ভূমধ্যসাগরে ফের নৌকাডুবি : ৪ শতাধিক শরণার্থীর প্রাণহানীর শঙ্কা
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে ৪ শতাধিক শরণার্থীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোপ পাড়ি দিতে মিসর থেকে ইতালি যাওয়ার পথে এসব নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের বেশিরভাগই ছিলেন সোমালিয়ার নাগরিক। মিশরে নিযুক্ত সোমালিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ছোট আকৃতির এসব নৌকা রোববার ভূমধ্যসাগরে ডুবে গেলে সব যাত্রীর সলিল সমাধি হয়। সোমবার বিবিসির আরবি সংস্করণে এ খবর জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, চার শতাধিক শরণার্থী মিসর থেকে ইউরোপের ইতালি যেতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় নৌকাডুবির কবলে পড়েন। আশঙ্কা করা হচ্ছে চারটি নৌকায় থাকা শরণার্থীদের সবাই সাগরে ডুবে মারা গেছেন। তবে সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে মেইল অনলাইন জানিয়েছে, মর্মান্তিক এ ঘটনার পর উদ্ধারকারীরা ২৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছেন।
সোমালিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোমালি ভাষায় হাতে লেখা নিহতদের তালিকা অনেকেই প্রকাশ করেছেন। বিবিসির ইংরেজি সংস্করণে বলা হয়েছে, নৌকাডুবিতে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের গ্রিসের একটি দ্বীপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গেছে, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়া থেকে সাগর পাড়ি দেওয়ার অনুপযোগী চারটি নৌকায় শরণার্থীরা যাত্রা শুরু করেন। পথে চারটি নৌকা ডুবে যায়।
ইতালির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাতারেল্লা জানিয়েছেন, কয়েকশ মানুষের প্রাণহানী ঘটতে পারে। তিনি বলেন, ইউরোপকে আরেকটি ভূমধ্যসাগর ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হতে হবে। কয়েকশ মানুষ মারা গিয়েছেন। তবে ঘটনার বিস্তারিত জানাতে পারেননি।
এর আগে ইতালির কোস্টগার্ড এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছিল। তবে সোমবার সকালে ইতালিয়ান কোস্ট গার্ড জানায়, তারা ছয় ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে এবং প্রায় ডুবে যাওয়া একটি নৌকা থেকে ১০৮ জন শরণার্থীকে উদ্ধার করেছে। পৃথক ঘটনায়, ইতালির সিসিলি উপকূলে ৩৩ শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ইতালি জানিয়েছে, মৃতদের সম্মানে তারা লাশ উদ্ধারে জাহাজ মোতায়েন করবে।
গত সপ্তাহে প্রায় ৬ হাজার শরণার্থী লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য রওনা দেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, ইউরোপ পাড়ি জমাতে আগ্রহী ১ লাখ শরণার্থীদের মধ্যে প্রথম সাগড় পাড়ি দেওয়ার ঘটনা ছিলো এটি।
ইউরোপীয় দেশগুলোতে শরণার্থী সমস্যা বর্তমানে প্রকট আকার ধারণ করেছে। সীমান্ত দিয়ে অভিবাসী প্রত্যাশী এসব ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা বিষয়ে ইউরোপের দেশগুলো কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়েছে। উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার দেশগুলো থেকে ৩,০০,০০০ জন শরণার্থী ইউরোপের উদ্দেশ্যে পালিয়ে এসেছে বলে অভিবাসন বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা জানিয়েছে।