নির্বাচনের শেষ ঘণ্টায় ভোটের হার নিয়ে বিতর্ক যে কারণে

Spread the love

ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশের সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাক্ষর ছাড়া ফলাফল শিট, ভোটের অস্বাভাবিক হারের মতো নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে।

নির্বাচনের দিন সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে কম ভোটারের উপস্থিতি থাকার পরেও ফলাফলে ৪১ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়ার তথ্য অনেক নির্বাচন বিশ্লেষককে অবাক করেছে।

তারা প্রশ্ন তুলছেন, প্রথম সাত ঘণ্টায় যেখানে ২৭ শতাংশ ভোট পড়েছে, সেখানে শেষ ঘন্টায় কীভাবে আরও ১৪ শতাংশের মতো ভোট পড়লো?

দেশের ২৯৮টি আসনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে রাজধানী ঢাকায়।

এখানকার একটি আসনের এক কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ভোটের পার্সেন্টিজ বাড়ানোর জন্য চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি সেই সুযোগ দেই নাই’।

তিনি জানান, তার কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র আট শতাংশ।

তবে ভোটের এই হারকে অস্বাভাবিক মনে করছে না নির্বাচন কমিশন।

কমিশনার মোঃ আলমগীর বিবিসি বাংলাকে বলেন, ”কিছু কিছু কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না বলে ভোট একটু কম পড়ছে। যে সব কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে সেখানে ভোট বেশি পড়ছে।”

নৌকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভোট

সাতই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটের হারে সবচেয়ে এগিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোপালগঞ্জ-৩ আসন। এই আসনে দুই লাখ ৯০ হাজারের মধ্যে ভোট পড়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার। এখানে ভোট পড়ার হার ৮৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।

নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা একাই পেয়েছেন দুই লাখ ৪৯ হাজার ৯৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুপ্রিম পার্টির এম নিজাম উদ্দিন লস্কর পেয়েছেন মাত্র ৪৬৯ ভোট।

নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের ফলাফলের চিত্র বলছে, সর্বনিম্ন ভোট পড়েছে রাজধানী ঢাকার একটি আসনে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা-১৫ আসন থেকে। এই আসনে ভোট পড়েছে মাত্র ১৩ দশমিক চার শতাংশ।

মিরপুরের এই আসনটিতে মোট ভোটার তিন লাখ ৪৪ হাজার। যার মধ্যে ভোট পড়েছে মাত্র ৪৪ হাজার ৯৩৬টি।

আর ৩৯ হাজার ৬৩২ ভোট পেয়ে কামাল আহমেদ মজুমদার জয় পেয়েছে। যেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোঃ.শামছুল হক পেয়েছে মাত্র ২ হাজার ৪৪ ভোট।

ভোটকক্ষে ভোটারের অপেক্ষা
ভোটকক্ষে ভোটারের অপেক্ষা

পাবর্ত্য দুই জেলায় ভোটার শূন্য ২৭ কেন্দ্র

খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি, পানছড়ি ও দীঘিনালা উপজেলার ১৯টি কেন্দ্রে সারাদিনে কোনও ভোট পড়েনি। আর রাঙ্গামাটির আটটি কেন্দ্রে কোন ভোটই পড়েনি। এতগুলো কেন্দ্রে শূন্য ভোটের পরও দুই আসনের একটিতে প্রায় ৫০ শতাংশ আরেকটিতে ৫৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।

খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়া উপজেলার বর্মাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, কুতুবছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শুকনাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কোন ভোটার ভোট দিতে কেন্দ্রে যান নি।

পাশের পানছড়ির উপজেলার ১১টিতে কোন ভোট পড়েনি। একটি মাত্র ভোট পড়েছে দক্ষিণ লতিবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে বলেন, কিছু কিছু জায়গায় আঞ্চলিক দলগুলোর প্রতিরোধের ঘোষণার কারণে হয়তো এর একটা ইমপ্যাক্ট পড়েছিলো।

