ইউরো ২০২৪: টাইব্রেকারে পর্তুগালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ফ্রান্স
ফ্রান্স ০:০ পর্তুগাল (টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে জয়ী ফ্রান্স)
হয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, নয়তো কিলিয়ান এমবাপ্পেে— একজনের জন্য বিদায়ের মঞ্চটা প্রস্তুতই ছিল। ছিল আট বছর আগে ইউরোর ফাইনাল খেলা ফ্রান্স ও পর্তুগালের নানা অংকও।
জার্মানির হামবুর্গে ইউরো ২০২৪-এর কোয়ার্টার ফাইনালে আজ সেই অংকটা মিলিয়েছে ফ্রান্স। গোলশূন্য ১২০ মিনিটের পর টাইব্রেকারে পর্তুগালকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। পর্তুগালের সঙ্গে বিদায় ঘটেছে সর্বশেষ ইউরোর ঘোষণা দেওয়া রোনালদোরও।
মঙ্গলবার মিউনিখে প্রথম সেমিফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। আজ দিনের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে ২-১ গোলে হারায় স্পেন।ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ানোর পর পর্তুগালের বড় ভরসা ছিলেন গোলকিপার দিয়েগো কস্তা, যিনি আগের ম্যাচে স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে তিনটি সেভ করেছিলেন। তবে এ যাত্রায় কস্তা একটি সেভও করতে পারেননি। টাইব্রেকার শট সেভ করতে পারেননি ফ্রান্সের মাইক মেইগনানও। তবে জোয়াও ফেলিক্সের নেওয়া পর্তুগালের চতুর্থ শট পোস্টে লেগে মিস হলে সেটিই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়।
শেষ আটে ওঠার পথে দুই দলের কারো যাত্রাই মসৃণ ছিল না। গ্রুপ পর্বে মাত্র এক ম্যাচ জেতা ফ্রান্স শেষ ষোলোয় বেলজিয়ামকে হারিয়েছিল ১-০ গোলে। আর পর্তুগাল শেষ ষোলোয় স্লোভেনিয়াকে হারাতে অপেক্ষা করতে হয়েছে টাইব্রেকার পর্যন্ত। তবে আজকের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথমার্ধে বল দখলে, পাসে এগিয়েছিল পর্তুগালই। যদিও গোলের সমূহ সম্ভাবনা তৈরি করা কোনো আক্রমণ করতে পারেননি রোনালদো, ব্রæনো ফার্নান্দেজ, বের্নার্দো সিলভারা।
প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপ্পে, রান্দাল কোলো মুয়ানি, আঁতোয়ান গ্রিজমানরাও। দুই গোলকিপারের বড় পরীক্ষাবিহীন এই ৪৫ মিনিটের উল্লেখযোগ্য আক্রমণ বলতে ২১ মিনিটে ফ্রান্সের থিও এরনান্দেজের দূর থেকে নেওয়া শট, যা তেমন কোনো চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারেনি দিয়েগো কস্তাকে। এ সময়ে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি রোনালদো বা এমবাপ্পেও।দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও ছিল প্রথমার্ধের ছায়া হয়ে। তবে ম্যাচের বয়স ঘণ্টার কাঁটায় পৌঁছানোর পর তিন মিনিটের মধ্যে দুটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে পর্তুগাল। ৬২ মিনিটে জোয়াও কানসেলোর দারুণভাবে বাড়ানো বল ধরে ব্রুনো ফার্নান্দেজ পেনাল্টি বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শট নেন। তবে একটু আগেভাগে নেওয়া শটটি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন ফ্রান্স গোলকিপার মাইক মেইগনান। দুই মিনিট বাদে ভিতিনহার সোজাসুজি নেওয়া শটও প্রতিহত হয় তাঁর হাতে। ফিরতি বল রোনালদো পান পোস্টের এক পাশে, পায়ের টোকায় জালে পাঠাতে চাইলেও মরীয়া মেইগনানের গায়ে লেগে আবার বাধাপ্রাপ্ত হয়।
পর্তুগালের জোড়া সুযোগের পর গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে ফ্রান্সও। ৬৬ মিনিটে কোলো মুয়ানি অনেকটাই একা পেয়ে যান কস্তাকে, কিন্তু মাঝে রুবেন দিয়াজে আটকে যান তিনি। বল যায় পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে। এর পাঁচ মিনিট পর এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার সামনেও বাধা ছিল শুধু পর্তুগাল গোলকিপার। কিন্তু তাড়াহুড়ায় শট নিয়ে তিনিও বল পাঠান বাইরে দিয়ে।
দশ মিনিটের মধ্যে দুই দলের চারটি সুযোগ নষ্টের মাধ্যমে খেলা বেশ জমে ওঠে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে আবারও ফিরে আসে ‘আগে রক্ষণ’ সামালের মন্ত্র। নিধারিত নব্বই মিনিটের মধ্যে আর কোনো বড় সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউই।
অতিরিক্ত সময়ের খেলায় তৃতীয় মিনিটেই ভালো সুযোগ আসে রোনালদোর সামনে। কাইসেদোর বাড়ানো বল আট গজ দূরে পেয়ে প্রথম স্পশেই জালে পাঠানোর চেষ্টা করেন তিনি। আর তাতে বল উঁচু হয়ে চলে যায় পেছনের গ্যালারিতে।
এ নিয়ে ইউরোর নকআউটে মুখোমুখি হওয়া ফ্রান্স-পর্তুগালের চারটি ম্যাচই গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।