি খুবই ক্ষমতাধর সংস্থা । এরা পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রের আদর্শগত আনুগত্য নিশ্চিত করে।
কিন্তু কিম ইয়ো-জং তো একজন নারী। উত্তর কোরিয়ার মতো সাংঘাতিক রকমের পুরুষতান্ত্রিক একটি দেশে তিনি ক্ষমতার শীর্ষে অধিষ্ঠিত হবেন এটা কল্পনা করা বেশ কঠিন। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রযন্ত্রে চরম পুরুষ প্রাধান্য। সেখানে নারী বা পুরুষ কার কী ভূমিকা, কার কাছে কী প্রত্যাশা- তা তাদের লিঙ্গ অনুযায়ী নির্ধারিত। এরকম একটি রক্ষণশীল সমাজে তিনি রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতা হবেন,সামরিক বাহিনীকে পরিচালনা করবেন, তা নারীর কাছে প্রত্যাশিত দায়িত্ব-কর্তব্যের সঙ্গে যায় না।
দ্বিতীয় যে কিমের কথা শোনা যায় তার পুরো নাম কিম জং-চাওল। তিনি কিম জং-আনের বড় ভাই। তাকে কখনোই রাজনীতি বা রাষ্ট্রক্ষমতার ব্যাপারে আগ্রহী বলে মনে হয়নি। (শোনা যায় তাঁর ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে সঙ্গীতশিল্পী এরিক ক্ল্যাপটনের ব্যাপারে)। তিনি বড়জোর কিম পরিবারের একটি প্রতীকি সংযোগের কাজ করতে পারেন। হয়তো তাকে কোন একটি ফাউন্ডেশনের প্রধান করা হতে পারে এবং মাঝে মধ্যে হয়তো তাকে দিয়ে কোন একটা বক্তৃতা পড়ে শোনানো হতে পারে।
তৃতীয় যার কথা শোনা যাচ্ছে তিনি হচ্ছেন কিম পিয়ং-ইল। তিনি কিম জং-ইলের একজন সৎ ভাই। কিম ইল-সাং মারা যাওয়ার পর কিম পিয়ং-ইল হবেন উত্তরাধিকারী, এটাই ছিল তার মায়ের ইচ্ছে। কিন্তু তার এই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। কিম জং-ইল প্রভাবশালী হয়ে ওঠার পর তার সৎ মাকে কার্যত ক্ষমতা কেন্দ্র থেকে দূরে সরিয়ে দেন। কিম পিয়ং-ইলকে ১৯৭৯ সালে ইউরোপে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে তিনি বিভিন্ন জায়গায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন এবং মাত্র গত বছর তিনি উত্তর কোরিয়ায় ফিরে এসেছেন। এ কারণে পিয়ংইয়ংয়ের রাজনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের মতো নেটওয়ার্ক তার আছে বলে মনে করা হয়।
এই মুহূর্তে উত্তর কোরিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান ব্যক্তি কে
কিং জং-আনের শাসনামলে উত্তর কোরিয়ায় আরো অনেকে আছেন যারা বেশ ক্ষমতাবান এবং গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটা বলা বেশ কঠিন তাদের মধ্যে কে বা কারা সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলবেন এবং কারা কারা ক্ষমতার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হবেন।
গুরুত্বপূর্ণ একজন হচ্ছেন চু রায়ং-হে। কিম জং-আনের সঙ্গে তার সম্পর্কে অনেক উত্থান পতন আছে। কিন্তু অনেক ঝড় ঝাপটা সামলে তিনি এখন পলিটব্যুরোর প্রেসিডিয়ামের প্রেসিডেন্ট এবং একই সঙ্গে স্টেট এফেয়ার্স কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান। গত বছর তিনি বিশ বছরের মধ্যে তিনি প্রথম এরকম দায়িত্ব পেয়েছেন তার পূর্বসুরী কিম ইয়ং-নামকে সরিয়ে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনিই তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
চু রায়ং-হে সামরিক বাহিনির অনেক উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির অর্গানাইজেশন এন্ড গাইডেন্স ডিপার্টমেন্টে (ওজিডি) কাজ করেছেন। এদের কাজ হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার শাসক গোষ্ঠীর পক্ষে আনুগত্য বজায় রাখা। এটি খুবই শক্তিশালী একটি সংগঠন: উত্তর কোরিয়ায় সবাই যেন রাষ্ট্রীয় আদর্শ মেনে চলে সেটি নিশ্চিত করা এদের কাজ। চু রায়ং-হে সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান ব্যক্তি।
স্পাই মাস্টার বনাম উদীয়মান ক্ষমতাবানরা
