আইসিটি প্রকল্পে শতকোটি টাকা লোপাট

Spread the love

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষার মান উন্নয়নে সারা দেশে প্রায় ৪৮ হাজার মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু ক্লাস প্রস্তুতের আগেই সিন্ডিকেট করে প্রায় শতকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। খোদ আওয়ামী লীগের আমলেই উঠে আসে ৯৬ কোটি টাকা দুর্নীতির তথ্য। এছাড়াও আরেকটি প্রকল্পের ৭৭ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পায় আরেকটি তদন্ত কমিটি। ১৬০টি উপজেলায় ডিজিটাল ক্লাসরুম শুরুর আগেই উঠিয়ে নেয়া হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

২০২০ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এই প্রকল্প শেষ হয় চলতি বছরের জুনে। প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও আদতে কোনো ধরনের সুবিধা পাননি শিক্ষার্থীরা। তারপরও যেসব প্রতিষ্ঠানে ক্লাসরুম নির্মাণ হয়েছে সেগুলোও হয়েছে নামকাওয়াস্তে।
প্রায় ৪৮ হাজার মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য আইসিটি প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা। প্রকল্পের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালেই দুর্নীতির নানা অভিযোগ উঠতে থাকে। অভিযোগের নথিতে দেখা যায় নানাবিধ খরচের মধ্যে শুধু ইন্টারনেট সংযোগের খরচ দেখানো হয়েছিল প্রায় দুই কোটি টাকা। অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সরকার বাধ্যতামূলক করে তোলে আইসিটি। কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই ২০১২ সালের জাতীয় শিক্ষাক্রমে আইসিটি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়। যার ফলে প্র্যাকটিক্যাল এই বিষয়টি হয়ে ওঠে মুখস্থ বিদ্যার বিষয়। পরের বছরই একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বাধ্যতামূলক করা হয়। দেশব্যাপী মাত্র ২৫৫টি পদে শিক্ষক ছিলেন। বাধ্যতামূলক করা হলেও আইসিটি’র পদ সৃজনই করা হয়নি। এই প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুনে শেষ হলেও উপকার-বঞ্চিত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রকল্পের আওতায় ছিল ১৩ ধরনের প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষণ পান পাঁচ লাখ ২১ হাজার ১১২ জন। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম দেখানো হয় ৩৬ হাজার ৮৪টি। যাতে থাকার কথা ডেস্কটপ কম্পিউটার, ইউপিএস, পেনড্রাইভ, স্মার্ট টিভি ও রাউটার। প্রকল্পের আওতায় ৬৬৮টি ট্রেনিংরুম ও কনফারেন্স রুম।

প্রকল্পের অধীনে নায়েম, টিটিসি, এইচএসটিটিআই, বিএমটিটিআই ২১টি করে ১০৫টি মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষ নির্মাণ করা হয়। পিআইইউ’তে দু’টি করে চারটি, নয়টি আঞ্চলিক অফিসে একটি করে, ৬৪ জেলা শিক্ষা অফিসে একটি করে ও ৪৯০টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে একটি করে মাল্টিমিডিয়া কনফারেন্স কক্ষ নির্মাণ করা হয়। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম সৃজনে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে দেয়া হয় একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার, স্মার্ট টিভি, ইউপিএস, ওয়্যারলেস রাউটার পেনড্রাইভ। মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষে দেয়া হয় একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার, স্মার্ট টিভি, ইউপিএস, ইন্টারনেট মডেম ও স্টেরিও স্পিকার। মাল্টিমিডিয়া কনফারেন্স রুমে দেয়া হয় একটি করে স্মার্ট টিভি ও স্টেরিও স্পিকার।

