ইরানে বন্দর নির্মাণে ভারতের ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পাদন

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্ক:

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইরান সফরে ভারত ও ইরানের মধ্যে বন্দর নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার যুগান্তকারী এ চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয় বলে জানিয়েছে শীর্ষ ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।

দুদিনের সফরে রবিবার ইরানে পৌঁছান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রায় একদশক পর ইরানে এটা ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রীর সফর। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির আমন্ত্রণে মোদি এ সফরে যান। সোমবার ইরানের প্রেসিডেন্টসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মোদি। সোমবার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিও ইরানে পৌঁছান। তিন নেতার উপস্থিতিতে ইরানের ছাবাহার নামে একটি বন্দর উন্নয়নে ত্রি-পাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর নরেন্দ্র মোদি এটিকে ইতিহাস সৃষ্টিকারী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ভারত ও ইরান নতুন বন্ধু নয়। আমাদের দোস্তি ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। মোদি ঘোষণা দিয়েছেন, ছাবাহারকে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে ইরানকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ (লাইন অব ক্রেডিট) দেবে ভারত। উভয় দেশ বন্দর নির্মাণের ঘটনাটিকে ‘গেম চ্যাঞ্জার’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ইরান ও ভারতের পারস্পরিক সহযোগিতার এক বড় প্রতীক হয়ে উঠতে চলেছে ছাবাহার।

চুক্তি অনুযায়ী ইরানের ছাবাহারে বন্দরটি নির্মাণ করা হবে। বন্দর নির্মাণে ভারত প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এটিই হবে দেশের বাইরে কোন বন্দর যেখানে ভারত বিনিয়োগ করেছে।  ইরানের দক্ষিণ উপকূলে এই ছাবাহার অবস্থিত। আফগানিস্তানে পণ্য পাঠাতে পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা ভারতকে ব্যবহার করতে দেয় না। ইরানের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে পণ্য পাঠাতে হয় ভারতকে। দীর্ঘ দিন ধরে ভারত চাইছিল পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে বা পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তান অবধি একটা পথ বানাতে। যে পথকে বাণিজ্যিকভাবেই ব্যবহার করবে ভারত।

শুধু আফগানিস্তান নয়, ওই পথে মধ্য এশিয়ার সঙ্গেও বাণিজ্য বাড়াতে চাইছে ভারত। ফলে শুধু ছাবাহার বন্দর নয়, ভারতীয় উদ্যোগে সেখান থেকে ৫০০ কিলোমিটার রেললাইন বসানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। সেই রেললাইন যাবে জাহেরান পর্যন্ত।

এ চুক্তির আরও তাৎপর্য রয়েছে। পাকিস্তানের গোয়াদরে বন্দর বানিয়ে ভারতকে পশ্চিম দিক থেকে ঘিরে ফেলতে চাইছে চীন। গোয়াদর বন্দর থেকে ছাবাহারের দূরত্ব মাত্র ৭২ কিলোমিটার। পাক-চিন অর্থনৈতিক করিডোর গঠন এবং গোয়াদরে চীনা বন্দর তৈরির তোড়জোড়ের মধ্যেই ইরানের ছাবাহারে বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা এগুতে থাকে ভারত।


Spread the love

Leave a Reply