করোনাভাইরাস: সুস্থ হওয়ার পর কি স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা ও ঘ্রাণশক্তি ফিরে পাওয়া যায়?
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন, তাদের ৯০ শতাংশই সুস্থ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই সেসব ফিরে পান বা এই অবস্থার উন্নতি হয় বলে এক গবেষণায় দেখা গেছে।
গবেষণায় বলা হচ্ছে যে ইতালিতে ৪৯% রোগী তাদের ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা ফিরে পেয়েছেন আর ৪০% বলেছেন যে তাদের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
তবে ১০% বলেছেন যে সুস্থ হওয়ার পরেও তাদের এই উপসর্গ একই রকমের রয়ে গেছে অথবা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারিতে যতো সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন সেই হিসেবে লাখ লাখ মানুষ দীর্ঘ মেয়াদে এই সমস্যায় ভুগতে পারেন।
ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদ পাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা কিম্বা এর মধ্যে কোন ধরনের পরিবর্তনকে এখন করোনাভাইরাসের অন্যতম প্রধান উপসর্গ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এই উপসর্গ দেখা দিলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিজেকে পরিবারের আর সকলের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা ও টেস্টিং-এর পরামর্শ দিচ্ছেন।
গবেষকদের আন্তর্জাতিক দলটি ১৮৭ জন ইতালিয় নাগরিক, যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ওপর এই গবেষণাটি চালিয়েছেন।
এই রোগীরা গুরুতরভাবে আক্রান্ত হননি, ফলে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়নি।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর পরই তাদের প্রত্যেককে ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। একই প্রশ্ন করা হয়েছিল এক মাস পরেও।
মোট ১১৩ জন বলেছেন যে তারা আগের মতো স্বাদ ও গন্ধ নিতে পারছেন না।
৫৫ জন বলেছেন, তারা স্বাদ ও ঘ্রাণ নেওয়ার ক্ষমতা পুরোপুরি ফিরে পেয়েছেন।
৪৬ জন বলেছেন, তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
১২ জন বলেছেন, তাদের উপসর্গ একই রকমের আছে অথবা অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে।
যাদের উপসর্গ গুরুতর ছিলো দেখা গেছে যে স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা ও ঘ্রাণশক্তি ফিরে পেতে তাদের বেশি সময় লেগেছে।
গবেষকদের একজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ক্লেয়ার হপকিন্স বলেছেন, তাদের দলটি এখন যেসব রোগীর দেহে উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী ছিলো, তাদের ওপরে গবেষণা চালাচ্ছেন।
বিবিসিকে তিনি বলেছেন, “যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা থেকে বলা যায় অধিকাংশ মানুষ স্বাদ ও গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা ফিরে পাবেন তবে, কারো কারো ক্ষেত্রে উন্নতি হবে ধীর গতিতে।”
“যারা দ্রুত গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা ফিরে যাচ্ছেন তাদের শুধু নাকের কোষগুলো আক্রান্ত হয়েছিল। আর যাদের সময় লাগছে ভাইরাসের আক্রমণে হয়তো তাদের স্নায়ুকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এসব স্নায়ু কোষ মেরামত হতে কিম্বা পুনরায় তৈরি হতে বেশি সময় লাগবে।”
আরেকজন বিজ্ঞানী ড. জশুয়া লেভি বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে এতো ব্যাপক সংখ্যক লোক আক্রান্ত হচ্ছেন যে বহু মানুষকে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও এবিষয়ে হয়তো চিকিৎসা করাতে হবে।”
তিনি বলেন, যারা দীর্ঘ সময় ধরে এই সমস্যায় ভুগবেন তারা ঘ্রাণশক্তি সংক্রান্ত থেরাপির কথা বিবেচনা করতে পারেন।