রাঙ্গামাটির ফলাফলও বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, মোট চার লাখ ৭৪ হাজার ভোটের মধ্যে দুই লাখ ৭১ হাজার ভোট পেয়ে এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের দীপঙ্কর তালুকদার। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থীর ভোট মাত্র ৪ হাজার ৯শ।

কোন ভোট পড়েনি অনেকগুলো কেন্দ্রে। আর ২১৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে আটটি কেন্দ্রেই নৌকা প্রার্থীর ভোট মাত্র দশটির নিচে।

খাগড়াছড়ির একটি কেন্দ্রে কোন ভোট পড়েনি

খাগড়াছড়ি আসনের বেশ কিছু কেন্দ্রের ফলাফল বিশ্লেষণ করেছে বিবিসি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অনেক কেন্দ্রের ফলাফল শিটে কোন পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর নেই।

আবার কোন কোন ফলাফল শিটে তিন আওয়ামী লীগের এজেন্টের স্বাক্ষর মিলেছে। প্রতিপক্ষ সোনালী আঁশের প্রার্থীর একাধিক এজেন্টের স্বাক্ষরও মিলেছে বিভিন্ন ফলাফল শিটে।

নির্বাচন বিশ্লেষক ড. আব্দুল আলীম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘নিয়ম হলো গণনার সময় এক কেন্দ্রের একজনই এজেন্ট থাকবেন। বাড়তি থাকতে পারবেন না। একই প্রার্থীর যদি একাধিক এজেন্ট থাকে তাহলে সেটা অবৈধ’।

খাগড়াছড়ির শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যে এক হাজার ৮৩৮ ভোট পড়েছে তার মধ্যে নৌকা মার্কায় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা একাই পেয়েছেন এক হাজার ৬১৯ ভোট।

যেখানে অস্বাভাবিক ভোটের চিত্র দেখা যাচ্ছে এমন বেশ কিছু কেন্দ্রের নৌকার একাধিক এজেন্টের স্বাক্ষর ছিলো। আবার অনেক ফলাফল শিটে কোন এজেন্টের স্বাক্ষর পাওয়া যায় নি।

খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক হাজার ৮০৯ ভোটের মধ্যে এক হাজার ৭২৩ ভোটই পেয়েছেন নৌকার প্রার্থী। যেখানে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোন প্রার্থীর এজেন্টই ছিলো না।

কোন এজেন্টের স্বাক্ষর নেই ফলাফল শিটে

রহমতপুর কুমিল্লাটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নয়শত উনত্রিশ ভোটের মধ্যে ৮৩১টিই পড়েছে নৌকা মার্কায়। যে কেন্দ্রে কোন প্রার্থীরই এজেন্ট ছিলো না। কেননা ফলাফল শিটে তাদের কোন স্বাক্ষর দেখা যায় নি।

নৌকা মার্কার চারজন পোলিং এজেন্টের স্বাক্ষর পাওয়া গেছে পুঁজগাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে ১২৪ ভোটের মধ্যে ১১০টি ভোটই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর।

এই আসনের সবগুলো কেন্দ্রের ফলাফলের শিট রয়েছে বিবিসির হাতে। সেখানে বেশিরভাগ কেন্দ্রেই প্রদত্ত ভোটের নব্বই থেকে পঁচানব্বই শতাংশ ভোট পড়েছে নৌকা মার্কায়।

করনাতলীর বিটি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের পনেরো শত ভোটের মধ্যে এক হাজার ভোট পড়েছে। যার সবগুলো পড়েছে নৌকা মার্কায়। বাঘাইঘহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দুই হাজার ৮৫১ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছে দুই হাজার ১০০ জন। এই কেন্দ্রের মাত্র চারটি বাদে বাকিগুলো পড়েছে নৌকা মার্কায়।

নৌকা প্রার্থীর একাধিক এজেন্টের স্বাক্ষর ফলাফলে

ঢাকার ভোটের চিত্র কেমন ছিলো?