প্রকল্প শুরু হয় ২০১৬ সালে। যার আওতাধীন ছিল আইসিটি বিষয়ক ১৩ ধরনের প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন। যাতে প্রশিক্ষণ পান পাঁচ লাখ ২১ হাজার ১১২ জন। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম সৃজন করা হয় ৩৬ হাজার ৮৪টি। যাতে থাকার কথা ডেস্কটপ কম্পিউটার, ইউপিএস, পেনড্রাইভ, স্মার্ট টিভি ও রাউটার। প্রকল্পের আওতায় ৬৬৮টি ট্রেনিংরুম ও কনফারেন্স রুম সৃজন করা হয়। প্রকল্পের অধীনে নায়েম, টিটিসি, এইচএসটিটিআই, বিএমটিটিআই ২১টি করে ১০৫টি মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষ নির্মাণ করা হয়। পিআইইউ’তে দু’টি করে চারটি, নয়টি আঞ্চলিক অফিসে একটি করে, ৬৪ জেলা শিক্ষা অফিসে একটি করে ও ৪৯০টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে একটি করে মাল্টিমিডিয়া কনফারেন্স কক্ষ নির্মাণ করা হয়। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম সৃজনে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে দেয়া হয় একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার, স্মার্ট টিভি, ইউপিএস, ওয়্যারলেস রাউটার, পেনড্রাইভ। মাল্টিমিডিয়া প্রশিক্ষণ কক্ষে দেয়া হয় একটি করে ডেস্কটপ কম্পিউটার, স্মার্ট টিভি, ইউপিএস, ইন্টারনেট মডেম ও স্টেরিও স্পিকার। মাল্টিমিডিয়া কনফারেন্স রুমে দেয়া হয় একটি করে স্মার্ট টিভি ও স্টেরিও স্পিকার।

বিপুল অর্থ খরচ হলেও শিক্ষক, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও কম্পিউটার ল্যাবের অভাব অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে। আবার যেসব উপকরণ দেয়া হয় তার মান নিয়েও আছে প্রশ্ন। কয়েক বছর না যেতেই অনেক উপকরণ নষ্ট হয়ে গেছে কিংবা নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সর্বশেষ তথ্যে উঠে এসেছে এই প্রকল্পের দুরবস্থার চিত্র। সরকারি কলেজে আইসিটি বিষয়ে পদ সৃষ্টি হয়েছে ২৫৫টি। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ২০২৩’র তথ্যানুযায়ী দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ২৩ হাজার ৭৮৯টি। এর মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় (ষষ্ঠ থেকে দশম) ১৮ হাজার ৯৬৮টি এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ এক হাজার ৪৮০টি। কলেজ রয়েছে তিন হাজার ৩৪১টি। মাদ্রাসা রয়েছে নয় হাজার ২৫৯টি। এ সবের মধ্যে দেশের প্রায় সাড়ে আট হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। কম্পিউটার ল্যাব তৈরি হয়নি তিন হাজার ৮৫৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ব্যানবেইসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশের তিন হাজার ৮৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ নেই। এর মধ্যে বিদ্যালয় দুই হাজার ২২১টি, কলেজ ১৭৬টি ও মাদ্রাসা এক হাজার ৪৬১টি।

আইসিটি প্রশিক্ষণ নেয়া শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক। বিজ্ঞানের ক্লাসও নিতে হয়। এই পদে যেহেতু শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হয়নি তাই আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এই বিষয়ের জন্য একজন ডেডিকেটেড শিক্ষক প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষয়টি যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ তাই আমাদের ডেকে প্রশিক্ষণ না দিয়ে সেই বিষয়ের শিক্ষক প্রয়োজন।
সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ‘এটুআই’ প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্প চালু করা হয় ২০১১ সালে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের উদ্বোধন করেন। ওই প্রকল্পের আওতায় দেশে ২০ হাজার ৫০০ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় একটি করে কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানগুলোতে একটি ল্যাপটপ, ইন্টারনেট মডেম, স্ক্রিনসহ মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং সাউন্ড সিস্টেম প্রদান করা হয়েছিল। এরপর ২০১৫ সালে প্রকল্পটি শেষ হলে ‘আইসিটি ফেজ-২’ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১৬ সালে নেয়া ওই প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল দেশের ৩১ হাজার ৩৪০টি ডিজিটাল ক্লাসরুম চালু করা। এ প্রকল্পটি যাত্রা শুরু করে ২০১৭ সালে এবং প্রকল্পটি সরকারি খাতে স্থানান্তর করা হয় ২০২০ সালে। তখন মাউশি’র মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন উইংয়ের বাস্তবায়ন ও মনিটরিং এ দায়িত্ব পায়। তবে দেশের ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাল্টিমিডিয়া উপকরণের কোনো অস্তিত্ব বা হদিস পাওয়া যায়নি।

