পঞ্চায়েতে বিরোধের বলি বাহুবলের চার শিশু : পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
গ্রাম্য পঞ্চায়েতে বিরোধের জের ধরেই হবিগঞ্জের বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশুকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশাটিও আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এ ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান সন্দেহভাজন বাঘাল পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল আলী বাঘালের ছেলে রুবেল মিয়া। শুক্রবার বিকেলে রুবেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিত দেন।
রাত সাড়ে ৮টায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসপি জয়দেব কুমার ভদ্র জানান, এক মাস পূর্বে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে ঘাতকরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা থেকে ফেরার পথে বাচ্চুর সিএনজি করে তাদেরকে (চার শিশুকে) চেতনানাশক দিয়ে প্রথমে অজ্ঞান করা হয়। পরে গোপন স্থানে নিয়ে ছয় ঘাতক মিলে শিশুদের হত্যা করে বস্তাবন্দি করে। এরপর শিশুদের ইছাবিলের বালুর নিচে পুঁতে রাখা হয়।
গত শুক্রবার শিশুদের অপহরণ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্যারেজে নেওয়া হয়। সেখানেই রাতে চারজনকে শ্বাসরোধ ও বুকে আঘাত করে হত্যা করা হয়। জবানবন্দি শেষে রুবেল মিয়া ও বাকি দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো বিচারক। বুধবার সকালে বাহুবল উপজেলার ইছারবিল খালের পাশে বালুচাপা দেওয়া অবস্থায় ওই শিশুদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বাঘাল পঞ্চায়েত নেতা আব্দুল আলী বাঘাল, তার দুই ছেলে জুয়েল ও রুবেল এবং বশির মিয়া, আরজু মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান, এ পর্যন্ত এ পাঁচজনসহ মোট আটজন গ্রেফতার রয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মামলার বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
এদিকে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আসামি বাচ্চুর সিএনজিচালিত অটোরিকশা (হবিগঞ্জ ত ১১ – ৩৬০৮) তার বাড়ির গোয়াল ঘর থেকে জব্দ করা হয়।
গত শুক্রবার গ্রামের মাঠে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ (৯), আবদুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০), আবদাল মিয়ার ছেলে মনির (৭) ও আবদুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (৮)। জাকারিয়া, তাজেল ও মনির আপন চাচাতো ভাই এবং সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ইসমাইল গ্রামের ইসলামিয়া কওমি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র।
পাঁচ দিন পর বুধবার সুন্দ্রাটিকি গ্রাম থেকে এক কিলোমিটার দূরের এক ছড়া (ছোট নদী) থেকে বালুচাপা অবস্থায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই চার শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. দেবাশীষ দাস।