সদ্য শেষ হওয়া এই নির্বাচনে ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১৫টিই সিটি করপোরেশন এলাকায়। এই আসনগুলোতে ভোটের হার তুলনামূলক অনেক কম ছিলো।

ঢাকা-১৫ আসনে ১৩ দশমিক চার শতাংশের পরে কম পড়েছে গুলশান-বনানী-মহাখালী এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন।

এই আসনের তিন লাখ ২৩ হাজার ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ৫৩ হাজার ৯৫৭ জন। অর্থাৎ ভোট পড়েছে মাত্র ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আলী আরাফাত ৪৮ হাজার ৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম জিতেছেন মাত্র ৪৬ হাজার ৬১০ ভোট পেয়ে। এই আসনে ভোট পড়েছে মাত্র ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এদিকে, ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট পড়েছে ঢাকা-১৬ আসনে। ঢাকা-১৪ আসনে ভোট পড়েছে ২০ দশমিক ৮২ ভাগ।

ঢাকা-৯, ঢাকা-১০ এবং ঢাকা-১১ এই তিনটি আসনেই ভোটের হার ২১ শতাংশের ঘরে। সিটি করপোরেশন এলাকায় সবচেয়ে বেশি ৩০ দশমিক ০৫ শতাংশ ভোট পড়েছে ঢাকা-১২ আসনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এই আসন থেকে জিতেছেন নৌকা মার্কায়।

ঢাকা-১১ আসনে হলিক্রিসেন্ট স্কুলের একটি কেন্দ্রের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে তিন হাজার ৩৬৮ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন মাত্র ২৮৮ জন। যার মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওয়াকিল আহমেদ একাই পেয়েছেন ২৪৯টি।

পাশের আরেকটি কেন্দ্র রামপুরার খালেদ হায়দার মেমোরিয়াল হাই স্কুল কেন্দ্রের মোট ভোটার দুই হাজার ৫৭১ জন। এখানে ভোট পড়েছে মাত্র ২৯৭টি। যার মধ্যে ২৭১টিই পেয়েছেন নৌকার প্রার্থী। বাকি সাতজন প্রার্থীর ভোট মাত্র ২৬টি।

ভোটকেন্দ্র

ফলাফল বিশ্লেষণ করে বিবিসি দেখছে ঢাকার বেশিরভাগ আসনেই ভোটার উপস্থিতি ছিলো ১৩ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে।

দিনভর কেন্দ্রগুলোতে হাতেগোনা ভোটার উপস্থিতি থাকলেও ফলাফলের পর অনেক কেন্দ্রেরই ভোটার উপস্থিতি হার নিয়ে কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-১১ আসনের বেশ কিছু কেন্দ্রের ফলাফল বিশ্লেষণ শেষে বিবিসির সংবাদদাতা কথা বলেন একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সাথে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভোটার প্রথম থেকেই আসছিলো না। ভোট চলাকালে দুইজন আসছিলো ভোট দিতে, যারা ভোটার না। কিন্তু তাদের সুযোগ দেই নাই।

তিনি বলছিলেন, “পরে এক নেতা আসলো, আমাকে বলছিলো কিছু পার্সেন্টিজ বাড়াতে হবে। আমি বলছি এটা সম্ভব না, পার্সেন্টিজ বাড়াতে হবে আপনি বাইরে গিয়ে ভোটার আনেন। তখন কেন্দ্রের যে আর্মস ম্যান থাকে তাকে বাইরে ডাকে ঐ নেতা। সেটা করা হয়েছিলো আমাকে ভয় দেখানোর জন্য।”

“কিন্তু আমি কাউকেই অনৈতিক সুযোগ দেই নাই’।

ওই প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানান, দিন শেষে তার কেন্দ্রের ভোটের হার দাড়ায় মাত্র আট শতাংশ।

নির্বাচন বিশ্লেষক ড. আব্দুল আলীম বিবিসি বাংলাকে বলেন, বিকাল তিনটার দিকে নির্বাচন কমিশন যে ভোটের হার দেখিয়েছে সেখানে ভোটের হার ছিলো ২৭ দশমিক ১৫ ভাগ। তিনটা থেকে চারটা এক ঘণ্টায় টার্ন আউট বেড়েছে ১৪ শতাংশের মতো।

”আমরা যদি অন্য বছরে নির্বাচনের সাথে তুলনা করি এটা অস্বাভাবিক মনে হয়। নির্বাচন কমিশন থেকে কোন ব্যাখ্যা এটার জন্য দেয়া হয় নাই”, বলছিলেন মি. আলীম।

নির্বাচন কমিশন

প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে ভোটের বিশাল ব্যবধান

এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট দেখা যাচ্ছে গোপালগঞ্জ-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলুল করি সেলিমের।

তিনি এই আসন থেকে ভোট পেয়েছেন দুই লাখ ৯৫ হাজার ২৯১টি। বিপরীতে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির কাজী শাহিনের ভোট মাত্র এক হাজার ৫১৪। ভোটার উপস্থিতির হার এখানে ৮৩ শতাংশেরও বেশি।

সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে দুই লাখ ৭৮ হাজার ভোট পেয়ে জয় পান আওয়ামী লীগের তানভীর সাকিল জয়। যেখানে তার প্রতিপক্ষের ভোট মাত্র তিন হাজার ১৩৯।

বরিশাল-১ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এক লাখ ৭৬ হাজার ভোট পেয়ে জিতলেও, তার প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছে মাত্র চার হাজার ১২২ ভোট।

ভোট বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, যে সব আসনে তেমন কোন প্রতিযোগিতা ছিলো না, অর্থাৎ দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আসনেই ভোটার উপস্থিতি হার ছিলো অনেক বেশি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বিবিসিকে বলেন, “যে দল তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে পারে, সেই দল মানুষের সংখ্যা নিয়ে ম্যানুপুলেট করতে পারে।”

তবে নির্বাচন কমিশনার মোঃ. আলমগীর বলেন, যেখানে প্রতিযোগিতা কম হইছে সেখানে পার্সেন্টিজ কম।

জাতীয় পাটির আসনে ভোটের হার কম

পটুয়াখালী-১ আসনে ৮০ হাজার ৭৩২ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন হাওলাদার। এই আসনে ভোটের হার ছিলো মাত্র ২৪ দশমিক৩২ শতাংশ।

রংপুরকে বলা হয় জাতীয় পার্টির ঘাটি। রংপুর-৩ আসন থেকে দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিতও হন।

সাতই জানুয়ারির নির্বাচনে এই আসন থেকে ৮১ হাজার ৬৬১ ভোট পেয়ে এবার নির্বাচিত হন দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী এই আসন থেকে ভোট পেয়েছেন ২৩ হাজার ৩২৬টি। নির্বাচন কমিশনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই আসনে ভোট পড়েছে মাত্র ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

চট্টগ্রাম-৫ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৭৫ হাজার। যার মধ্যে মাত্র ৫০ হাজার ৯৭৭ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন জাতীয় পাটির নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাম্মদ শাজাহান চৌধুরী পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫১ ভোট, ফলাফলের হিসেব দেখাচ্ছে এই আসনে ভোট পড়েছে মাত্র ২০ শতাংশ।

ভোট দিচ্ছেন ভোটার

ভোটের এই হার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ভোটার উপস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে চিত্র আমরা দেখেছি, আর যে ফলাফল ঘোষণা করেছে ইসি তার কোন মিল নেই। এটাকে মেনুপুলেট রেজাল্ট মনে হচ্ছে,” বলছিলেন মি. আহসান।

নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর অবশ্য বিবিসিকে বলেছেন, ”আমাদের কাছে যে রেজাল্ট আছে সেখানে সব এজেন্টের স্বাক্ষর আছে। আমরা ভোটের ফলে অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি।”


Spread the love

Leave a Reply