বাংলাদেশসহ বিদেশি শ্রমবাজারের দুয়ার খুলছে মালয়েশিয়া

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্ক:

শিগগিরই বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ঘোষণা দেবে মালয়েশিয়া। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে কথা বলেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ড. আহমাদ জাহিদ হামিদি। আশা করা হচ্ছে, এ সিদ্ধান্তের ফলে মালয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিকরাও উপকৃত হবেন।

বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরে এক অনুষ্ঠানে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিদেশি কর্মীদের ইস্যুটি নিয়ে আমি খুবই উদ্বিগ্ন। আমি এ সম্পর্কে সচেতন যে, এর ফলে বহু সেক্টর আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিয়োগদাতারা আবারও অধিকসংখ্যক বিদেশি কর্মী নিয়োগের সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।

ড. আহমাদ জাহিদ হামিদি বলেন, সরকার তাদের কথা শুনছে। এ বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসছে। তিনি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে সবসময়ই বিশেষ করে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে সরকারের আলোচনা অব্যাহত ছিল।

মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কিছু এনজিওর কাছ থেকে এ ইস্যুতে অভিযোগ পেয়েছি। ওই এনজিওগুলোকে দোষারোপের কোনও অভিপ্রায় আমার নেই। কিন্তু আমি মনে করি, বিদেশি শ্রমিক ভাড়া করার প্রয়োজন নেই বলে তারা যে পরামর্শ দিয়েছে, তার দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তায়।

এর আগে গত মার্চে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী রিচার্ড রায়ট জানান, মালয়েশিয়ায় নতুন করে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ স্থগিতের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির চুক্তিতে কোনও প্রভাব ফেলবে না। বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ওই সিদ্ধান্তের ফলে ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগে নতুন সিদ্ধান্ত বাধা সৃষ্টি করবে না উল্লেখ করে তখন রিচার্ড রায়ট বলেছিলেন, ওই সমঝোতা স্মারক ছিল পাঁচ বছরের জন্য।

রিচার্ড রায়ট তখন বলেছিলেন, এই নিষেধাজ্ঞা যখন তুলে নেওয়া হবে, তখনও এই চুক্তি বহাল থাকবে। বিদেশি শ্রমিক নিয়োগে আমরা শুধু বাংলাদেশের সঙ্গেই চুক্তি করিনি। সাতটি দেশের সঙ্গে আমাদের এ ধরনের চুক্তি রয়েছে। নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে এ চুক্তি অকার্যকর হয়ে যাবে না।

আহমাদ জাহিদ হামিদি একইসঙ্গে মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, বর্তমানে দেশের যেসব প্রতিষ্ঠানে অনুমতিপত্র ছাড়া বিদেশি শ্রমিক কাজ করছেন অথবা যাদের অনুমতিপত্রের মেয়াদ পার হয়ে গেছে তাদের বৈধতার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে আবেদন জানাতে হবে। আহমেদ জাহিদ আরও বলেন, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে চাকরিদাতাদের বিদেশি শ্রমিকদের বৈধতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এর আগে এই সময়সীমা ছিল আগের বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে তা বাড়ানো হয়।

চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার সরকারি ঘোষণায় বলা হয়, দেশটির মন্ত্রিসভা নতুন বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একদিন আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে তিন বছরে ১৫ লাখ শ্রমিক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল মালয়েশিয়া। এখন বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে দেশটি সরে আসলে কপাল খুলতে পারে দেশটিতে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি শ্রমিকদের। কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশি হাইকমিশনও এমনটাই প্রত্যাশা করছে।


Spread the love

Leave a Reply