“বীর মুক্তিযোদ্ধা” পরিচিতিটা একান্ত নিজেদের বলে দাবি জানিয়েছেন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে প্রবাসীদের সাহায্য, সমর্থন ও কর্মকাণ্ড কীভাবে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিল তা স্মরণ করে প্রবাসী সংগঠকদের শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান মুক্তিযোদ্ধারা। সর্বক্ষণ মৃত্যুর মুখোমুখি অবস্থায় মাঠে প্রান্তরে যুদ্ধ করার সময় পুরো দেশবাসী দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে থেকে কখনোবা মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন, আশ্রয়-খাবার-সেবা দিয়েছেন, বিভিন্ন ভাবে সাহস, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, আত্মসম্ভ্রম দিয়েছেন — এসব অবদান জাতির ইতিহাসের স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়। বিগত ৪ জুলাই রবিবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভার্চুয়াল সভায় এসব বক্তব্য উঠে আসে। মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১২ জন বিশিষ্ট প্রবাসী সংগঠককে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে ভূষিত করাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌস সুলতান। মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানিয়ে সভাপতি ঘোষনা করেন যে এ সভা একান্তই মুক্তিযোদ্ধাদের নিজেদের সম্পর্কে বলার জন্য আয়োজিত এবং কোনো অবস্থাতেই এটা কারো বিপক্ষে নয়। মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও বেশ কয়েকজন কমিউনিটি নেতা ও সাংবাদিক এবং বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা এই ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত হন। মুক্তিযোদ্ধারা দাবি করেন যে “বীর মুক্তিযোদ্ধা” পরিচিতিটা প্রথম থেকেই রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের একান্ত নিজস্ব পরিচয়। তাই এখন ঐ পরিচিতিটা ঢালাওভাবে অন্যান্যদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলে বঙ্গবন্ধুর ভাষায় ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান’ মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন স্মকীয়তা থাকে না সেভাবে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের অবদানের বৈশিষ্ট্য ম্লান হয়ে যায়। সভায় অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে যেভাবে “কন্ঠযোদ্ধা”, “কলমযোদ্ধা”, “বীরাঙ্গনা” এরকম সম্মানসূচক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে অবদান কারীদের সম্মানিত করা হয়েছে সেভাবেই অন্যান্যদেরও সম্মান জানালে সব ধরণের অবদানকারীরা আপন বৈশিষ্ট্য নিয়ে সম্মানিত হবেন।
সভা আয়োজন ও সঞ্চালনায় বিশেষ সহায়তা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান খান। উক্ত সভায় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা — খলিল কাজী, ওবিই, প্রকৌশলী মেফতা ইসলাম, আব্দুস শুকুর (সিলেট), জামাল উদ্দিন (মৌলভীবাজার), বিচ্চু জালাল (ঢাকা), এহসানুল হক মিনু (ঢাকা), আতাউর রহমান কুনু, সিরাজুল ইসলাম কচি, সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল (সিলেট), হিমাংশু গোস্বামী, ইকরামুল হক, আবু মুসা হাসান, লোকমান হোসেন, সৈয়দ আবুল হাদী, এনামুল হক, মালিক শিকদার সহ কমিউনিটির পক্ষ থেকে কাউন্সিলর ড. আব্দুল আজিজ তকি, শাহ ফারুক আহমদ, সুজাত মনসুর, নজরুল ইসলাম অকিব, আব্দুল কাদির চৌধুরী মুরাদ প্রমুখ। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা — আবু তাহের, বদর উদ্দিন আহমদ, পিয়াল রায় আব্দুল হামিদ সিকদার, পান্না লাল, গোলাব আলী, নাসির উদ্দিন, আব্দুল হক, কামাল দেওয়ান, মাহমুদ হাসান এমবিই, শাহ এনাম এবং অন্যান্যদের মধ্যে শামিম আহমেদ (জাসদ), দেওয়ান কবীর আহমদ, শামীম আহমদ (যুবলীগ), মনোজ কাপালিক মিন্টু প্রমুখ। সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে বৃহত্তর জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাই রবিবার বেলা ৩টায় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও ইউরোপে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আরো একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হবে। একই লক্ষ্যে বাংলাদেশেও জনমত সৃষ্টির জন্য কার্যক্রম গ্রহণে মুক্তিযোদ্ধা সহ অন্যান্যদের অনুরোধ জানানো হয়।