নিজামীর ফাঁসি: জাতিসংঘে নালিশের হুমকি পাকিস্তানের
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে পাকিস্তান। নতুন প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশে জামায়াত নেতাদের ফাঁসির ইস্যুটি নিয়ে জাতিসংঘে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। শুক্রবার পাকিস্তানের সিনেটে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ এ ঘোষণা দেন। রেডিও পাকিস্তান ও ডেইলি পাকিস্তানে প্রকাশিত রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার পাকিস্তানের উচ্চকক্ষ পার্লামেন্ট সিনেটে বক্তৃতাকালে বাংলাদেশে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন সারতাজ আজিজ। তিনি বলেন, এ বিষয়ে মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন দাবি করে তিনি বলেন, এ ধরনের কার্যকলাপ ১৯৭৪ সালে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার চুক্তির লঙ্ঘন। বাংলাদেশে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকরের ইস্যুটি পাকিস্তান জাতিসংঘে তুলে ধরবে। এই ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং অন্যান্য দেশেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
এসময় ঢাকা থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নেয়ায় তুরস্ককে স্বাগত জানান সিনেটররা। পাকিস্তান সরকারেরও কঠোর অবস্থান নেয়ার দাবি জানান তারা। যদিও তুর্কী রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের খবর অস্বীকার করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর। সিনেটের প্রধান রাজা জাফারুল হক বলেন, বাংলাদেশে যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আর কাউকে ফাঁসি দিতে না পারে, সে জন্য মুসলিম দেশগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
গত ১০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে পাকিস্তান। নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ বুধবার একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করে। সর্বসম্মতভাবে পাস হওয়া এই প্রস্তাবে বাংলাদেশের এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাটির প্রতি দৃষ্টি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান থেকে আলাদা হওয়া বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে ইসলামাবাদের এ ধরনের প্রতিক্রিয়াকে ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ বলে আসছে ঢাকা।
এর আগেও একাত্তরের রাজাকার ও আলবদরদের বিচারের প্রতিবাদে জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব পাস করেছে পাকিস্তান। বিভিন্ন সময়ে জামায়াত নেতাদের অখণ্ড পাকিস্তানের প্রতি অবিচল থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া বিবৃতিতে।