জনগণকে রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ে নামতে হবে, ইফতার মাহফিলে তারেক রহমান
ডেস্ক রিপোর্টঃ স্বাধীনতার মূলনীতি আজ ভুলন্ঠিত। বাংলাদেশ আজকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ঠিক আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী আজ ৪৩ শতাংশ মানুষ ঋণ নিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। বাংলাদেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হাজার হাজার তরুণরা দেশ থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে । দেশে আজ কেউই নিরাপদ বোধ করছে না। আমাদের পার্শবর্তী একটি দেশেও এ অবস্থা খোঁজে পাওয়া যাবে না। অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার অভাবেই দেশের তরুণরা দেশ ছাড়ছে। অনেকেই আবার সাগরে ডুবে মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে যুক্তরাজ্য বিএনপিন কর্তৃক আয়োজিত ইফতার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ডামি সরকারের এমপি, মন্ত্রীসহ নেতা-কর্মীরা দেশের মানুষের টাকা মেরে ব্যাংক পর্যন্ত খালি করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের যুক্তরাজ্যে কয়েকশত বাড়ির খবর দেশ-বিদেশের মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে। জবরদখলকারী সরকারের নেতা-কর্মীদের লোটপাটই দেশের মানুষের ভোগান্তির অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা আজ এতটাই দলীয়করণ হয়েছে কয়েকদিন আগে প্রধান বিচারপতিসহ অন্য কিছু বিচারপতিরা নিউ ইয়র্কে গেলে তাদেরকে এয়ারপোর্টে শুভেচ্ছা জানায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। একটা দেশের প্রধান বিচারপতিকে যখন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা এয়ারপোর্টে শুভেচ্ছা জানাতে যায় তখন একটা দেশের বিচারব্যবস্থার কি দশা তা সহজেই অনুমেয়। এরকম দলদাস বিচারপতিদের কাছ থেকে দেশের সাধারণ মানুষ কতটুকু ন্যায়বিচার পাবে তা সহজেই বুঝা যায়। আর বাস্তবে হচ্ছেও তাই। নির্বাহী বিভাগের ইশারাতেই আজ বিচারালয়ে রায় লেখা হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ বিরোধীমতের জেল জরিমানা করা হচ্ছে। বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। প্রশাসনকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। মেরুদন্ডহীন একটি জাতি তৈরী করার জন্য নতুন কারীকুলামের নামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
আবরারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলগুলো আজকে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসী সংগঠনের টর্চার সেলে পরিণত হয়েছে। মেয়েদের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিপদজনক হয়ে উঠছে। প্রতিদিন খবরে দেখা যায় এই সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ কিভাবে নির্যাতন ও নিপীড়ন করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের উপর বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের কোনো আস্থা নেই। তাই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে এদের নেতাদের কথাবার্তা শুনলে তা পরিষ্কার হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ নামক সন্ত্রাসী দলের সাধারণ সম্পাদক পার্শ্ববর্তী বিদেশী একটি দেশের নাম উল্লেখ করে বলেছে যে, সেই দেশের সাহায্য না পেলে তারা ক্ষমতায় ঠিক থাকতে পারতো না। শুধু তাই ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কিছু প্রার্থী নির্লজ্জ্বভাবে বিদেশী একটি দেশের প্রার্থী বলে নিজেদেরকে জাহির করেছে। কতটা নিচে নেমে এরা রাজনীতি আর ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে চায় তা ভাবতেও লজ্জা লাগে। কিন্তু ভয় হলো অন্যখানে, এতদিন নামকাওয়াস্তে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ঠিক থাকলেও এটাও আজ হুমকির সম্মুখীন। স্বাধীনতা দিবসের ঊষালগ্নে পার্শবর্তী একটি দেশ আমার দেশের নিরীহ দুজন মানুষকে সীমান্তে হত্যা করে তাদের বন্ধুত্বের নমুনা প্রকাশ করেছে।
বিগত ডামি নির্বাচনে শতকরা প্রায় ৯৮ ভাগ জনগণ আওয়ামী লীগ নামক সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের প্রত্যাখ্যান করেছে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের জনগণ বিএনপির সাথে রয়েছে এই আস্থা ও বিশ্বাসের পরিতৃপ্তি নিয়েই শুধু বসে থাকা যাবে না। আওয়ামী লীগ আজ পার্শ্ববর্তী দেশের ক্রীতদাসে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের লড়াকু সৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, এই লড়াই শুধু দুটি দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই লড়াই লুটেরা ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গনতন্ত্রমনা সকল রাজনৈতিক দলের। তাই বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য, দেশের জনগণকে রক্ষার জন্য সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই লড়াইয়ে নামতে হবে। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের সরকার কায়েম করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথই হোক আজকের স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকার।
বাংলদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি ) যুক্তরাজ্যে শাখার উদ্যোগে ২৬শে মার্চ মঙ্গলবার বাংলাদেশের ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত অতিথি থাকায় বৃহৎ একটি হলে জায়গা সংকুলান না হওয়ার কারণে লন্ডনের স্থানীয় ৩টি হলে একযোগে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে দুই পর্বের অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। প্রথম পর্বে ছিলো বাংলাদেশের ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা এবং ২য় পর্বে ছিল পবিত্র কোরআন থেকে রমজানের ফজিলত সম্পর্কিত আলোচনা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিকের সভাপতিত্বে ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বনামধন্য চিকিৎসক ডাঃ জোবাইদা রহমান ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ড. হাসানাত এম হোসাইন এমবিই, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাহিদুর রহমান, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, ব্যারিস্টার এম এ সালাম, আনোয়ার হোসেন খোকন, যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব, তাজুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মল্লিক, দপ্তর সম্পাদক (যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদায় ) ড. মুজিবুর রহমান মুজিব, সেচ্ছাসেবক দল সভাপতি নাসির আহমেদ শাহীন , যুবদল সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন ।
অনুষ্ঠানে কমিউনিটি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিসিএএর সাবেক সভাপতি পাশা খন্দকার, সাবেক ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর অহিদ আহমেদ, মুফতি শাহ সদর উদ্দিন, ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, প্রমুখ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি আলহাজ্ব তৈমুছ আলী, সলিসিটর্স ইকরাম মজুমদার, এম এ মুকিত, আবেদ রাজা, যুগ্ম সম্পাদক মিসবাহুজ্জামান সোহেল, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ খান, খসরুজ্জামান খসরু, গোলজার খান, সুজাতুর রেজা, হাসনাত কবির খান রিপন, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মামুন, নাসিম আহমদ চৌধুরী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ইউরোপ কোঅর্ডিনেটর কামাল উদ্দিন, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক আহবায়ক দেওয়ান মোকাদ্দেম চৌধুরী নিয়াজ, ফখরুল ইসলাম বাদল, এস এম লিটন, এম এ সালাম, সহ সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আলম, আসাদুজ্জামান আহমদ, আব্দুল বাসিত বাদশা, বাবুল আহমদ চৌধুরী, আব্দুস সামাদ, নাজিমুল ইসলাম লিটন, এডভোকেট খলিলুর রহমান, শাহীন মিয়া, টিপু আহমদ, সেলিম আহমেদ (সহ দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত), সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, মোশাহিদ আলী, তৈয়বুর রহমান হুমায়ুন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার আব্দুল মাজিদ তাহের, রাজু আহমদ, প্রচার সম্পাদক ডালিয়া বিনতে লাকুড়িয়া, কোষাধ্যক্ষ সালেহ গজনবী, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার লিয়াকত আলী, যুব বিষয়ক সম্পাদক খিজির আহমদ, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ইমতিয়াজ এনাম তানিম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক কামাল মিয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফেরদৌস রহমান, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাদিক হাওলাদার, প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সাহেদ উদ্দিন চৌধুরী, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শিপু, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার শামসুজজোহা, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ গাজী, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, সহ প্রচার সম্পাদক মইনুল ইসলাম, তোফাজ্জল আলম, এডভোকেট শারিয়ার কবির, মুক্তাদির আলী, মোঃ তৌকির শাহ, আব্দুল আহাদ, শিবলী শহীদ খুশনবিশ, তুরন মিয়া, কদর উদ্দিন, রাজ্ হাসান, সোহেল আহমদ সাদিক, সৈয়দ মোসাদ্দিক আহমদ, ব্যারিস্টার আলিমুল হক লিটন, মোঃ আরিফ আহমদ, সৈয়দ শামীম আহমদ, লুবেক আহমদ চৌধুরী, হেলাল উদ্দিন, মোস্তাক আহমদ, রুহুল ইসলাম, এনামুল হক লিটন, জসিম উদ্দিন সেলিম, আব্দুল হামিদ খান হেভেন, খালেদ চৌধুরী, ইউনুছ পাঠান বুলু, মিসবাউল ইসলাম বাবু, শরীফ উদ্দিন ভূঁইয়া বাবু, শরিফুল ইসলাম, ফিরোজ আলম, মিজানুর ইসলাম মির্জা, সালেহ আহমদ, ফয়সল আহমদ, নূরে আলম সোহেল, নজরুল ইসলাম, শারিয়ার রহমান জুনেদ, নাজমুল হোসেন চৌধুরী, মতিউর রহমান চৌধুরী। যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাজ্য যুবদলের সভাপতি রহিম উদ্দিন, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারি আবুল হোসেন, আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার আবুল মনসুর শাহজাহান, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাবর চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ জে লিমন, আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার লিটন আফিন্দি, কেন্দ্রীয় জাসাসের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইকবাল হোসেনসহ প্রমূখ। যুক্তরাজ্য বিএনপির জোনাল কমিটির সাবেক দায়িত্বশীলদের নেতৃত্বে এবং অঙ্গ সংগঠনসমূহের জোনাল কমিটির নেতৃত্বে এবং কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শত শত নেতা-কর্মী স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে যোগদান করেন ।
তিন হলে একযোগে অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পর্কে যুক্তরাজ্য বিএনপি জানিয়েছে, অতিরিক্ত অতিথি থাকায় বৃহৎ একটি হলে জায়গা সংকুলান না হওয়ার কারণে পরে কমিউনিটির অতিথি ও দলীয় নেতা কর্মীদের জায়গা দিতে পরে আরো বৃহৎ দুটি হল নেয়া হয় ।
আলোচনায় বক্তারা স্বধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং দোয়া মাহফিলে সমস্ত মুসলিম উম্মার মঙ্গল কামনা করা হয়।