রাশিয়া কি ইউক্রেনে হামলা করতে যাচ্ছে? পুতিন আসলে কি চান?

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ ইউক্রেনের বিভিন্ন সীমান্তে এখন রাশিয়ার প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার সৈন্য এবং ভারী অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে।

তা দেখিয়ে আমেরিকানরা গত কয়েকদিন ধরে বলছে যে কোনো মুহূর্তে রুশ সৈন্যরা ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে।

ইউক্রেন নিয়ে কী এখন হবে তার ওপর পুরো ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

রুশ হামলার ঝুঁকি কতটা?

রাশিয়া বার বার বলছে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান সের্গেই নারিশকিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আমেরিকা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর রাজধানী থেকে “বিপজ্জনক মিথ্যা” ছড়ানো হচ্ছে।

কিন্তু ২০১৪ সালে ইউক্রেনে রুশ হামলা এবং ক্রাইমিয়া দখলের যে ইতিহাস রয়েছে তাতে চলতি ঝুঁকি কেউ অগ্রাহ্য করতে পারছে না।

নেটো মহাসচিব বলেছেন রুশ হামলার ঝুঁকি “কাল্পনিক কিছু নয়, খুবই বাস্তব।” আমেরিকা বারবার বলছে যে কোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরু হয়ে যেতে পারে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রধান সামরিক উপদেষ্টা জে. মার্ক মাইলি হুঁশিয়ার করেছেন রাশিয়া যে মাত্রার হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে তাতে ব্যাপক প্রাণহানি হবে এবং শহরাঞ্চলে যুদ্ধের পরিণতি হবে ভয়াবহ।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট অবশ্য “আতংক” না ছাড়ানোর জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ফ্রান্স মনে করছে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে নেটোর সাথে দরকষাকষিতে সুবিধা আদায় করাই প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রধান লক্ষ্য।

প্রেসিডেন্ট পুতিন হুমকি দিয়েছেন, পশ্চিমা দেশগুলো যদি, তার ভাষায়, আগ্রাসী তৎপরতা বন্ধ না করে করে তিনি উপযুক্ত “সামরিক-প্রযুক্তিগত” ব্যবস্থা নেবেন।

রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ কত বড়?
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া এক লাখের মত সৈন্য মোতায়েন করেছে। সেইসাথে ইউক্রেনের প্রতিবেশি দেশ বেলারুসে রাশিয়ার ৩০ হাজার সৈন্য একটি যৌথ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।

রাশিয়ার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি ইউেক্রন নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে ১৯৬২ সালের ‘কিউবান মিসাইল সংকটের’ সাথে তুলনা করেছেন।

কম্যুনিস্ট কিউবায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে সেসময় যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে পারমানবিক যুদ্ধের চরম ঝুঁকি তৈরি হয়েছিল।

কেন রাশিয়া ইউক্রেনকে হুমকি দিচ্ছে?
ইউক্রেন যাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং নেটোর মত পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে না পারে সেই চেষ্টা বহুদিন ধরেই করছে রাশিয়া।

রাশিয়ার নিরাপত্তা দাবিগুলোর মূলে রয়েছে ইউক্রেনকে কখনই নেটো সামরিক জোটে নেয়া চলবে না।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়া – উভয়ের সাথেই ইউক্রেনের সীমান্ত রয়েছে, কিন্তু সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হওয়ার কারণে রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের ঐতিহাসিক সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ রয়েছে। রুশ ভাষা সেদেশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

২০১৪ সালে যখন ইউক্রেনে রুশ-পন্থী প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, রাশিয়া সৈন্য পাঠিয়ে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রাইমিয়া দখল করে নেয়। একই সময়ে রাশিয়ার সাহায্যে জাতিগত রুশ বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বড় একটি এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।

তখন থেকেই বিদ্রোহীদের সাথে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর থেকে থেকে লড়াই চলছে যাতে ১৪ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে।

নেটোর কাছ থেকে রাশিয়া কি চায়?
রাশিয়া বলছে নেটোর সাথে সম্পর্কের একটি চূড়ান্ত ফয়সালা করার সময় এসেছে। “ইউক্রেন কখনই যেন নেটোর সদস্য না হতে পারে সেটা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য আবশ্যক,” বলেন রাশিয়ার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিবাকভ।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন ইউক্রেন নেটোর সদস্য হলে, এই সামরিক জোট ক্রাইমিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করবে।

তিনি সম্প্রতি বলেন, “ধরে নিন ইউক্রেন নেটোর সদস্য হলো এবং ক্রাইমিয়া নেওয়ার জন্য যুদ্ধ শুরু করলো। তখন কি নেটোর সাথে আমরা যুদ্ধ করবো? কেউ কি এ নিয়ে কখনো ভেবেছে? আমার তা মনে হচ্ছেনা।”

রাশিয়া বলছে নেটো ইউক্রেনকে বহু অস্ত্র দিচ্ছে এবং আমেরিকা রাশিয়ার অগ্রগতি থামাতে উত্তেজনা তৈরিতে হাওয়া দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, “রাশিয়ার আর নড়াচড়ার জায়গা নেই – তারা কি মনে করে যে আমরা এরপরও চুপ করে বসে থাকবো?”