আরেকজন হচ্ছেন কিম ইয়ং-চোল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং-আনের শীর্ষ বৈঠকের পথ নাকি তিনিই তৈরি করেছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা সাক্ষাৎ করেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক রক্ষা করে যে সরকারি দফতর, সেই ইউনাইটেড ফ্রন্ট ডিপার্টমেন্টেরও প্রধান ছিলেন। উত্তর কোরিয়ার প্রধান গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের দায়িত্বও পালন করেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা যখন ভেঙ্গে গেল তখন তার পদাবনতি ঘটে। কিন্তু এই স্পাই মাস্টার খুব বেশি সময় যে আড়ালে থাকবেন সেটার সম্ভাবনা কম।
এখানেই শেষ নয়, আরও এক কিমের নাম শোনা যাচ্ছে, তিনি হচ্ছেন কিম জে-রিয়ং। তিনি স্টেট এফেয়ার্স কমিশনের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী। এটি মোটামুটি প্রভাবশালী একটি পদ। তার সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। তবে গত বছর যখন অন্যদের ভাগ্য খারাপ যাচ্ছিল তখন মনে হচ্ছিল যেন তার ভাগ্য খুলে গেছে। উত্তর কোরিয়ার সবচাইতে বিচ্ছিন্ন প্রদেশগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব ছিল তার। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক শিল্প স্থাপনার দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
এর মানে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনার ক্ষেত্রে তার একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও হয়তো ছিল।
জং পিয়ং-টেক আরেকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। উত্তর কোরিয়ার স্টেট সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। উত্তর কোরিয়ায় রাজনৈতিক অপরাধের তদন্ত এবং সাজা দেয়া এদের কাজ। রাজনৈতিক নেতৃত্বের শারীরিক নিরাপত্তার দেখাশোনার দায়িত্বও তাদের। এগুলি বেশ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, কারণ পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা এর ওপর নির্ভর করে।
হোয়াং পিয়ং-সো হচ্ছেন আরেক জন কর্মকর্তা যিনি শীর্ষ সামরিক দায়িত্বে ছিলেন। চালিয়েছেন অর্গানাইজেশন এন্ড গাইডেন্স ডিপার্টমেন্টের (ওজিডি) মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর। তবে অন্য অনেকর মতো তিনিও পদাবনতির শিকার হয়েছেন।
সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেলরা
কোরিয়ান পিপলস আর্মিতে কয়েকজন হাতেগোনা শীর্ষ জেনারেল রয়েছেন যারা ক্ষমতার পালাবদলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। কোরিয়ান পিপলস আর্মির পলিটব্যুরোতে এই মুহূর্তে দুটি শীর্ষ পদে আছেন দুজন জেনারেল। এরা হচ্ছেন কিম সু-গিল এবং কিম ওয়ান-হোং। এই ব্যুরোর দায়িত্ব হচ্ছে সামরিক বাহিনীতে রাজনৈতিক আনুগত্য বজায় রাখা। দেশে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সময় তাদের কাজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে এই দুজনের মধ্যে নাকি দ্বন্দ্ব আছে। তারা দুজনেই কিম জং-আনের ওপর প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত।
ক্ষমতাবান এই ব্যক্তিদের মধ্যে কে কার সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াবে আর কে কার মিত্র হবে? উত্তর কোরিয়ায় কি কিম ইয়ো-জং এর পক্ষে এবং বিপক্ষে দুটি শিবির তৈরি হতে পারে? অথবা অস্থিতিশীলতার আশংকায় এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা কী থেমে যেতে পারে? কারণ ক্ষমতাবানরা কেউই চাইবেন না তাদের পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থা ধসে যাক, যার সুযোগ নিতে পারে দক্ষিণ কোরিয়া বা এমনকী চীন।
তবে এখনো পর্যন্ত কিম জং-আনের কোন নিখুঁত উত্তরসুরী নেই। তার বোন যদি দায়িত্ব নিতে চান তাকে লিঙ্গ বৈষম্যের প্রাচীর টপকাতে হবে। ভাঙ্গতে হবে পুরুষকেই উত্তরাধিকারি করার যে চিরাচরিত প্রথা, সেটি। অন্য যাদের কথা বলা হচ্ছে, তাদের কেউই সরাসরি অতি গুরুত্বপূর্ণ ‘পেকটু ব্লাডলাইনের’ কেউ নন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের ভাবতে হবে তাদের রাষ্ট্রের ঐক্যের কথা, যেটি সব আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি ভেঙ্গে এ পর্যন্ত বারে বারে টিকে গেছে।