সামাজিক অবক্ষয়ের মহামারী ও রাষ্ট্রীয় দায়-দায়িত্ব

Spread the love

সামাজিক অবক্ষয় এমন এক সমস্যা যা ব্যক্তি, সমাজ এবং সরকার বা রাষ্ট্র সকলের মহা ও গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্বের সর্বত্র। সমস্যাটি ঐ সমস্ত মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশী কার্যকর যারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নৈতিকতার শিক্ষা-দীক্ষা বিবর্জিত এবং আধুনিকতার নামে সামাজিক অবক্ষযের অন্তর্নিহিত বিপদ সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ। তবে সামাজিক অবক্ষয়ের সূত্রপাত হয় পারিবারিক কলহ, হতাশা, দারিদ্র্যতা, পিতামাতার তত্ত্বাবধানের অভাব, সহকর্মীর প্রভাব, ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি অনাগ্রহ, বেকারত্ব, এবং অবৈধ অর্থ ও ক্ষমতার দাপট ইত্যাদি।

দেশ উন্নয়ন আর উন্নতির ট্রেনে দিকবিদিক ছুটে চলছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেস, মেট্রোরেল, সুড়ঙ্গ পথে যান চলাচল, টানেল করা, সেতুর মাধ্যমে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন, শিক্ষার হার বেড়েছে, মাথা পিছু আয় বেড়েছে, বড়ো বড়ো অট্টালিকা উঠেছে, স্পেস কেন্দ্র, হাতে এসেছে মুঠো ফোন, স্মার্টফোন, রোড-ঘাট প্রশস্ত হয়েছে, জীবন-যাত্রার বৈচিত্র এসেছে, সমাজ দেশ ডিজিটাল হয়েছে, সহজলভ্য হয়েছে সবকিছু, ঠিক তেমনি চিন্তার পরিবর্তন ঘটেছে, অন্যের অনুকরণের মাত্রা পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে, জীবনকে ভোগবিলাসের রঙ্গশালায় পরিণত করছে, জীবনকে আরো বেশি উপভোগ্য করে তুলতে গিয়ে নিজের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ধর্মকর্মকে ভুলতে বসেছে।

এই যে বিদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসনে আকাশ সংস্কৃতির জোয়ারে গা ভাসিয়ে তরুণ-তরুণী উঠতি বয়সীদের সাথে পাল্লা দিয়ে বয়স্কদের মধ্যেও বিস্তার করছে নাইট ওভার, স্টেই ওভার, হোটেল-ফ্ল্যাটে রাত্রীযাপন, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ও শারীরিক সম্পর্ক তৈরী, পরকীয়া সম্পর্ক, ধর্ষণ, ধর্ষণে সেঞ্চুরি করা, অশ্লীল দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া বা ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, গ্যাং কালচার, কিশোর গ্যাং গড়ে তোলা, তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশার নামে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড কালচার গড়ে তোলা, পিতামাতার অনুপস্থিতিতে ফ্রেন্ডেরদেরকে বাসায় ডেকে এনে মদ, গাজা, হেরোইন, ইয়াবা সেবন, সমকামিতায় লিপ্ত হওয়া, সমকামিতাকে প্রচার-প্রসার করা, দলবেঁধে অশ্লীল ভিডিও দেখা, ভিডিও ধারণ করা ও ইন্টারনেটে প্রচার করা, ডিজে পার্টি, অশ্লীল নিত্যানুষ্ঠান, শহরের কোনায় কোনায় স্পা ও বডি ম্যাসাজ সেন্টারের অন্তরালে চলে পতিতাবৃত্তির শৈল্পিক অশ্লীল সব কাজ কারবার, ইত্যাদি। শুধু কি তাই, নিশ্চয়ই আপনারাও দেখেছেন রাস্তা-ঘাটে, বিপনী কেন্দ্রের মোড়ে মোড়ে লিফলেট-ভিজিটিং কার্ড সরবরাহের মাধ্যমেও অসামাজিক ও অশ্লীল কাজের দিকে আহবান করা হয় ঠিক প্রশাসন নাকের ডগায়। আর ঘুষ, দুর্নীতি এবং মানুষ ঠকানো তো এজ অফ রাইট হয়ে গেছে, এগুলো নিয়ে আর না ইবা বললাম। এতো মাত্র গুটি কয়েক সামাজিক অবক্ষয়ের নমুনা।

