ঢাকায় চার পুলিশ, র্যাব, বিজিবি সদস্যসহ আরও ২১ লাশ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গতকাল সোমবারের কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’এবং একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘটনার পর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, সহিংসতা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আরও ২১ জনের লাশ এসেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। এর মধ্যে চারজন পুলিশ সদস্য, একজন র্যাব সদস্য এবং একজন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য।
গতকাল মধ্যরাত থেকে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
তিন দিনে ঢাকা মেডিকেলে ৬৯ লাশ
গত তিন দিনে শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ৬৮ জনের মরদেহ আনা হয়েছে। এর মধ্যে গত রোববার ১১ জনের, গতকাল ৩৭ জনের এবং আজ আনা হয় ২১ জনের লাশ।
আজ যেসব লাশ এসেছে, তার মধ্যে একটি উত্তরা থেকে আনা পুলিশের পরিদর্শক রাশেদুল ইসলামের (৪৪)। তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। উত্তরা থেকে সুলতান (৩০) নামে গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তির লাশসহ অজ্ঞাতপরিচয় পরিচয় আরও তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ আনা হয়। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বয়স আনুমানিক ৪০, ৩২, ৩৮ বছর।
এদিকে বিজিবি সদস্য আবদুল আলিম শেখের (৪৬) লাশ আজ আনা হয় গাজীপুর থেকে। পুলিশ সদস্য মনির হোসেনের (৪৫) লাশ আনা হয় পোস্তগোলা এলাকা থেকে। তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সংসদ ভবন এলাকা থেকে আনা হয় পুলিশ সদস্য মাহফুজুর রহমানের (২৪) লাশ। যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আনা হয় র্যাব সদস্য আনোয়ার হোসেন (৫৭) ও পুলিশ সদস্য সঞ্জয় কুমার দাসের (৩১) লাশ। আনোয়ারকে গুলি করে এবং সঞ্জয়কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী থেকে রাসেল মাহমুদ (২১) নামের এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ এবং আরও দুই অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ আনা হয়, যাঁদের বয়স আনুমানিক ৩০ ও ৪০ বছর। অজ্ঞাতপরিচয় এই দুই ব্যক্তির লাশ আনা হয় যাত্রাবাড়ী থানার পশ্চিম পাশের রাস্তা থেকে।
আজ দুপুরে যাত্রাবাড়ী থানার আশপাশে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এর মধ্যে দুজনের মরদেহের ওপর পুলিশের পোশাক দেখা গেছে। আরেকটি মরদেহের হাতে পরানো রয়েছে হাতকড়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকেই হতাহত হন। পরে বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তারা থানার ভেতর ঢুকে পুলিশ সদস্যদের মারধর করে। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য হতাহত হন।
এ ছাড়া বাড্ডা থেকে আবদুল জব্বার (৩০) ও আশরাফুল (১৭), ডেমরা থেকে রোমান (১৭), বংশাল থেকে সাইফুদ্দিন (৬০), মিরপুর থেকে মো. রুবেল (১৮) ও অজ্ঞাতপরিচয় (৩০) এবং হাতিরঝিল থেকে শাহরিয়ার আলম রাব্বী (৩২) নামের এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ আজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
এদিকে গতকাল রাতে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ২০ বছর বয়সী এক অজ্ঞাতপরিচয় তরুণের লাশ আসে। তাঁর লাশ আনা হয় বংশাল থেকে।