যেভাবে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান এখন একই কাতারে
ডেস্ক রিপোর্টঃভারতের মাটিতে চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া তাদের তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথম জয় নিশ্চিত করেছে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮৮ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে একটা গুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়েছে প্যাট কামিন্সের দলটি যা তাদের নেট রান রেটেও একটা ভূমিকা রাখবে।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়া পয়েন্ট টেবিলে এক ধাপ ওপরে উঠেছে।
এখনও অস্ট্রেলিয়ার ওপরে আছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড।
এই চারটি দলেরই এখন একটি করে জয় দুটি করে হার।
- ইংল্যান্ড – ৩ ম্যাচ – ১ জয় – ২ হার- নেটরানরেট -০.০৮৪
- আফগানিস্তান – ৩ ম্যাচ – ১ জয় – ২ হার- নেটরানরেট -০.৬৫২
- বাংলাদেশ – ৩ ম্যাচ – ১ জয় – ২ হার- নেটরানরেট -০.৬৯৯
- অস্ট্রেলিয়া – ৩ ম্যাচ – ১ জয় – ২ হার- নেটরানরেট -০.৭৩৪
অস্ট্রেলিয়া যেভাবে এই টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল তা ছিল হতাশাজনক- ভারতের বিপক্ষে ১৯৯ রানে অলআউটের পর, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৭৭ রান।
এরপর গত রাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০০ রান পার করে অস্ট্রেলিয়া।
লক্ষ্ণৌয়ে শ্রীলঙ্কা ব্যাট হাতে দারুণ শুরু পেয়েছিল। পাথুম নিসাঙ্কা ও কুশল পেরেরা ১২৫ রানের উদ্বোধনী জুটির পর চারিথ আসালাঙ্কা ছাড়া কোনও ব্যাটারই দুই অঙ্কও স্পর্শ করতে পারেননি।
শ্রীলঙ্কার শেষ ৯ উইকেট চলে যায় ৫২ রানে।
শেষ পর্যন্ত ২০৯ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
জবাব দিতে নেমে অস্ট্রেলিয়া শুরুতে কিছুটা হোচট খেলেও শেষ পর্যন্ত ভালো ব্যবধানেই জয় নিশ্চিত করেছে।
ডেভিড ওয়ার্নার দ্রুতগতির শুরু এনে দিলেও আম্পায়ার্স কলে এলবিডব্লু হয়ে যান, স্টিভ স্মিথ রান পাননি এদিন। তবে মিচেল মার্শ ও জশ ইংলিশের অর্ধশতক এবং মার্নাস লাবুশেইনের স্থির ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া জয়ের কাছাকাছি পৌঁছায়।
তখন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মার্কাস স্টইনিস দ্রুত রান তুলে জয় এনে দেন অস্ট্রেলিয়াকে।
জনপ্রিয় ক্রিকেট উপস্থাপক হারশা ভোগলে নিজের টুইটার একাউন্টে লিখেছেন, “পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে অস্ট্রেলিয়ার একটা শক্তিশালী ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখানোর প্রয়োজন ছিল। ওয়ার্নার ও স্মিথ উইকেটে আরও সময় কাটাতে পারলে ভালো লাগতো, তবে মার্শকে বিপদজনক মনে হয়েছে। জস ইংলিশের ফর্মটাও বড় প্রাপ্তি। একটা নির্জীব শুরুর পর অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের ফিরে আসা প্রয়োজন ছিল, সেটা তারা করেছে”।
এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি অ্যাডাম জাম্পার ফর্মে ফেরা, এই লেগস্পিনার চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন।
এই ম্যাচেও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বল হাতে ভালো করেছেন, ৯.৩ ওভার বল করে মাত্র ৩৬ রান দিয়ে একটি উইকেট দিয়েছেন তিনি।
তবে এদিনও অস্ট্রেলিয়া দুটি ক্যাচ ছেড়েছে, চলতি বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া মোট ৮টি ক্যাচ মিস করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী ম্যাচ ২০শে অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে।
তবে গতকালের ম্যাচেও ক্রিকেট বিশ্বকাপে স্টেডিয়ামের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
লক্ষ্ণৌয়ে ঝড়ো হাওয়ায় স্টেডিয়ামে একটি স্ট্যান্ড গ্যালারিতে এসে পড়ে।
সোশাল মিডিয়ার ভিডিওতে দেখা যায় অনেক সমর্থকরা সেখান থেকে বাঁচতে ছুটে যান নিরাপদ দূরত্বে।
টুইটারে অনেকেই এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন।
এর আগে ধরমশালার আউটফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, সেখানে স্লাইড করতে গিয়ে আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমান মাটিতে আটকে যাওয়ার পর।
আরও অঘটন হবে আজ?
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের হারের পর র্যাংকিংয়ের শীর্ষ দলগুলোর বিপক্ষে নিচের সারির দলগুলোর ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে।
আজ দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডস মুখোমুখি হচ্ছে ধরমশালায়।
এই দুই দল গত বছরই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দেখায় জয় পেয়েছিল নেদারল্যান্ডস।
হার্শেল গিবসের ২০০৭ বিশ্বকাপে ছয় বলে ছয়টা ছক্কা অথবা কলিন অ্যাকারম্যানের ইতিহাস গড়া ইনিংসে নেদারল্যান্ডসের জয়, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচের বেশ তাৎপর্যময় কিছু স্মৃতি রয়েছে।
যদিও এই বছর দক্ষিণ আফ্রিকা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে ম্যাচে আট উইকেট ও ১৪৬ রানের জয় পেয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা এখন দুর্দান্ত ফর্মে আছে, শেষ পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই জয় পেয়েছে, এই পাঁচ ম্যাচেই ৩০০ এর বেশি রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দুটি ম্যাচে করেছে ৪০০ এর বেশি।
এই বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা সবচেয়ে ভালো ব্যাটিং ইউনিট নিয়ে এসেছে।
এই বছরের শুরু থেকে ওয়ানডে ক্রিকেটে দশজন ব্যাটার ৪০০ এর বেশি রান করেছেন, ৫০ এর বেশি গড় এবং ১০০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে।
যার মধ্যে চারজনই দক্ষিণ আফ্রিকান, টেম্বা বাভুমা, এইডেন মারক্রাম, ডেভিড মিলার, হেইনরিখ ক্লাসেন।
নেদারল্যান্ডস এখনও পর্যন্ত এই বিশ্বকাপে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে কিন্তু ম্যাচ জিততে পারেনি।
তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক জয়ে নিশ্চিতভাবেই অনুপ্রেরণা পাবে দলটি।