ফুটবল বিশ্বকাপ: মুখোমুখি ফ্রান্স-ইংল্যান্ড , হবে তুমুল লড়াই
ডেস্ক রিপোর্টঃ এমন এক ম্যাচ যেখানে কেউই পরিষ্কার ফেভারিট নয়, আবার দুই দলই ফেভারিট। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স নাকি ইউরোর ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড, কোন দলের পক্ষে বাজি ধরা যায়- এ নিয়ে বোধহয় দ্বিধায় পড়ে গেছেন ফুটবলভক্তরা? বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে দু’বার হারিয়েছে ইংল্যান্ড। গ্রুপপর্বে কোনো ম্যাচ হারেনি গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা। ফ্রান্স আবার ইংলিশদের বিপক্ষে শেষ আট ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে। হার মাত্র একটি। সে হিসাবে কিলিয়ান এমবাপ্পে-আঁতোয়ান গ্রিজম্যানদের এগিয়ে রাখতে হয়। দুটি দলেরই রক্ষণ ও আক্রমণভাগ ভারসাম্যপূর্ণ। কাজেই লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। আল বাইত স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালের শেষ ম্যাচে তারা মুখোমুখি হবে আজ রাত ১টায়। যুক্তরাষ্ট্র বাদে কোনো দলই ইংল্যান্ডের সামনে টিকতে পারেনি।
ইরানকে ৬-২, ওয়েলসকে ৩-০ এবং শেষ ষোলোর ম্যাচে সেনেগালের বিপক্ষে ইংলিশদের জয় ৩-০ গোলের।
গ্যারেথ সাউথগেটের আক্রমণভাগে রয়েছে একঝাঁক ইনফর্ম তারকা। মার্কাস রাশফোর্ড, বুকায়ো সাকা, ফিল ফোডেন, অধিনায়ক হ্যারি কেইন, রাহিম স্টার্লিং প্রত্যেকেই গোল পেয়েছেন। বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ইংল্যান্ড ফিরে গিয়েছিলেন স্টার্লিং। তিনিও ফিরে এসেছেন। সাকা-রাশফোর্ড তিনটি করে গোল করেছেন। ১৯ বছরের তরুণ জুড বেলিংহাম আলো ছড়াচ্ছেন প্রতি ম্যাচেই। চার ম্যাচে একটি করে গোল ও অ্যাসিস্ট এই মিডফিল্ডারের। সতীর্থদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পজেশন (২৩) জিতেছেন তিনি। ম্যাচ প্রতি ৯৩% সঠিক পাস দিয়েছেন। প্রতিপক্ষের অর্ধে বেলিংহামের সঠিক পাস ৮৭%। টানা তিন ম্যাচে ক্লিন শিট রাখায় কৃতিত্ব দিতে হবে ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগকেও। হ্যারি ম্যাগুয়ার, কাইল ওয়াকার, জন স্টোন ও গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্র্ড দলকে সুরক্ষিত রাখছেন। তবে ইংল্যান্ডের দুর্গ ভাঙার মতো অস্ত্র রয়েছে ফ্রান্সের। কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা দলগুলোর মধ্যে প্রতিপক্ষের গোলমুখে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শট (৭৫) নিয়েছে ফ্রান্স। গোলের সম্ভাবনা তৈরিতে তারা রয়েছে তৃতীয় স্থানে।
কিলিয়ান এমবাপ্পে শেষ ষোলোতে বলতে গেলে একাই হারিয়ে দেন পোল্যান্ডকে। চার ম্যাচে পাঁচ গোল করে গোল্ডেন বুট জয়ের পথে এগিয়ে রয়েছে পিএসজি তারকা এমবাপ্পে। এছাড়া বার্সেলোনার উসমান দেম্বেলেও রয়েছেন ছন্দে। দুটি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। ফ্রান্সের রক্ষণভাগ অবশ্য চার ম্যাচের একটিতেও ক্লিনশিট রাখতে পারেনি। তিউনিশিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ১-০ গোলে হেরে বসে তারা। যদিও ওই ম্যাচে দ্বিতীয় সারির দল খেলান ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। মূল খেলোয়াড়দের নিয়ে যে তারা ভিন্ন এক দল সেটি শেষ ষোলোতেই বুঝিয়ে দিয়েছে ফ্রান্স। এমবাপ্পে ছাড়াও এই দলে আরেকজন খেলোয়াড় রয়েছেন। তিনি অলিভার জিরু। ইতিমধ্যেই থিয়েরি অঁরিকে ছাড়িয়ে ফ্রান্সের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ড গড়েছেন তিনি। চলতি আসরে তিনটি গোল করেছেন এসি মিলানের এই তারকা। আর্সেনাল ও চেলসির হয়ে নয় মৌসুম ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে খেলার সুবাদে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের নাড়ি-নক্ষত্র জানা জিরুর। এ অভিজ্ঞতা নিশ্চিতভাবেই কাজে লাগাবেন ৩৬ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। হেড টু হেড রেকর্ড ১৯২৩ সালে প্রথমবার মুখোমুখি হয় ফ্রান্স-ইংল্যান্ড। এখন পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতায় ৩১ ম্যাচ খেলেছে তারা। ১৭ জয় নিয়ে এগিয়ে রয়েছে ইংল্যান্ড। ফ্রান্সের জয় ৯টি। ড্র ৫ ম্যাচ। বিশ্বকাপে সাক্ষাত হয়েছে মাত্র দুই বার। দু’বারই জিতেছে ইংল্যান্ড। ১৯৬৬ আসরের গ্রুপপর্বে ২-০ এবং ১৯৮২’র গ্রুপপর্বে ৩-১ গোলে জয় পায় ‘থ্রি লায়ন্স’ খ্যাত দলটি। তবে ১৯৯৯’র ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭’র জুন পর্যন্ত মুখোমুখি ৯ ম্যাচের ৫টিতে ফ্রান্সের কাছে হেরেছে ইংলিশরা। জয় মাত্র একটি। এছাড়া ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ফ্রান্সের বিপক্ষে তিন ম্যাচের দুটিতে ড্র ও একটিতে হার দেখেছে ইংলিশরা।