রাশিয়া চাইছে ১৯৯৭ সালের আগে নেটোর যে সীমানা ছিল সেখানে এই জোটকে ফিরতে হবে। তারা দাবি করছে পূর্ব ইউরোপে নেটোর সম্প্রসারণ এবং সামরিক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। তার অর্থ – পোল্যান্ড এবং সাবেক তিন সোভিয়েত রিপাবলিক লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া এবং লাতভিয়া থেকে নেটো সৈন্য সরাতে হবে এবং পোল্যান্ড এবং রুমানিয়ার মত দেশ থেকে নেটোর মোতায়েন করা ক্ষেপণাস্ত্র সরিয়ে ফেলতে হবে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের কথা হলো – ১৯৯০ সালে পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নেটো “আর এক ইঞ্চিও পূর্বে এগুবে না,” কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির তোয়াক্কা করেনি।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার আগেই মিখাইল গর্বাচভকে কথিত সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তবে নেটা জোট বলে সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল পূর্ব জার্মানি প্রসঙ্গে, এবং মিস্টার গর্বাচভ নিজেও পরে বলেছেন সে সময় নেটো সম্প্রসারণ নিয়ে তার সাথে আমেরিকানদের কোনো কথাই হয়নি।

ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার চাওয়া কী?
ঐতিহাসিক দাবির যুক্তিতে রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করেছিল। ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। মিস্টার পুতিন মনে করেন ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার কারণে ঐতিহাসিক রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডও হাতছাড়া হয়ে গেছে।

গত বছরও তার এক লেখায় মিস্টার পুতিন বলেছেন রুশ এবং ইউক্রেনিয়ানরা “এক এবং অভিন্ন জাতি”, কিন্তু ইউক্রেনের বর্তমান নেতৃত্ব একটি ‘রুশ-বিরোধী প্রকল্প’ চালাচ্ছে।

পূর্ব ইউক্রেন নিয়ে ২০১৫ সালে মিনস্ক চুক্তি নামে আন্তর্জাতিক যে বোঝাপড়া হয়েছিল তা মানা হচ্ছেনা বলেও রাশিয়া ক্ষুব্ধ এবং হতাশ।

রাশিয়াকে বিরত রাখা সম্ভব?
প্রেসিডেন্ট পুতিন কয়েক দফা কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে, এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ বলেছেন তার সাথে দীর্ঘ বৈঠকের সময় মিস্টার পুতিন তাকে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি যুদ্ধ শুরু করবেন না।

কিন্তু যুদ্ধ না করলেও কতদূর যাবে রাশিয়া?

হোয়াইট হাউজ বলছে ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানো ছাড়াও রাশিয়ার হাতে অন্য অস্ত্রও রয়েছে, যেমন সাইবার হামলা এবং আধা-সামরিক নানা কৌশল।

জানুয়ারিতে যখন ইউক্রেন সরকারের ৭০টি ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যায় তখন রাশিয়ার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে, যদিও রাশিয়া বলেছে তারা এর পেছনে ছিলনা।

আমেরিকা অভিযোগ করেছে ইউক্রেনের সৈন্যরা রাশিয়ার ভেতর প্রথম হামলা করেছে – এমন একটি বানোয়াট প্লটের ভিডিও তৈরি করে সামরিক অভিযান শুরুর পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। আবার রাশিয়া বলেছে, এসব কথা আমেরিকার কল্পনাপ্রসূত।

রাশিয়া সম্প্রতি পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সাত লাখ রুশ পাসপোর্ট দিয়েছে যাতে নিজের নাগরিকদের রক্ষার যুক্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

তবে নেটো জোট সরাসরি বলেছে ভবিষ্যতে কাউকে সদস্য করা যাবেনা বলে রাশিয়ার দাবি কোনোভাবেই মানা হবেনা। “নেটোর ওপেন ডোর নীতির দরজা বন্ধ করতে আমরা কাউকেই অনুমতি দেবনা,” বলেন আমেরিকার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েনডি শেরম্যান।

