ভারতের উপকূলে কার্গো জাহাজে ইরান থেকে ড্রোন হামলা, যুক্তরাষ্ট্রের দাবি
ডেস্ক রিপোর্টঃ ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাতের উপকূলে শনিবার রাসায়নিক পদার্থবাহী একটি কার্গো জাহাজে ইরান থেকে ড্রোন হামলা করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।
চেম প্লুটো নামে ওই জাহাজটি ভারতের গুজরাত উপকূল থেকে প্রায় ২০০ নটিক্যাল মাইল ( ৩৭০ কিলোমিটার) দূরে ছিল।
ড্রোন হামলার পরে জাহাজটিতে আগুন ধরে গেলেও তা দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এই অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি ইরান।
সাম্প্রতিক সময়ে লোহিত সাগরে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের দ্বারা একাধিক ড্রোন ও রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) আলাদা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবার ‘’ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে দক্ষিণ লোহিত সাগরের আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের এলাকায় দুটি জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তবে কোন জাহাজ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা, এখনো তা জানা যায়নি।‘’
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, আমেরিকান জাহাজের দিকে হুথি এলাকা থেকে পাঠানো চারটি মানববিহীন ড্রোন ধ্বংস করে দিয়েছে ওই এলাকায় টহলরত মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ল্যাবন।
শনিবার ওই এলাকায় অপরিশোধিত তেলবাহী জাহাজে হুথি ড্রোন আঘাত করেছে বলে জানা যাচ্ছে।
ইয়েমেনের বেশিরভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণে থাকা হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী দাবি করছে, গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের সাথে সম্পৃক্ত জাহাজে তারা হামলা করছে।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ভারতের উপকূলে হামলার শিকার জাহাজটি লাইবেরিয়ায় রেজিস্ট্রিকৃত হলেও সেটার মালিক জাপান। তবে সেটি পরিচালনা করা হতো নেদারল্যান্ডস থেকে।
সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রের তথ্য অনুযায়ী, লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী রাসায়নিক পণ্যের ট্যাংকারটি ইসরায়েলের সাথে যুক্ত ছিল। এটি সৌদি আরব থেকে ভারতের দিকে যাচ্ছিলো।
এ হামলায় জাহাজে আগুনের সূত্রপাত হলেও তা নিভিয়ে ফেলা হয়। যদিও ২০ ক্রু সদস্যদের কারো কোন ক্ষতি হয়নি।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, ইয়েমেনের বেশিরভাগ নিয়ন্ত্রণকারী হুথি গোষ্ঠী এ পর্যন্ত দশটি জাহাজে একশর ওপরে ড্রোন এবং মিসাইল হামলা চালিয়েছে।
লোহিত সাগরে হামলার ঝুঁকি বাড়ার কারণে অনেক বড় শিপিং গ্রুপ তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সমুদ্র বাণিজ্য বিষয়ক সংস্থার (ইউকেএমটিও) মতে, ঘটনাটি ঘটেছে ভেরাভাল শহরের ২০০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ -পশ্চিমে।
এ হামলায় ট্যাংকারটির অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জাহাজে পানি ঢুকে পড়েছে।
অ্যামব্রে জানায়, ইরানি ড্রোন হামলার কারণে ‘অতি ঝূকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে বিবেচিত’ লোহিত সাগর থেকে এত দূরে ভারতে উপকূলে এ জাতীয় হামলার ঘটনা এর আগে ঘটেনি।
ভারতীয় নৌবাহিনী সাহায্যের জন্য একটি বিমান ও যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে।
লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাতে ইরান গভীরভাবে অভিযুক্ত বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শনিবার অভিযোগ করেছিলো।
জাতীয় নিরাপত্তার মুখপাত্র এড্রিয়ান ওয়াটসন বলেছেন, এ অঞ্চলে হুথিরা যে সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তাতে ইরানের দীর্ঘমেয়াদী সাহায্য এবং সমর্থন রয়েছে এটা তারই প্রমাণ।
পরে, ইরানের একজন বিপ্লবী গার্ড কমান্ডার হুঁশিয়ার করেছিলেন যে, গাজায় আমেরিকা এবং তার মিত্ররা অপরাধ করতে থাকলে লোহিত সাগর বাদে অন্য জলপথ বন্ধ করা হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা নাকদী জানিয়েছেন, ভূমধ্যসাগর এবং জিব্রাল্টার প্রণালী এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। কিন্তু এর বাইরে বিস্তারিত কিছু তিনি জানাননি।