ফিলিপাইন বলছে রিজার্ভ পুন:উদ্ধারের সম্ভাবনা কম
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে চুরি যাওয়া বাংলাদেশের ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার ফিলিপাইনের কয়েকটি জুয়ার আসর হয়ে স্থানান্তর হলেও তা এরইমধ্যে দেশটির বাইরে চলে গেছে। এসব ক্যাসিনোর সাহায্য ছাড়া ওই অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা ‘খুবই কম’। বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ চুরির ওই ঘটনা তদন্তে ফিলিপাইন পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট গঠিত ‘ব্লু রিবন’ তদন্ত কমিটির সদস্য সিনেটর সার্জিও ওসমেনা বুধবার দেশটির দৈনিক ইনকোয়ারার পত্রিকাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
হ্যাকিং করে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট করা ওই অর্থের মধ্যে ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রথমে যায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে আরসিবিসি। তারপর দেশটির মাকাতি শহরে আরসিবিসির জুপিটার সেন্ট শাখা থেকে তা অন্য দেশে সরিয়ে নেয়ার আগে কয়েকটি জুয়ার আসর ঘুরানো হয়। যে কয়টি ক্যাসিনো ঘুরিয়ে ওই অর্থ দেশের বাইরে গেছে তাদের সহযোগিতার ওপর সেই অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর করছে।
ইনকোয়ারারের প্রতিবেদন অনুসারে, ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির পর তা আরসিবিসির জুপিটার সেন্ট শাখায় ছিল ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সেখান থেকে অর্থের বড় অংশ দেশটির কয়েকটি ক্যাসিনোতে ছিল ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান ফিলিপাইনের সিনেটর তিওফিস্তো গুইংগুনা বলেন, ওই অর্থ কৃষ্ণগহ্বরে (ব্ল্যকহোল) চলে গেছে। তাই তা উদ্ধার করা কঠিন হবে।
বুধবার সিনেটের ওই তদন্ত কমিটি আবার শুনানি শুরু করেছে; তদন্ত কমিটি এখন মূলত ক্যাসিনোতে যাওয়ার পর সেই অর্থ কী হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে। তবে ক্যাসিনোগুলো সেই তথ্য তদন্ত কমিটিকে জানাবে বলে কোনো নিশ্চয়তা আপাতত নেই। এ বিষয়ে বুধবার মাকাতি শহরের কার্যালয়ে সিনেটর ওসমেনা বলেন, অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা খুব কম। আমরা এখনো ক্যাসিনোগুলোর কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা স্যালরির (ক্যাসিনো) প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করিনি। কারণ তিনি তখন দেশের বাইরে ছিলেন; তবে যে করপোরেট কাউন্সিলকে পাঠিয়েছেন তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানে না।
তিনি আরও জানান, চুরি হওয়া অর্থ কোথায় গেছে ক্যাসিনোগুলোর কাছে এখন সেই তথ্যই জানতে চান তারা। কাদের কাছ এসব ক্যাসিনো অর্থ গ্রহণ করেছে এবং কাদের কাছে জমা করেছে তার প্রমাণও চায় কমিটি। এককথায় তদন্ত কমিটি ওইসব ক্যাসিনোর কাছ থেকে অর্থ স্থানান্তরের ‘ইলেক্ট্রনিক ট্রেইল’ পেতে চায়। এ বিষয়ে সার্জিও ওসমেনা বলেন, আশা করি তারা তা দিতে পারবে। আমরা জানিনা এ বিষয়ে তারা আসলে কীভাবে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করবে। তবে আইনে অনেক ফাঁক-ফোকর রয়েছে। এসব দিয়ে তারা বেড়িয়েও যেতে পারে।
অর্থ চুরির বিষয়ে তথ্য না দেয়ার জন্য যুক্তি হিসেবে ফিলিপাইনে এমন কোনো আইন আছে কি-না? এমন প্রশ্নে ওসমেনা বলেন, দেশের (ফিলিপাইনের) আইন সরকারের চেয়ে অপরাধীদেরই বেশি রক্ষা করে।