তবে ব্রিটেনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভাদিম পাইরিসটাইকো বিবিসিকে বলেছেন”যেভাবে ইউক্রেনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, ব্লাকমেইল করা হচ্ছে” তাতে যুদ্ধ এড়াতে নেটোর সদস্যপদের ইস্যুতে তারা “নমনীয়” হতে ইচ্ছুক।

সুইডেন ও ফিনল্যান্ড, যারা এখনও নেটোর সদস্য নয়, তারা যেন নেটোতে না যায় তারও চেষ্টা করছে রাশিয়া, যদিও ঐ দুই দেশ বলেছে তারা মস্কোর কথামতো চলবে না।

পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনকে কতটা সাহায্য করবে?
যুক্তরাষ্ট্র এবং নেটো দেশগুলো বলে দিয়েছে রাশিয়ার সাথে লড়াই করতে ইউক্রেনে তারা সৈন্য পাঠাবে না। কিন্তু একইসাথে তারা নানারকম সাহায্যের অঙ্গিকার করেছে।

পেন্টাগন বলেছে সাড়ে আট হাজার সৈন্যকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে এবং জার্মানি, রুমানিয়া এবং পোল্যান্ডে অতিরিক্ত তিন হাজার সৈন্য পাঠানো হচ্ছে।

তবে পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে পশ্চিমা বিশ্বের হাতে প্রধান অস্ত্র দুটো – রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ইউক্রেনকে অস্ত্র এবং সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়ে সাহায্য করা।

পোল্যান্ড পর্যবেক্ষণকারী ড্রোন, মর্টার বোমা এবং বিমান প্রতিরোধী ব্যবস্থা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন, চেক রিপাবলিক এবং বাল্টিক দেশগুলো অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং সরঞ্জাম দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

কী হতে পারে সেই নিষেধাজ্ঞার আওতা?
সবচেয়ে ক্ষতি করা যাবে যদি রাশিয়ার ব্যাংকিং খাতকে আমেরিকান কোম্পানি সুইফট পরিচালিত আন্তর্জাতিক লেন-দেন ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায়। তবে হয়তো কোনো উপায় না থাকলেই শুধু সেই ব্যবস্থার কথা ভাবা হবে কারণ সেই পথ নিলে ইউরোপ এবং মার্কিন অর্থনীতিরও বড়রকম ক্ষতি হতে পারে।

আরেকটি হুমকি আমেরিকা দিচ্ছে যে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহের জন্য নর্ড স্ট্রিম টু নামে সাগরের তল দিয়ে যে পাইপলাইন রাশিয়া তৈরি করেছে সেটি কাজ করতে দেওয়া হবেনা।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন এমন হুমকিও দিয়েছেন যে তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের ওপর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথাও বিবেচনা করবেন।

ব্রিটেন হুঁশিয়ার করেছে “ক্রেমলিনের সাথে ঘনিষ্ঠ লোকজন পালানোর জায়গা পাবেনা।”

বোঝাপড়া হলে তা কেমন হবে?
কোনো বোঝাপড়া হলে তাতে সামগ্রিক নিরাপত্তার পাশাপাশি ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের লড়াইয়ের কথা থাকতেই হবে।

পূর্ব ইউক্রেনে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি চলছে, তবে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে ইউক্রেন, রাশিয়া, ফ্রান্স ও জার্মানির অংশগ্রহণে মিনস্ক চুক্তি নামে যে শান্তি চুক্তি হয়েছিল তা কার্যকরী করতে যে কথা হচ্ছে তাতে এখন পর্যন্ত কোনো সাফল্য আসেনি।

ঐ চুক্তির শর্ত নিয়ে ইউক্রেন অখুশি। তারা মনে করে এতে রাশিয়া এবং বিদ্রোহীদের অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে।

তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “পছন্দ হোক আর না হোক এটা আপনাদের মেনে নিতে হবে।”

রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহে দফায় দফায় কথা হয়েছে – কখনো টেলিফোনে, কখনো ভিডিও লিঙ্কে।

নেটো এবং আমেরিকার পক্ষ থেকে রাশিয়াকে পাঠানো কিছু লিখিত প্রস্তাব ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে নিরাপত্তা নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ প্রশমনে পশ্চিমা দেশগুলো কী ভাবছে।

আমেরিকা প্রস্তাব দিয়েছে স্বল্প এবং মধ্য-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন কমাতে রাশিয়ার সাথে কথা বলতে তারা প্রস্তুত। । এছাড়া, আন্তঃ-মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে নতুন একটি চুক্তির জন্য কথা শুরু করার প্রস্তাবও রাশিয়াকে দেওয়া হয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply