হায়দ্রাবাদের হার ছাপিয়ে মুস্তাফিজ বন্দনা
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আইপিএলে বেঙ্গালুরুর রান চাপায় পিষ্ট হয়ে ৪৫ রানে হেরেছে মুস্তাফিজের দল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। তবে অভিষেক ম্যাচে কাটার মাস্টার ঠিকই প্রমান করলেন তিনি অন্য ধাতুতে গড়া। কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সরা যখন হায়দ্রাবাদের বোলারদের পিটিয়ে ছাতু বানাচ্ছিলেন, মুস্তাফিজ তখন স্রোতের বিপরীতে খেললেন অসাধারন এক ইনিংস। নিজের চার ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি উইকেট। তাও আবার পরপর দুই বলে ডেঞ্জারম্যান এবি-ডি ভিলিয়ার্স ও শেন ওয়াটসন।
২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান করে বেঙ্গালুরু। ৫১ বলে ৭৫ রান করেন বিরাট কোহলি। ৪২ বলে ৮২ রান করেন ভিলিয়ার্স। ১০ বলে ৩৫ রান করেন সরফরাজ।
২২৮ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮২ রান করতে সক্ষম হয় মুস্তাফিজের হায়দ্রাবাদ। ফলে ৪৫ রানে ম্যাচ জিতে নেয় বেঙ্গালুরু। সানরাইজার্সের হয়ে ২৫ বলে ৫৮ রান করেন ওয়ার্নার।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন হায়দ্রাবাদ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। কোহলি বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে দুই রান নিতে পারলেন। পরের দুটি বলে আরও দুটি রান হয়। কিন্তু শেষ তিন বলে কোনও রান নিতে পারেননি ভিলিয়ার্স। এক ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে দারুণ সূচনা করেন মুস্তাফিজ।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ফের মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন ওয়ার্নার। আশিষ নেহরা ও ভুবনেশ্বর কুমারের বলে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকালেও মুস্তাফিজকে সামলাতে পারলেন না ব্যাটসম্যানরা। প্রথম বলে ভিলিয়ার্স কোনও রান নিতে পারেননি। দ্বিতীয় বলে ১ রান। কোহলি এসে একটি চার মারলেও পরের দুই বল ডট। শেষ বলে কোনও মতে এক রান নিলেন কোহলি। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ১০ রান দেন মুস্তাফিজ। এরপর ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে ফেরান ভিলিয়ার্স ও ওয়াটসনকে। নিজের তৃতীয় ওভারে মাত্র ৩ রান দেন তিনি। শেষ ওভারে দেন ১৩ রান।
এমন নজড়কাড়া পারফর্মেন্সের পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন মুস্তাফিজকে। ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর শিরোনাম ছিল : আলো ছড়ালেন মুস্তাফিজ, কিন্তু সানরাইজার্স হারল বড় ব্যবধানে। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার যে মুস্তাফিজকে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারেননি, সেটা বিশ্লেষণ করে একটি আলাদা প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে ক্রিকইনফোতে। একেবারে শেষ দুই ওভারের জন্য জমিয়ে না রেখে মুস্তাফিজকে আরো আগেই বল করার সুযোগ দেওয়া যেত বলে মন্তব্য করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে। তাহলে হয়তো কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সের ১৫৭ রানের বিধ্বংসী জুটিটা আরো আগেই ভেঙে যেতে পারত।
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাতেও বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে মুস্তাফিজকে নিয়ে। শিরোনাম ছিল : আইপিএল অভিষেকেই জোড়া উইকেট মুস্তাফিজের। টাইমস অব ইন্ডিয়ায় ম্যাচের সেরা পাঁচ পারফরম্যান্স তুলে ধরতে গিয়ে রাখা হয়েছে মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিং ফিগারটাও। হিন্দুস্থান টাইমসেও বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে মুস্তাফিজকে নিয়ে। কীভাবে সাতক্ষীরার একটি গ্রাম থেকে উঠে এসে ক্রিকেট বিশ্বের নজর কাড়ছেন, সেটাই পাঠকদের সামনে তুলে এনেছে হিন্দুস্তান টাইমস।