গাজায় স্থল অভিযান করলে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে ইরান
ডেস্ক রিপোর্টঃ গাজায় উপত্যকায় স্থল অভিযান শুরু করলে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য জায়গাগুলোতেও সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে ইরান। রোববার আল–জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান এ সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন।
আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, ‘গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় শিশুরা নিহত হচ্ছে। এ হামলা অবিলম্বে বন্ধ করতে পদক্ষেপ না নিলে অচলাবস্থা তৈরি হবে। আরও অনেক জায়গায় সংঘাত শুরু হয়ে যাওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা আছে। এ আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এ আশঙ্কা ক্রমে বাড়ছে।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী যদি গাজায় ঢোকে, তবে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতারা স্থানটিকে দখলদার সেনাদের কবরস্থানে পরিণত করবে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায়। জবাবে ওই দিনই পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর থেকে গাজায় টানা বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের চার ভাগের এক ভাগই শিশু। হামলায় আহত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েল স্থল অভিযানের হুমকি দেওয়ার পর ১০ লাখ মানুষ তাঁদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ লাখ মানুষই গাজার বাসিন্দা।
রোববার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলেছে, দেশটিতে হামাসের হামলায় কমপক্ষে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৮৯ জন সেনা এবং কয়েকজন বিদেশি নাগরিক আছেন।
ইরানের দাবি, ইসরায়েলে হামাসের চালানো হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, শনিবার কাতারে হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়ের সঙ্গে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ানের বৈঠক হয়েছে। সেখানে তারা গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং পরস্পরকে সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।
শনিবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিও বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় এগিয়ে আসা সব মুসলিম দেশের দায়িত্ব।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে ইরানও কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এরই মধ্যে ইরাক, লেবানন ও সিরিয়া সফর করেছেন। দামেস্ক ও আলেপ্পোর বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বোমা হামলার পর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় রোববার সকালে দোহায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে দেখা করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।