আরেকটি প্রকল্পে ১৬০ উপজেলার আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রকল্পে কাজ না করে ২০০ কোটি টাকা উঠিয়ে নেয়া হয়। এই অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। যার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তার ও তার নেতৃত্বে দুই সদস্য। কিন্তু এপরই তার বদলি হয়ে যাওয়ায় থমকে যায় সে তদন্ত।

অভিযোগে বলা হয়, এই প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে একটি প্রভাবশালী মহল শুরু থেকে চাতুরতার আশ্রয় গ্রহণ করে। তারা মন্ত্রণালয়ে প্রভাব খাটিয়ে অন্তত ৩ জন কর্মকর্তাকে ব্যানবেইজে বদলি করে নেন। এবং এই কর্মকর্তাদের দ্বারা বেআইনিভাবে পুরো কাজ নিষ্পন্ন করতে আগের তারিখের কাগজপত্র বানিয়ে টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরি করে এবং তারা সেই কাজ পায়। এক্ষেত্রে ২৪ জন উপ-ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করা যাবে মর্মেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এসব সাব-কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে কাজ না করেই অগ্রিম বাবদ প্রায় ২০০ কোটি টাকা উঠিয়ে নিয়েছে এই শক্তিশালী চক্র।

এতে আরও দেখা যায়, পতিত জমি না হওয়ায় সত্ত্বেও মাটি ভরাটের খরচ দেখানো জয়। কোরিয়ান  ঋণ ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে যৌথভাবে এই কাজটি করার কথা। থাইহান কনসোর্টিয়াম (তাইহান ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড, আই এল জে আই এন-ই এনসি কোম্পানি লিমিটেড এবং ইউবিঅন কোম্পানি লিমিটেড) এ কাজের প্রধান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল। পরে এই প্রতিষ্ঠান থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করে ২৪ জন সাব ঠিকাদার নিয়োগ করে ওই টাকা উঠিয়ে নেয়া হয়। অভিযোগে বলা হয়, দুর্নীতির চক্রে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জড়িত।

এই প্রকল্পে উপ-পরিচালকের দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, এগুলোর মান নিয়ে মূলত প্রশ্ন কখনই উঠানো হয়নি। এসব বিষয়ের সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই অনেক কিছু নেয়া হয়। এসব প্রকল্পে অর্থের ভাগবাটোয়ারা হতো উপর থেকে। এর ভাগ পেতেন সেসময়ের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কাজের জন্য নির্বাচিত ঠিকাদাররা ছিল দীপু মনির সিন্ডিকেটের লোক। ঠিকাদাররা অর্থ বরাদ্দ পেতেন তার থেকে ১৫ শতাংশ উপর থেকেই কেটে রাখা হতো। আবার এই অর্থ পাওয়ায় পর নানা পর্যায়ে ভাগবাটোয়ারা হতো।

তিনি আরও বলেন, এসব প্রজেক্টে ইলেকট্রিক যেসব সামগ্রী আসতো এসব শুধু নাম থাকা একটি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হতো। এসবের সঙ্গে সাবেক তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের সিন্ডিকেটও জড়িত ছিল। এসব নিম্নমানের পণ্য নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে কোনো আপত্তি না আসে সে ব্যবস্থাও করে রাখতো এই সিন্ডিকেট। দেখভালের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা এসব পণ্যের ভাগ নিয়ে আপত্তিপত্রে ভালো কথা লিখতেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব পণ্যের মান এতটাই খারাপ ছিল যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আপত্তি আসতে থাকে। আলোচনা হয় সংসদেও। বঞ্চিত ঠিকাদাররা দুদকে আবেদন করে তদন্তের ব্যবস্থা করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি অভ্যন্তরীণভাবে তিন মন্ত্রীর সিন্ডিকেট এগুলো ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করে। তবে শেষে সংসদে যখন আলোচনা হয় তখন, বেশ সমালোচনা হয়। তখন তদন্ত প্রতিবেদনে এসব দুর্নীতির চিত্র উঠে আসে। কিন্তু এরপরও জড়িত তিন মন্ত্রীর নাম সেখানে ছিল না।জানতে চাইলে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিগত সময়ে সকল প্রকল্পেই ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তারা শিক্ষাখাতকে দুর্বল করে দিয়েছে। আমরা এসব দুর্নীতি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করবো। সেইসঙ্গে নানা প্রকল্পের দুর্নীতি বের করার কাজও চলছে।


Spread the love

Leave a Reply