বাংলাদেশে আলোচিত রিফাত হত্যা মামলায় স্ত্রী মিন্নি সহ ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্থানীয় একটি আদালত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয় জন আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আজ এই রায় ঘোষণা করা হয়।
এই মামলায় মোট ২৪ জন আসামীর মধ্যে ১০ জনের রায় দেয়া হয়েছে, বাকি ১৪ জন আসামী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় শিশু আদালতে তাদের বিচার চলছে।
অভিযুক্ত দশজনের মধ্যে নয় জন আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। একজন আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন।
এই নয় জনের মধ্যে ছিলেন নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, যিনি জামিনে মুক্ত ছিলেন। রায় ঘোষণার বেশ কিছুক্ষণ আগেই আদালতে উপস্থিত হন।
মিন্নি শুরুতে মামলার প্রধান সাক্ষী ছিলেন, পরবর্তীতে তাকেও মামলার আসামী করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ভূবন চন্দ্র হাওলাদার এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুব বারী আসলাম। আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় তিনি জানান যে এই রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন তারা।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও বলেছেন তারা রায়ে সন্তুষ্ট নন এবং উচ্চ আদালতে যাবেন।
যে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান সুনির্দিষ্ট সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার শাস্তি দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন:
১. রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজী
২. আল কাইয়ুম রাব্বি
৩. মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত
৪. রেজোয়ান আলী খান হৃদয়
৫. মোহাম্মদ হাসান
৬. আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি
যে চারজন খালাস পেয়েছে
প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন আসামীর মধ্যে ৪ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন:
১. মোহাম্মদ মুসা
২. রাফিউল ইসলাম রাব্বি
৩. কামরুল ইসলাম সায়মন
৪. সাগর
মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহমেদ নয়ন, যিনি ‘নয়ন বন্ড’ নামে পরিচিত, জুলাই মাসের দুই তারিখে পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
পনের মাস আগে গত বছরের ২৬শে জুন বরগুনার কলেজ রোড এলাকায় দিনের বেলা কয়েকজন যুবক রিফাত শরীফের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। রিফাত শরীফের সাথে সে সময় তার স্ত্রী মিন্নিও ছিলেন।
ওই সময় তার স্ত্রী আয়েশা আক্তারকে একাই দুর্বৃত্তদের হামলা থেকে স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় ভিডিও ফুটেজে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা অনেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন বলে ভিডিওতে দেখা যায় এবং এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয় যখন হত্যাকাণ্ডের ২১ দিন পরে রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এর আগে নিহত রিফাত শরীফের বাবা তার ছেলে হত্যার সাথে মিন্নির জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন।