ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়ে ‘আবেগাপ্লুত’ লিওনেল মেসি যা বললেন
ডেস্ক রিপোর্টঃ আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জয়ী সুপারস্টার লিওনেল মেসি ২০২২ সালে ফিফা ঘোষিত সেরা পুরুষ ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন।
পয়ত্রিশ বছর বয়সী মেসি, কিলিয়ান এমবাপে ও কারিম বেনজেমাকে হারিয়ে জিতেছেন এই ফিফা দ্য বেস্ট অ্যাওয়ার্ড।
লিওনেল মেসির নেতৃত্বে গত বছর কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা এবং ২০২১-২২ মৌসুমে মেসি ক্লাব ও দেশের হয়ে ২৭টি গোল করেছেন।
ফিফার সেরা নারী ফুটবলারের পুরস্কার পয়েছেন বার্সেলোনার অ্যালেক্সিয়া পুতেয়াস।
ফিফা দ্য বেস্ট জয়ের পর লিওনেল মেসি যা বললেন
লিওনেল মেসি এর আগে সাতবার বিশ্বের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার ব্যালন ডি অর জিতেছেন।
তিনি ফিফা ‘দি বেস্ট’ পুরস্কার হাতে নেয়ার পরে পুরো কৃতিত্ব দিয়েছেন তার সতীর্থদের।
লিওনেল মেসি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন, তার মনে পড়ছিল মাস দুই আগের বিশ্বকাপ জয়ের কথা, সে কথাই তিনি বারবার বলছিলেন।
মেসি মনে করেন বিশ্বকাপ জয়টাই ছিল তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপার, এরপর যা ঘটছে তা মেসির কাছে স্বপ্নের মতো।
দ্বিতীয়বার এই পুরস্কার পাওয়ার পর লিওনেল মেসি বলেন, “এটা অভাবনীয়। একটা দুর্দান্ত বছর গেল এবারে, আমার জন্য এই পুরস্কার পাওয়া একটা বড় সম্মানের বিষয়। আমার সতীর্থরা ছাড়া আমি এখানে থাকতে পারতাম না।”
‘অনেক লড়াই এবং সংগ্রামের ফসল’ হিসেবে মেসি এই পুরস্কারকে দেখছেন।
মেসি বলেন তার অনেক দিনের স্বপ্নপূরণ হয়েছে বিশ্বকাপ জয় দিয়ে।
“আমি এমন এক স্বপ্নপূরণ করেছি যা অনেকদিনের আশা ছিল। খুব কম লোকেই এটা অর্জন করেছে এবং আমি সৌভাগ্যবানদের একজন।”
মেসি বলেছেন, “আমার ক্যারিয়ারে এর চেয়ে সুন্দর কিছু ঘটেনি।”
সম্প্রতিই লিওনেল মেসি তার ক্লাব ক্যারিয়ারের ৭০০তম গোল করেছেন।
মেসি কীভাবে সাতবার পেলেন ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার
ফিফা ১৯৯১ সাল থেকে বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দিয়ে আসছে।
যা ২০০৯ সাল পর্যন্ত ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার নামে পরিচিত ছিল। সেবার মেসি এই পুরস্কারটি জিতেছিলেন।
এরপর ফরাসি ফুটবল সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবল এবং ফিফা মিলে ব্যালন ডি অরের মাধ্যমে সেরা ফুটবলারের পুরস্কার দিয়েছিল।
লিওনেল মেসি ২০১০, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৫ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।
এরপর ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ নাম দিয়ে এই পুরস্কারটি দিচ্ছে, যা লিওনেল মেসি ২০১৯ সালে এবং এবার পেলেন।
এনিয়ে মোট সাতবার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন মেসি।
সব পুরস্কার আর্জেন্টিনার ঘরে
আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের কোচ ছিলেন লিওনেল স্কালোনি, তিনি পেয়েছেন ফিফার বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার।
স্কালোনি এই পুরস্কার জিতেছেন পেপ গার্দিওলা ও কার্লো আনচেলত্তিকে পেছনে ফেলে।
পেপ গার্দিওলার অধীনে গত বছর ম্যানচেস্টার সিটি ষষ্ঠ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতেছে।
কার্লো আনচেলত্তির অধীনে রেয়াল মাদ্রিদ জিতেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা।
গতরাতে বর্ষসেরা গোলকিপারের পুরস্কার জিতেছেন আর্জেন্টিনার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
তিনি ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের সেরা গোলকিপারের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভসও জিতেছিলেন।
ত্রিশ বছর বয়সী মার্টিনেজ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালে টাইব্রেকার সহ মোট চারটি পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন।
আর্জেন্টিনা ভক্তদের জন্য আরও সুখবর হয়ে এসেছে ফিফা বর্ষসেরা ফ্যান্স অ্যাওয়ার্ড, যা পেয়েছেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা, যারা কাতারে গিয়ে নিজেদের দলকে সমর্থন দিয়েছেন।
ফিফার বর্ষসেরা একাদশে কারা আছেন
ফিফা ২০২২ সালের সেরা পুরুষ ফুটবলারদের নিয়ে একটি একাদশ তৈরি করেছে যেখানে জায়গা হয়নি ব্রাজিলের তারকা নেইমার ও পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর।
এই তালিকায় গোলকিপার হিসেবে আছেন বেলজিয়ামের থিবো কুর্তোয়া।
ডিফেন্ডার আছেন, মরক্কোর আশরাফ হাকিমি যার দারুণ পারফরম্যান্সে ভর করে মরক্কো প্রথম আরব ও প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলেছে।
আছেন নেদারল্যান্ডসের ফন ডাইক ও পর্তুগালের ক্যানসেলো।
মিডফিল্ডার হিসেবে আছেন বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রুইনা, ব্রাজিলের ক্যাসেমিরো ও বিশ্বকাপ সেমিফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার লুকা মদ্রিচ।
ফরোয়ার্ড হিসেবে আছেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি, ফ্রান্সের কারিম বেনজেমা যিনি বিশ্বকাপ না খেললেও ক্লাব পর্যায়ে সেরা ফুটবলারদের একজন ছিলেন।
এরলিং হালান্ড আছেন এই একাদশে, নরওয়ের এই স্ট্রাইকার গত বছরের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন।
আছেন কিলিয়ান এমবাপে, যিনি ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন।