পদত্যাগ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো
পদত্যাগ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সোমবার তিনি প্রায় এক দশক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে পদত্যাগ করেন। দলীয় প্রধানের পদ ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পদও চলে গেছে তার। তবে অটোয়াতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, দল একজন নতুন নেতা নির্বাচন না করা পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশ একজন নতুন নেতা দাবি করে। একই সঙ্গে আগামী ২৪শে মার্চ পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত করার ঘোষণা দেন তিনি।
উল্লেখ্য, নিজের দলের ভিতরে এবং সর্বমহল থেকে পদত্যাগের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপ ছিল ট্রুডোর ওপর। এখন দলটির নেতা কে হবেন তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তার উত্তরসুরি হিসেবে দেখা হচ্ছে সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মার্ক কারনিকে।
ওদিকে কনজার্ভেটিভ দলের নেতা পিয়েরে পোইলিভরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণায় কোনো কিছুই পরিবর্তন হয়নি। তিনি এক্সে লিখেছেন, ট্রুডো ৯ বছর ধরে যা করেছেন তার সবটাই সমর্থন করেছেন লেবার দলের প্রতিটি এমপি এবং নেতা। এখন তারা লিবারেল পার্টিতে নতুন একটি মুখ এনে কানাডিয়ান ভোটারদের সঙ্গে ছল করার চেষ্টা করতে চাইছে এবং আরও চার বছর ক্ষমতায় থাকতে চাইছে ট্রুডোর মতো।
ওদিকে বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রতিনিধি সামিরা হোসেন বলছেন, ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের খবর রুদ্ধশ্বাসে কভার করছে। শীর্ষ স্থানীয় সংবাদ বিষয়ক সাইটগুলোর প্রথম পৃষ্ঠায় দেখানো হয়েছে যে ট্রুডোর রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। এর কারণ, তার সময়ে ভারত ও কানাডার মধ্যকার সম্পর্ক সব সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। কারণ, শিখ নেতা হরদিপ সিং নিজার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের দায়ী করে অভিযোগ করেছেন স্বয়ং জাস্টিন ট্রুডো। এ নিয়ে দুই দেশের কূটনীতিতে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এমনকি কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন পর্যন্ত হয়ে যায়। ভারত নিজার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে। ভারত বিশ্বাস করে, কানাডায় বসবাসকারী বিপুল পরিমাণ শিখ জনগোষ্ঠীর সহানুভূতি পাওয়ার জন্য তিনি এমন অভিযোগ করেছেন। ফলে তার রাজনৈতিক পরাজয়কে সরকার স্বাগত জানিয়েছে। ভারত সরকার মনে করছে কানাডায় একজন নতুন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নত হবে।