এইতো গত কয়েকদিন আগে এক দেখলাম ছাত্রলীগের এক নেতা এক মহিলাকে (যিনি তার স্ত্রী নন) নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এফ রহমান হোটেলে রাত্রি যাপন করলো, অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো এক অজানা কারণে ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াতো দূরের কথা জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করতে সাহস দেখায়নি। ইডেন কলেজের নেত্রীরাতো প্রকাশ্যেই বললো যে তারা তাদের উর্ধতন নেতাদের নিকট সুন্দরী তরুণী সাপ্লাই দিয়ে থাকে।এইতো বছর দুয়েক আগে আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা সাকলাইন যিনি নায়িকা পরীমনির বোট ক্লাবের অনৈতিক কাজের তদন্ত করতে গিয়ে নিজেই হোটেলে ওই নায়িকাকে নিয়ে রাত্রি যাপন করে ধরাও খেলেন। গত কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জে এক পুলিশ কর্মকর্তা অন্যের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে আসার হুমকি দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।আপনাদের মনে থাকার কথা যে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক ছাত্র নিজ বাসায় গার্লফ্রেন্ডের সাথে অবৈধ যৌনাচার করতে গিয়ে তাকে হত্যাই করে ফেললো। আর কিছুদিন পরপরই অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী,নর-নারীসহ তাদের দালালদেরকে বিভিন্ন হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস, ফ্লাট, ভাড়া বাসা, এবং পার্ক থেকে প্রায়ই আটকের খবর আমরা দেখতে পাই। একটু চিন্তা করে দেখেছেন কি সামাজিক অবক্ষয় আজ কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে? এই মহামারী থেকে পরিত্রান কিভাবে? মুক্তি কোন পথে?

মাত্র কয়েকদিন আগের একদম টাটকা খবর হলো যে পুলিশের (পরে বরখাস্ত) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের তালাক দেয়া স্ত্রী, ডিএমপির ক্রাইম বিভাগে অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিনের (যিনি বর্তমানে রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী) বারডেমে অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত বলে অভিযোগ উঠলে ও প্রকাশিত হলে এডিসি হারুন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছাত্রলীগের নেতাদেরকে শাহবাগ থানায় ডেকে নিয়ে পিটিয়ে দাঁত উপরে ফেলে। আবার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কর্তৃক ধর্ষণ ও খুনের কথা কম বেশি সবারই জানা।

মজার বিষয় হলো, যদিও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গতবছরের অক্টোবর মাসে বলেছিলেন, দেশের কোনো জায়গায় যদি অসামাজিক কার্যকলাপ হয়, অবৈধভাবে মদ বিক্রি হয় অথবা ডিজে পার্টির নামে অসামাজিক কার্যকলাপ হয়, সেখানে পুলিশ অভিযান চালাতে পারে। অথচ এর পরে আরো বহু ঘটনাই ঘটে গেলো কিন্তু আমরা তেমন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখতে পেলাম না। সামাজিক অবক্ষয় আজ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে, এর শিকড় অনেক নিচে প্রোথিত। যারা সামাজিক অবক্ষয় রোধে রক্ষকের ভূমিকা রাখার কথা, তারাই এখন ভক্ষক বোনে গেছে। আপনি বিচার পাবেন কি করে? কোথায় যাবেন বিচারের জন্য? সামাজিক অবক্ষয়ে বা অশ্লীল কাজে যারা জড়িত তাদের কি আদৌ বিচার হচ্ছে? অনেক সময় তারা ধরা পড়লেও সরকারি প্রভাব কাটিয়ে তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা যায় না। অপরাধ দমনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর করা হয়না বিধায় অপরাধীরা অপরাধ সংঘটনে আরো বেশি উৎসাহী হয়ে উঠে। তাহলে সমাজ কি এভাবেই চলতে থাকবে? আমাদের বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্ম কি এক চরিত্রহীন ভঙ্গুর জাতি হিসেবে বেড়ে উঠবে? সামাজিক অবক্ষয় রোধে রাষ্ট্র কি ব্যর্থ? রাষ্ট্রের দায়-দায়িত্ব কি? বা রাষ্ট্র তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে না বরং দলীয় লেজুড়বৃত্তি করছে অথবা নিজেদের চেয়ার ঠিক রাখার জন্য প্রশাসনের ও ছাত্রলীগের অপকর্মের কোনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে রাষ্ট্র কি ব্যর্থ? আপনারা ভেবে দেখবেন।

