ক্রাইমিয়ায় রুশ ট্যাংকারের ওপর ইউক্রেনের ড্রোন হামলা
ডেস্ক রিপোর্টঃ রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের চালানো এক হামলায় রুশ একটি তেলের ট্যাংকার আক্রান্ত হয়েছে। তারা বলছেন, গত রাতে কার্চ প্রণালীতে সংঘটিত ওই আক্রমণে ট্যাংকারটির ইঞ্জিন কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে এর ১১ জন ক্রুর কেউই আহত হননি।
ইউক্রেন এ ঘটনার ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোন মন্তব্য করেনি। তবে বিবিসিকে এক ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র বলেছে, ওই আক্রমণে একটি সামুদ্রিক ড্রোন ব্যবহৃত হয়েছে।
সূত্রটি জানায়, ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর সাথে যৌথভাবে অপারেশনটি চালানো হয়েছে এবং এতে ৪৫০ কেজি টিএনটি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়।
কার্চ সেতুর ১৭ মাইল দূরে থাকার সময় আক্রমণের শিকার হওয়া রুশ ট্যাংকারটিতে তেল ভর্তি ছিল এবং এজন্য আগুনের শিখা অনেক দূর থেকে দেখা গেছে বলেও ইউক্রেনের দিক থেকে জানানো হয়।
তবে একজন রুশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা তাস জানায়, ট্যাংকারটি ইঞ্জিনরুমের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি, এবং জাহাজটি ভাসমান রয়েছে।
গত দুদিনের মধ্যে এ নিয়ে এ ধরনের দুটি আক্রমণ চালানো হলো।
গত শুক্রবার নভোরোসিস্ক বন্দরের কাছে কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজের ওপর ইউক্রেনীয় সী ড্রোন হামলা হয়।
দুমাস আগে ইউক্রেনীয় বাহিনী যে পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করেছে – তাতে এ পর্যন্ত সামান্যই অগ্রগতি হয়েছে বলে বিবিসির পাওয়া তথ্য ও বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে।
পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনের মানচিত্র ও যুদ্ধের ভিডিও পরীক্ষা করে এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে বিবিসি ভেরিফাই বলছে, ইউক্রেন পাল্টা অভিযান শুরু করার পর দু মাসে পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
রাশিয়া এখনো ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ ভূমি দখল করে রয়েছে – যার মধ্যে দোনেৎস্ক ও মারিউপোল শহর দুটিও আছে।
বিবিসির ফ্রাংক গার্ডনার ও জেক হর্টন এক প্রতিবেদনে বলছেন, বস্তুতঃ ২০২২ সালের নভেম্বরে দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন শহর পুনর্দখল করার পর ইউক্রেন কোন বড় বিজয় পায়নি।
গত দুই মাস ধরে ৭০০ মাইল এলাকাব্যাপী ফ্রন্টলাইনের প্রধানত তিনটি জায়গায় ইউক্রেনীয় বাহিনী আক্রমণ চালাচ্ছে। তবে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা যতটা আশা করেছিল – তার তুলনায় অগ্রগতি কম। কিছু জায়গায় তারা ১০ মাইল পর্যন্ত এগুতে পেরেছে।
তবে এর মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী দোনেৎস্ক অঞ্চলের স্টারোমাইওরস্ক গ্রাম পুনর্দখল করেছে, জাপোরিশা অঞ্চলেও কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
রুশরা আগে থেকেই ইউক্রেনীয়দের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরেছিল, এবং মাসের পর মাস ধরে তারা এমন দুর্ভেদ্য রক্ষণব্যূহ তৈরি করেছে – যার নজির সাম্প্রতিক ইতিহাসে খুব বেশি নেই।
লন্ডনের কিংস কলেজের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ মেরিনা মিরন বলছেন, ক্রাইমিয়া পুনর্দখল সহ দক্ষিণ দিকে ইউক্রেনের যে উচ্চাভিলাষ ছিল – তা তারা কাটছাঁট করতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, খুব শিগগীর তাদের লক্ষ্য পূরণ হবে বলে তার মনে হয় না। তবে তারা হয়তো টোকমাক শহরটি পুনর্দখল করার আশা করতে পারে।