বিশ্বে খাদ্য সংকট-জিকা ‘এল নিনো’র কারণে : জাতিসংঘ
তীব্র খরা ও বন্যার কারণে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার প্রায় ১০ কোটি মানুষ খাদ্য ও পানি সংকটে পড়েছে। এ ঘটনার জন্য নিনোকে দায়ী করেছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের সরকার। একই সঙ্গে জিকা ভাইরাসসহ বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এল নিনো কি?
বিষুবরেখা বরাবর প্রধানত প্রশান্ত সাগরের পূর্বে যে গরম পড়ে, সেটাই এল নিনো। তবে আরো বিস্তৃত করে বললে, এই উষ্ণ পানিই অর্ধেক পৃথিবীতে গভীর প্রভাব ফেলে—ক্যালিফোর্নিয়ায় ভারি বৃষ্টিপাত, অস্ট্রেলিয়ায় আগুন ও প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জিম্বাবুয়ে, মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া, মালাওয়ি ও সোয়াজিল্যান্ডের গ্রামে বসবাসরত প্রায় চার কোটি ও শহরাঞ্চলের প্রায় ৯০ লাখ মানুষের আগামী বছর খাদ্য সহায়তা দরকার হবে।
এ ছাড়া জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ইথিওপিয়ায় এক কোটি মানুষ ও গুয়াতেমালা, হন্ডুরাসের ২৮ লাখ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।
২০১৫ সালের এল নিনো শুরুর পর থেকে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এরই মধ্যে তাপপ্রবাহ, পানি ঘাটতি ও দাবানলে শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে চলতি বছর ফসল উৎপাদনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের পরিচালক লিলা ঘারাগোজলু-পাক্কালা বলেন, আফ্রিকার পূর্ব ও দক্ষিণ অঞ্চলে প্রায় ১০ লাখ শিশুর পুষ্টিহীন, তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন। ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এল নিনোর কারণে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত ও খরায় বিপন্ন শিশুদের জীবন হুমকির মুখে ফেলেছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষ্টি সংস্থা (এফএও) ও ফেমিন আরলি ওয়ার্নিং সিস্টেমস নেটওয়ার্ক যৌথ বিবৃতিতে বলছে, ২০১৬ সালে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে ফসল উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এল নিনো বিপর্যকর প্রভাব ফেলবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, এল নিনোর কারণে পেরু, ইকুয়েডর, প্যারাগুয়ে ও ব্রাজিলের দক্ষিণে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে জিকা ভাইরাসের বিস্তারও বাড়তে পারে।