সামাজিক অবক্ষয় যেমন হু হু করে বেড়ে চলছে ঠিক তেমনি সমাজ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে পবিত্রতা ও পবিত্র চিন্তা-চেতনা, বিনয়, দাতব্য কার্যক্রম, সত্যবাদিতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং সততা, উদারতা এবং আতিথেয়তা, সম্মান, শ্রদ্ধা, দয়া, ধৈর্য, ​​এবং অধ্যবসায়, আল্লাহর ভয়, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং আত্ম-শৃঙ্খলা, আনুগত্য এবং সম্মান, ভদ্রতা, আন্তরিকতা এবং অন্যদের প্রতি সহমর্মিতা, ভালোবাসা, বিপদে এগিয়ে আসা, অন্যকে প্রাধান্য দেয়া, অন্যকে নিয়ে চিন্তা করা, সর্বোপরি সামষ্টিক সামাজিক উন্নতি বিধানের অব্যাহত চেষ্টা ইত্যাদি। যার ফলে দুর্নীতি, ঘুষ, অর্থ পাচার, চুরি, ব্যভিচার, পতিতাবৃত্তি, অসততা, প্রতারণা ও ভণ্ডামি, শত্রুতা, লোভ ও কৃপণতা, অপব্যবহার ও দুর্ব্যবহার, সন্দেহ, হিংসা ও ক্রোধ, হিংসা, অত্যাচার, নিপীড়ন, মিথ্যা, মদ, জুয়া, খুন, পিতামাতা এবং সমাজের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি অসম্মান এবং কঠোরতা ইত্যাদি নিষিদ্ধ আচার-ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে।

মানুষ সৃষ্টির সাথে সাথে তাকে সঠিক ও কাঙ্খিত পথে চলার জন্য একটি গাইডলাইন আল্লাহ তায়ালা দিয়ে দিয়েছেন। “তোমরা সৎ ও তাকওয়া সম্পর্কিত কাজে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করো এবং পাপ ও অন্যায় কাজে একে অন্যকে কোনোরূপ সাহায্য সহযোগিতা না করা”. অন্য এক আয়াতে বলা হয়েছে “অবৈধ যৌন সম্ভোগের নিকটবর্তী হয়ো না, এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ”-সুরা বনী ইসরাইল:৩২।আরও বলা হয়েছে-‘আল্লাহ অশ্লীলতা, অসৎ কাজ ও সীমা লঙ্ঘন করতে নিষেধ করেছেন”-সূরা নাহল:৯০। ইসলামে সব ধরনের অশ্লীলতা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে “বলে দাও, আমার পালনকর্তা হারাম করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা, আর পাপ ও অসংগত বিরোধিতা”-সূরা আরাফ:৩৩।অশ্লীল কাজ সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া অনেক বড়ো অপরাধ, কেননা তা একটি জাতি ও প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেয়। সতর্ক করে বলা হয়েছে “যারা ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার পছন্দ করে, তাদের জন্য ইহকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে”-সূরা নূর:১৯।

অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, ব্যভিচার, জুলুম, নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস, চুরি ও ডাকাতি, ধর্ষণ, অশ্লীলতাসহ অসামাজিক সব কার্যকলাপকে ইসলাম নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অন্যান্য ধর্মেও অসামাজিক কার্যকলাপকে মন্দ কাজ, পাপাচার, নিষেধ ও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।সমাজের অবশ্যই একটি ধর্মীয় বা নৈতিক কাঠামো থাকতে হবে যা সামষ্টিক ঐক্যকে উৎসাহিত করে এবং সহযোগিতা ও সামাজিক ন্যায়-নিষ্ঠা প্রতিষ্ঠায় একটি মডেল হিসেবে কাজ করে। ইসলাম ধর্ম সর্বদাই সমাজের নৈতিক দিকনির্দেশনার নোঙর হিসেবে কাজ করে। উইল ডুরান্ট (Will Durant) তার এক আর্টিকেলে বলেছেন-আমাদের সময়ের আগে বা ইতিপূর্বে ইতিহাসে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য উদাহরণ নেই যে কোনো সমাজ ব্যাবস্থা ধর্মের সাহায্য ছাড়াই সফলভাবে নৈতিক জীবন বজায় রাখে বা নৈতিক মুল্যবোধকে ধরে রাখতে পারে “There is no significant example in history, before our time, of a society successfully maintaining moral life without the aid of religion”

