ফিলিস্তিনে ইহুদি বসতি এলো কীভাবে ?
ডেস্ক রিপোর্টঃ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের জন্য ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে একটি পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সেখানে সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ ছিল পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতিকে অনুমোদন দেয়া।
অন্য বেশিরভাগ দেশ মনে করে এসব বসতি অবৈধ।
তাহলে এরা কারা?
ফিলিস্তিন বিরোধিতা করলে এদের সংখ্যা বাড়ছে কেন?
জাতিসংঘে বেশিরভাগ দেশ বলছে এসব বসতি হয়েছে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে। এমনকি সরকারিভাবে যুক্তরাষ্ট্রও এর সাথে একমত।
কিন্তু গত নভেম্বরে মিস্টার ট্রাম্প ঘোষণা দেন ইসরায়েলি বসতিকে তিনি আর আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন মনে করেননা।
তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন।
কিন্তু অবৈধ হোক আর না হোক, বসতি আছে ও বাড়ছে।
এখানে দেখা যাচ্ছে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় সেখানকার চিত্র কেমন ছিলো।
ইসরায়েলের অংশ নীল ও পশ্চিম তীর হলুদ।
ফিলিস্তিনিরা পশ্চিম তীরকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ মনে করে। কিন্তু ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকেই সেখানে বসতি বাড়াচ্ছে।
সত্তর, আশি ও নব্বিইয়ের দশকে বহু বসতি স্থাপন করেছে ইসরায়েল।
গত বিশ বছরে তাদের জনসংখ্যাও দ্বিগুন হয়েছে।
সেখানে পানি ও বিদ্যুৎ সেবা দিচ্ছে ইসরায়েল।
তাদের সুরক্ষা দেয় ইসরায়েলি সেনারা।
স্যাটেলাইট থেকে নেয়া চিত্রে দেখা যায় সময়ের সাথে সাথে কিভাবে বসতিগুলো বেড়েছে।
২০০৪ সালে গিভাট জাইভ বসতিতে দশ হাজারের মতো মানুষ ছিলো, আর এখন আছে সতের হাজার। এখন পশ্চিম দিকে আরও বাড়ছে।
বাড়ছে নতুন বাড়ি, উপাসনালয় ও শপিং সেন্টার।
মানচিত্রে পশ্চিম তীর
বসতিগুলো নানা আকারের।
কিছু আছে যেখানে কয়েকশ মানুষ বাস করে।
সবচেয়ে বড়গুলোর একটিতে ৭৩ হাজার ৮০ জন বাস করে।
গত পনের বছরে তাদের সংখ্যা তিনগুণ হয়েছে।
ট্রাম্পের নতুন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী চার বছর আর কোনো বসতি হওয়া উচিত নয়।
তবে নতুন স্থাপনা না হলেও সেটেলারদের সংখ্যা বাড়বেই উচ্চ জন্ম হারের কারণে।
গড়ে ইসরায়েলি নারীদের এখন সাতটির বেশি সন্তান।
এমনিতেই ইসরায়েলে জন্ম হার ৩.১।
আর দখলকৃত এলাকার বসতিগুলোতে সেটি আরও বেশি।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে জন্ম হার কম।
এর প্রভাব পড়বে মোট জনসংখ্যাতেও।
সেখানে বসতি করা হচ্ছে সেটিকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ মনে করে।
তারা মনে করে বসতিগুলো সরাতে হবে তাদের রাষ্ট্রের জন্য।
ইসরায়েলিরা পশ্চিম তীরে কেন বসতি করতে চায়?
কিছু লোক এসব বসতিতে গেছেন অধিকতর সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশায়।
কারণ সেখানে ঘরবাড়ি বানানোর খরচ খুব কম। নানা সুবিধার কারণে সেখানকার জীবনমান উন্নত।
আর কিছু মানুষ গেছেন কঠোর ধর্ম বিশ্বাসের কারণে।
তারা মনে করেন ঈশ্বর এ জায়গা তাদের জন্য দিয়েছে।
তবে এক তৃতীয়াংশই সেখানকার অতিমাত্রায় রক্ষনশীল। তাদের সংসার বড় ও কিছুটা দরিদ্র।
আর কিছু আছেন যারা মনে করেন ইহুদিদের প্রাচীন ভূমি হওয়ার কারণে সেখানে তাদেরই বাস করার অধিকার রয়েছে।
দুই-জাতি সমাধান কারা চায়?
এ ভূমিকে ভাগ করে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সমর্থক ক্রমশ কমছে।
২০০৬ সালে ফিলিস্তিনদের ৭১ ভাগ আর ইসরায়েলিদের ৬৮ ভাগ এর সমর্থক ছিলো।
১৮ সালে এ সংখ্যা যথাক্রমে ৪৪ ও ৫৫।
অন্যদিকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনদের এক করার পক্ষে ৩৬ভাগ ফিলিস্তিনি ও ১৯ ভাগ ইসরায়েলি ইহুদি ও ৫৬ ভাগ ইসরায়েলি আরব।
খারাপ খবর হলো দুই জাতি তত্ত্বের সমর্থন তরুণদের মধ্যেই বেশি কমছে।
তথ্যউৎস: ইসরায়েলি সেন্টার ব্যুরো অফ স্ট্যাটিসটিকস ও জেরুজালেম ইন্সটিটিউট ফর ইসরায়েল স্টাডিজ।
জরিপ তথ্য ফিলিস্তিন সেন্টার ফর পলিসি এবং সার্ভে রিসার্চ অ্যান্ড দা ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইন্সটিিউট এবং তেলআবিব বিশ্ববিদ্যালয়