বিমানবন্দর বিতর্কমুক্ত করতে মরিয়া ঢাকা : নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব পাচ্ছে ব্রিটিশ কোম্পানী
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক অবসানে মরিয়া হয়ে নানা তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিমানবন্দরকে সম্পূর্ণ ঢেলে সাজানোর জোর তৎপরতা চলছে।
নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যুক্তরাজ্যের একটি কোম্পানীকেই নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, আগামী ২০ মার্চের মধ্যে ব্রিটিশ এক কোম্পানিকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
এছাড়া বিমান ও পর্যটন সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরীকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য গোলাম ফারুক। বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করতে পারার অভিযোগে বিমান সচিবকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে রোববার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম সানাউল হককে সশ্লিষ্ট বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গনি চৌধুরী।
গত অক্টোবরে মিসরের শারম আল শেখে রাশিয়ার একটি বিমান বোমা বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ২০টি দেশের লন্ডনে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে এমন ৩৮ বিমানবন্দরকে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলে। শাহজালাল বিমানবন্দর এর মধ্যে একটি।
পরে কয়েকদফা নিরাপত্তা বিশ্লষন শেষে গত ৮ মার্চ বিমানবন্দরের নিরাপত্তার কথা বলে ঢাকা-লন্ডন কার্গো সার্ভিসে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। এছাড়া মার্চের মধ্যে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি না হলে বিমানের ঢাকা-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এক চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ কথা জানান। এর পরই বিষয়টি নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু করে ঢাকা। এছাড়াও ব্যবসায়ী মহলের রপ্তানি বিঘ্নিত হবার আশঙ্কাও এসব পদক্ষেপকে ত্বরান্বিত করে।
তবে ২০ মার্চের মধ্যে ব্রিটিশ কোম্পানিটি নিরাপত্তার দায়িত্ব বুঝে নিলেও ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্গো চলাচলের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখার কথা জানিয়েছে ব্রিটেন। এ সময়ে নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার আরও নতুন কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করে, দেখতে চায় যুক্তরাজ্য।