সুখী-শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য, আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য এবং নৈতিক চরিত্রের উন্নতি সাধন এবং মানবীয় মূল্যবোধকে ধরে রাখার জন্য ইসলামী অনুশাসন ও বিধি মেনে চলার তাগিদ রয়েছে কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য বার।শুধু কোরআনের বাণী শুনিয়ে অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধ নাও হতে পারে, ঠিক যেমনটি ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান (রা) বলেছিলেন “ কোরআন দিয়ে যা কখন কখনও দমন করা যায় না, আল্লাহ তায়ালা তা শাসনের মাধ্যমে দমন করেন।’ অর্থাৎ, যোগ্য শাসন ও নেতৃত্বের মাধ্যমে সমাজ থেকে অন্যায়, জুলুম, নির্যাতন, অত্যাচার এবং মানুষের চরিত্র বিধ্বংসী অসামাজিক কার্যক্রম , যৌনতা, অশ্লীলতা নির্মূল করা সম্ভব।

সুস্থ্য ও সুন্দর সমাজ গঠনে রাষ্ট্রযন্ত্রের পাশাপাশি মসজিদ শুধু ইবাদত-বন্দেগীর স্থানই নয় বরং, সামাজিক ও ধর্মীয় মিলনায়তন, শিক্ষা-সাংস্কৃতিক স্থান, বিচার, নেতৃত্ব ও আনুগত্যের সূতিকাগার হিসেবে কাজ করে থাকে।ঐক্য ও সংহতির প্রাণকেন্দ্র, শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞানচর্চা, শাসন, সমাজ সংস্কার, রাষ্ট্র পরিচালনা, সমরনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, বাণিজ্যনীতি, বিচার ব্যাবস্থা, চিকিৎসা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের আলোচনা, পর্যালোচনা, গবেষণা, সমস্যা নির্ণয় ও সমাধান খুঁজে বের করা, প্রশাসনিক কর্মপন্থা নির্ধারণ, পরিকল্পণা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ নির্ধারণ ও সমাধানের কার্যকরী সমাধান গ্রহণে মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ধর্মীয় অনুশাসন আমাদেরকে নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা দেয় এবং আমাদেরকে কি সঠিক এবং কি ভুল তা বুঝে নিতে সক্ষম করে তোলে। নৈতিক মূল্যবোধহীন মানুষ লম্বা আগাছায় হারিয়ে যাওয়া বলের মতো (a lost ball in the high weeds)। ধর্মীয় শিক্ষাকে অবজ্ঞা করে আধুনিকতার নামে সামাজিক অবক্ষয় প্রসারে কোনো কল্যাণ নেই বরং ধর্মীয় অনুশাসনেই রয়েছে কল্যাণ, উন্নতি ও মুক্তি।

সুতরাং আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সামাজিক অবক্ষয়ের গুরুত্বটি সবার উপরে প্রায়োরিটি দিয়ে সমাজকে নিরাপদ ও কলংকমুক্ত করতে বিশেষ করে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে উন্নত চরিত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে কার্যকর উদ্যোগ নেবেন। পাশাপাশি, অভিভাবক, সচেতন মহল, সামাজিক সংগঠনগুলোকে একসাথে একত্রে কাজ করতে হবে, সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে তা নাহলে আমাকে, আপনাকে, আমাদের সকলকে অনেক চড়া মূল্য দিতে হবে।

লেখকঃ ব্যারিস্টার ওয়াহিদ মুহাম্মদ মাহবুব
১৮/০৯/২০২৩, লন্ডন।


Spread the love

Leave a Reply