ইউরো থেকে ইংল্যান্ডকে বাদ দেওয়ার হুমকি উয়েফার

Spread the love

সব ঠিক থাকলে চার বছর পর ২০২৮ সালের ইউরো যৌথভাবে আয়োজন করবে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। তবে নিজ দেশে ইউরোর সেই আসরে ইংল্যান্ডকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই সতর্কবার্তা? জানা গেছে, যদি পরিকল্পনাধীন থাকা নতুন রেগুলেটর বা নিয়ন্ত্রকের ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ থাকে তবে ইংল্যান্ডের ওপর আরোপিত হতে পারে এই নিষেধাজ্ঞা।

এর মধ্যে উয়েফার জেনারেল সেক্রেটারি থোডোর থিওডোরিডিস একটি লিখিত বার্তা পাঠিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতিসচিব লিসা ন্যানডিকে। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ফুটবলে কোনো ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ চলবে না।’ এ সময় স্পষ্টভাবে সতর্ক করে বলা হয়, ‘চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে উয়েফা থেকে ফেডারেশন এবং প্রতিযোগিতা থেকে দলকে বাদ পড়তে হবে।’

এদিকে বিশ্বকাপের আয়োজক ও বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফাও ফেডারশনের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিয়ে বেশ কঠোর। ফিফার গঠনতন্ত্র অনুসারে, ‘জাতীয় সংস্থাগুলোকে অবশ্যই স্বাধীন হতে হবে এবং কোনো ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই পরিচালিত হতে হবে।’

এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিফার সামনে এই সমস্যাটি উত্থাপন করা হয়েছিল। এটা অনেকটা স্পষ্ট যে প্রস্তাবিত আইনের পাশাপাশি সরকার, নিয়ন্ত্রক ও ফুটবল কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনার জন্য যে পরিকল্পনা, সেটা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ফিফাও।

নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে ইংল্যান্ড

থিওডোরিডিসের পাঠানো চিঠিটি প্রথমে ফাঁস করে সানডে টাইমস, যেখানে স্যার কিয়ার স্টারমারের লেবার সরকার কর্তৃক নতুন রেগুলেটরের প্রস্তাবকে এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা দেওয়া হয়েছে এবং স্বাধীনতার বিষয়টিতে বিশেষভাবে জোর দোওয়া হয়। ইংলিশ ফুটবল কর্তৃপক্ষকে চিঠিটি দেওয়া হয় এ মাসের শুরুতে, যেখানে সতর্কতার পাশাপাশি উয়েফা নিজেদের উদ্বেগের কথাও প্রকাশ করেছে।

থিওডোরিডিসের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘খেলাধুলার স্বায়ত্তশাসন এবং প্রতিযোগিতার মধ্যে ন্যায্যতা নিশ্চিতে আমাদের নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। যে নিয়ম (সরকারের হস্তক্ষেপ) থেকে সংস্থাকে রক্ষার কাজ করে।’ ফলে এই জায়গাটিতে হস্তক্ষেপের ফল হবে উয়েফা থেকে ফেডারেশন ও প্রতিযোগিতা থেকে দলকে বহিষ্কার। শুধু এটুকুই নয়, সীমা অতিক্রম করলে ভবিষ্যতে উয়েফার আয়োজনে হওয়া চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগে ইংলিশ দলগুলোর অংশগ্রহণও পড়তে পারে প্রশ্নের মুখে।ইংল্যান্ডের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলই অনেক দিন ধরে নিয়ন্ত্রকের ধারণাকে সমর্থন দিয়ে আসছে। এ বিষয়ে তাদের যুক্তি হচ্ছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নিজেদের বিষয়গুলো ঠিকঠাকভাবে নিয়ন্ত্রণে অক্ষম। ফলে খেলাটির আর্থিক স্থিতিশীলতাকে রক্ষার জন্য এটি (নিয়ন্ত্রক) বিশেষভাবে প্রয়োজন। পাশাপাশি ক্লাবের ঐতিহ্য রক্ষার জন্যও এটাকে জরুরি বলে প্রচার করা হচ্ছে। তা ছাড়া এটি সমর্থকদেরও বাড়তি ক্ষমতা দেবে এবং ইউরোপিয়ান সুপার লিগের মতো উদ্যোগকে রুখে দেবে বলেও যুক্তি দেখানো হচ্ছে।বিশ্বের প্রথম নিয়ন্ত্রক হতে যাওয়া ইংলিশ ফুটবল রেগুলেটর নিয়ে থিওডোরিসিস আরও একটি উদ্বেগের কথা বলেছেন। তাঁর মতে, এটি বাস্তবায়নের ফলে এমন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতে পারে, যা বৈশ্বিকভাবে খেলাটিকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। ন্যানডি বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অবশ্য এখনো এই চিঠির কোনো জবাব দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।


Spread the love

Leave a Reply