ইসরায়েলি জিম্মি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের প্রথম দল দুটি মুক্তি পেল
ডেস্ক রিপোর্টঃ ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে হামলা চালিয়ে হামাস গত সাতই অক্টোবর যাদের জিম্মি করে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ২৪জনকে তারা কিছুক্ষণ আগে মুক্তি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস এবং ইসরায়েলি সেনা এ খবর নিশ্চিত করেছে।
কাতারের মধ্যস্থতায় যে শান্তি চুক্তি হয়েছে হামাস আর ইসরায়েলের মধ্যে, সে অনুযায়ী হামাস এ জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে।
শুক্রবার যেসব জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে হামাস, তাদের মধ্যে রয়েছেন ১৩ জন ইসরায়েলি, ১০ জন থাইল্যাণ্ডের নাগরিক আর একজন ফিলিপিন্সের নাগরিক। এদের বদলে তাদের হাতে আটক হওয়া ৩৯ জন ফিলিস্তিনিকে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
শান্তি চুক্তি অনুযায়ী, হামাস ৫০ জন জিম্মিকে ছেড়ে দেবে আর বদলে ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছাড়বে ইসরায়েল। চারদিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলবে আর এই কদিন দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি বহাল থাকবে।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী মিশরের দিক থেকে ৬০ ট্রাক ভর্তি ত্রাণসামগ্রী গাজায় পৌঁছবে যার মধ্যে থাকবে ওষুধপত্র, জ্বালানী আর খাদ্য সামগ্রী থাকবে।
রাফা সীমান্ত দিয়ে জিম্মিদের মুক্তি
মিশর, ইসরায়েল ও গাজায় উপস্থিত বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন যে জিম্মিদের সবাইকেই মিশর-গাজা সীমান্তের রাফা সীমান্ত দিয়েই মুক্তি দেয়া হয়েছে।
প্রথমে জিম্মিদের গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস। তারাই দায়িত্ব নিয়ে জিম্মিদের রাফা সীমান্ত পার করিয়ে দেয়।
বিভিন্ন স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল জিম্মিদের মুক্তির ভিডিও দেখিয়েছে। জিম্মিদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সগুলি যখন রাফা সীমান্তের দিকে এগোচ্ছিল তখন বহু মানুষকে দৌড়ে দৌড়ে মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ভিডিও তুলতে দেখা গেছে।
রাফা সীমান্ত পেরনোর পরে জিম্মিদের প্রত্যেকের শারীরিক পরীক্ষার জন্য মিশরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিদের পরিবার অপেক্ষা করছিল। মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের সঙ্গে ছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
শারীরিক পরীক্ষার পরে জিম্মি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকরা নিজ দেশের মাটিতে পৌঁছিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ফিলিস্তিনিরা কোথায়?
পশ্চিম তিরে অবস্থানরত বিবিসি সংবাদদাতা লুজি উইলিয়ামসন জানাচ্ছেন বেইতুনিয়া চেক পয়েন্ট দিয়ে ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেখানে বহু মানুষ হাজির হয়েছেন। মানুষ সেখানে চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছেন, “বন্দীরা কোথায়? বন্দীরা কোথায়?”
খবর পাওয়া গিয়েছিল যে ফিলিস্তিনি বন্দীদের একাংশের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতাহাতি হয়েছে, সেজন্যই তাদের ছাড়তে দেরি হয়।
এর আগে জেরুসালেম থেকে বিবিসি সংবাদদাতা টম বেটম্যান খবর দিয়েছেন যে চুক্তি অনুযায়ী ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য ইসরায়েল দুই ঘণ্টা সময় পাবে। তিনি আরও জানিয়েছিলেন যে ফিলিস্তিনি নারী ও নাবালক ওই বন্দীদের দিনে আরও আগে উত্তর ইসরায়েলের দুটি জেল থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তবে বাংলাদেশী সময় রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিবিসি সংবাদদাতারা জানিয়েছিলেন যে অধিকৃত পশ্চিম তিরের ইসরায়েলি কারাগার থেকে দুটি বাস বেরুতে দেখা গেছে।
আর তার মিনিট ২০ পরে বিবিসি সংবাদদাতারা খবর দিয়েছেন যে রামাল্লার কাছে বেইতুনিয়া চেকপয়েন্ট দিকে ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এরপরে আগামীকালও আরও এক দল বন্দী ও জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা শান্তি চুক্তি অনুযায়ী।