কে হচ্ছেন বৃটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী

Spread the love

toryবাংলা সংলাপ ডেস্ক:কে হচ্ছেন বৃটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী? এই প্রশ্ন এখন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে। বর্তমান হোম সেক্রেটারী থেরেজা মে, জাস্টিস সেক্রেটারী মাইকেল গভ, সাবেক ডিফেন্স সেক্রেটারী ডক্টর লিয়াম ফক্স, সাবেক ব্যাঙ্কার এন্ড্রেয়া লিডসম এমপি এবং বর্তমান পেনসন সেক্রেটারী স্টিফেন ক্র্যাব। এই ৫ জনের একজন হবেন বৃটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। তিনি হবেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হওয়া নতুন ইংল্যান্ডের ভবিষ্যত রূপকার।
গত ২৩ শে জুন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে অনুষ্ঠিত রেফারেন্ডামে ব্রেক্সিট অর্থাৎ লিভ ক্যাম্পেইন ৫২ শতাংশ ভোটে জয়ী হয়। ২৪শে জুন শুক্রবার ফলাফল ঘোষণার রিমেইন ক্যাম্পেইনে থাকা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বৃটিশ রাজনীতির রীতি অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দলের যিনি লিডার তিনিই প্রধানমন্ত্রী হন। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে পার্টির লিডারশীপের পদও চলে যায়। তাই নতুন প্রধানমন্ত্রী পাবার জন্যে দলের লিডার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।
বৃটিশ কনজারভেটিভ পার্টির লিডারশীপ প্রতিযোগিতায় প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন হোম সেক্রেটারী থেরেজা মে। তবে লিডারশীপ প্রতিযোগিতা থেকে আকস্মিকভাবে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক লন্ডন মেয়র বরিস জনসন। এদিকে জাস্টিস সেক্রেটারী মাইকেল গভ, পেনসন সেক্রেটারী স্টিফেন ক্রাব, সাবেক সেক্রেটারী লিয়াম ফক্স, ব্যাংকার ও দলের ফান্ড ম্যানেজার এন্ড্রিয়া লিডসম আনুষ্ঠানিকভাবে টোরি পার্টির লিডারশীপ প্রতিযোগিতায় প্রার্থীতা নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সেন্ট্রাল লন্ডনে এক প্রেসকনফারেন্সে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন হোম সেক্রেটারী থেরেজা মে। প্রার্থীতা ঘোষণার সময় ক্রিস গেইলসহ দলের বিপুল সংখ্যক সিনিয়র এমপিরা উপস্থিত ছিলেন। হোম সেক্রেটারী বলেন, ব্রেক্সিট ইস ব্রেক্সিট। বৃটিশ জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের রায় দিয়েছে। পেছনের দরোজা দিয়ে ফের ইইউতে প্রবেশের সুযোগ নেই বলে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেন হোম সেক্রেটারী। থেরেজা মে আরো বলেন, নতুন প্রধানমন্ত্রীকে প্রথম দিন থেকেই শক্তিশালি অবস্থানে থেকে আলোচনার মাধ্যমে বৃটেনের স্বার্থ আদায়ের লক্ষ্য কাজ করতে হবে। আর এক্ষেত্রে তিনি নিজেই যোগ্য প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী হলে ব্রেক্সিট সমর্থকদের নিয়ে একটি শক্তিশালি মন্ত্রীপরিষদ গঠন করবেন বলেও ঘোষণা দেন হোম সেক্রেটারী।
এদিকে ব্রেক্সিট ক্যাম্পেইনার ও সাবেক লন্ডন মেয়র বরিস জনসন বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এক ঘোষণায় লিডারশীপ প্রতিযোগিতা থেকে সরে গেছেন বলে জানান। তবে শেষ মুহুর্তে সবাইকে অবাক করে ব্রেক্সিট ক্যাম্পেইনার এবং জাস্টিস সেক্রেটারী মাইকেল গভ নিজেও লিডারশীপ প্রার্থী হচ্ছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। মাইকেল গভ এবং বরিস জনসন, খুব ঘনিষ্টভাবে ব্রেক্সিট ক্যাম্পেইন করেছেন। ব্রেক্সিট জয়ী হয়ার পর থেকেই নিজে প্রার্থী না হলে লিডারশীপ প্রতিযোগিতায় বরিস জনসনকে সহযোগিতা করে যাবেন বলেই বারবার উল্লেখ করে আসছিলেন জাস্টিস সেক্রেটারী মাইকেল গভ। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নিজেই প্রার্থী হচ্ছেন বলে ঘোষণা দিয়ে বরিসকে বিশ্বাস করা টিক করা হবে না বলে মন্তব্য করেন।
জাস্টিস সেক্রেটারীর স্ত্রী সারাহ ভাইনের একটি ইমেইল বরিসের প্রতি মাইকেল গভের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সাবেক লন্ডন মেয়র বরিস জনসনকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর পরে মাইকেল গভের অবস্থান কি হবে, তা যেনো আগেই স্বচ্ছ করে নেন মাইকেল গভ, স্ত্রী সারাহ একটি ইমেইলে স্বামীকে এ বিষয়ে সতর্ক করে দেন। এই ইমেইলের পরে সুর পাল্টে ফেলেন মাইকেল গভ। বুধবার পর্যন্ত বরিস জনসনকে অত্যন্ত খোলামেলা সমর্থন দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে এসে বলেন, ব্রেক্সিটের বিশাল কাজ ডেলিভারি দেওয়ার মতো যোগ্যতা নেই বরিসের।
লিডারশীপ প্রতিযোগিতার দৌঁড়ে আরো যারা আসতে পারেন, তারা হলেন পেনসন সেক্রেটার স্টিফেন ক্রাব, সাবেক ডিফেন্স সেক্রেটারি ডক্টর লিয়াম ফক্স, এন্ড্রিয়া লিজম। তবে হেলথ সেক্রেটারী জেরেমি হান্ট প্রথমে লিডারশীপ প্রতিযোগিতায় আসার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়িয়েছেন।
উল্লেখ্য ২৩ জুনের রেফারেন্ডামে ফলাফলে ব্রেক্সিট জয়ের পর ২৪ জুন শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন পদত্যাগের ঘোষণা দেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী এসে ব্রেক্সিটের অনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করবেন। তার আগে কনজারভেটিভ পার্টির লিডার নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। নতুন লিডারই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। লিডার নির্বাচনের জন্যে নমিনেশন জমাদানের শেষ তারিখ ৩০ জুন। আগামী ২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া দলের শরতকালিন কনফারেন্সে নতুন লিডারের নাম ঘোষণা করা হবে। নতুন লিডার সেপ্টেম্বরের ৯ তারিখের ভেতরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ওই সময় পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন চাইলে ক্ষমতায় থাকতে পারেন আবার না চাইলে তিনি চলেও যেতে পারনে। এটা প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরুনের সম্পূর্ণ ইচ্ছার উপর নির্ভর করছে। এক্ষেত্রে পার্টি থেকে তাঁর উপর কোনো চাপ নেই।


Spread the love

Leave a Reply