বাংলাদেশি ব্লগারদের মানবিক আশ্রয়ের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
নিয়মিতভাবে উগ্রপন্থীদের হামলার হুমকিতে থাকা বাংলাদেশি কিছু ব্লগারকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ হত্যার পর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এ কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দফতরের উপ-মুখপাত্র মার্ক টেনার নাজিমের হত্যাকান্ডকে বর্বরোচিত উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানান।
ব্রিফিংয়ের শুরুতেই ব্লগার নাজিম হত্যার প্রসঙ্গটি তোলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-মুখপাত্র মার্ক টেনার। নাজিমকে সহিংস উগ্রপন্থাবিরোধী উল্লেখ করে টোনার বলেন, নাজিমের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য বাংলাদেশি মানুষের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ, সহিংস উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং এ ধরনের নৃশংস কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সমর্থন যুগিয়ে যাবে। বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয় এবং আগেও এ ধরনের হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার ইসলামী উগ্রপন্থাকে দায়ী করেছে উল্লেখ করে সাংবাদিকদের একজন টোনারকে প্রশ্ন করেন যে যুক্তরাষ্ট্রও একই ধরনের সংযোগ খুঁজে পাচ্ছে কিনা।
জবাবে টোনার বলেন, আমাদের কোনও ধারণা নেই। নাজিম হত্যার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি। অতীতের হত্যাকাণ্ডগুলোর ক্ষেত্রে ভারতীয় উপমহাদেশের আল কায়েদার তরফে দায় স্বীকারের কথা বলা হলেও এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এর আগে গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে একের পর এক ব্লগার হত্যার প্রেক্ষাপটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির কাছে লেখা এক চিঠিতে হুমকিতে থাকা বাংলাদেশি লেখক-ব্লগারদের মানবিক আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান জানান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। নাজিমুদ্দিন হত্যার পর সে দাবি আবারও জোরালো হয়ে উঠেছে। কয়েক মাস আগের সেই চিঠির প্রসঙ্গ তুলে টোনারের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে চরমপন্থীদের আক্রমণের হুমকিতে থাকাদের যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কিনা।
মানবিক আশ্রয়ের ব্যাপারে টোনার বলেন, আসন্ন হামলার হুমকিতে থাকা নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্লগারকে মানবিক আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন থাকলে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট (ডিএইচএস) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
মূলত মানবিক আশ্রয়ের এই ইস্যু নিয়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও নাগরিকত্ব প্রদান বিভাগ। গোপনীয়তার কথা বলে মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপির কাছে মানবিক আশ্রয়ের প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান নাগরিকত্ব প্রদান বিভাগের প্রেস সেক্রেটারি শিন ইনোয়ে।
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে রাজধানীর সূত্রাপুরের একরামপুর মোড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পর মাথায় গুলি করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নাজিমুদ্দিন সামাদকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত নাজিমউদ্দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলএম- এর ছাত্র ছিলেন। এছাড়া তিনি গণজাগরণ মঞ্চের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।