‘গুয়ান্তানামো বে’ চূড়ান্তভাবে বন্ধের পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন ওবামা

Spread the love

maxresdefaultবাংলা সংলাপ ডেস্ক

বন্দি নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগার বন্ধ করা সংক্রান্ত পরিকল্পনাটি প্রকাশ করতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক ভাষণে তিনি এ পরিকল্পনা প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
কংগ্রেসে রিপাবলিকান সদস্যদের বিরোধিতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এই পরিকল্পনাটি। এ নিয়ে তিনি দেশের আইনজ্ঞদের সঙ্গে লড়াই পর্যন্ত করেছেন। বর্তমানে ওই কারাগারটিতে ৯১ জন বন্দি অটক রয়েছে।

পেন্টাগন মুখপাত্র ক্যাপ্টেন জেফ ডেভিস জানিয়েছেন, মঙ্গলবার তারা প্রস্তাবটি মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করবে এবং এ নিয়ে আলোচনা করবেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রস্তাবের ওপর আলোচনার চূড়ান্ত সময়সীমা হচ্ছে আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার। তাদের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

তবে এটি বন্ধ করে দেয়ার পর এখানকার বন্দিদের কি করা হবে হবে তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, কারাগারটি বন্ধ করার পর সেখানকার বন্দিদের নিজ নিজ দেশে কিংবা তৃতীয় কোনো দেশের জেলে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এমনকি বন্দিদের সরিয়ে নিতে ১৩টি সম্ভাব্য জায়গা নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে তাদের যে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে না তা একপ্রকার নিশ্চিত। ২০১১ সালে সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত এসব বন্দিদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন কংগ্রেস।

অন্য এক কর্মকর্তা বলছেন, আরো একটি বিকল্প উপায় হচ্ছে বিচারের জন্য কিছু বন্দিকে বাইরের কোনো দেশে পাঠিয়ে দেয়া। তবে তাদের কোন দেশে পাঠানো হতে পারে এখনো সেটি ঠিক হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বছরে এসব বন্দিদের নিয়ে কোনো বিতর্কে জড়াতে চাইছে না মার্কিন প্রশাসন। এ কারণে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বাইরে, তৃতীয় কোনো দেশে পাঠাতে চাইছে। পেন্টাগন কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে ফ্লোরেন্স, কলোরোডা, ফোর্ট লেভেনউর্থ, কানসাস, চার্লেস্টোন ও সাউথ ক্যারোলিনায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারগুলোর ওপর জরিপ চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০২ সালে গুয়ান্তানামো বে কারাগারটি তৈরি করেছিলেন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে সন্ত্রাসী হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সন্দেহভাজন বিদেশিদের জন্যই তিনি এটি চালু করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগপত্র ছাড়া বন্দিদের বছরের পর বছর ধরে আটক রাখা ও জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের ওপর বিভিন্ন পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এই কারাগার নিয়ে সমালোচনা শুরু করে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। এখানকার বেশিরভাগ বন্দিকেই বিনা বিচারে দীর্ঘ এক দশক ধরে আটকে রাখা হয়েছিল। কারাগার থেকে বেরিয়ে অনেক বন্দি সেসব লোকহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন।

২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরই কিউবার এই নৌঘাঁটিটি বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওবামা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ওবামা এই আইনটিতেই প্রথম স্বাক্ষর করেছিলেন। এবার তার এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে আগামী জানুয়ারিতে ক্ষমতা ছাড়ার আগেই বন্ধ হয়ে যাবে ইতিহাসের বন্দি নির্যাতনের সাক্ষী হয়ে থাকা এই জেলখানাটি।


Spread the love

Leave a Reply