প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন: প্রশ্নোত্তর পর্বে চাটুকার সাংবাদিকরা যা বললেন…
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃরামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে শনিবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। এই পর্বে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে চাটুকার সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে গিয়ে আওয়ামীলীগের দলীয় কর্মী হয়ে প্রশ্ন শুরু করেন । প্রশ্নগুলো এমন ছিল যেন প্রশ্ন না রীতিমতো গল্প । চাটুকার এসকল বড় বড় সাংবাদিকরা যা বলেছেন, তা ক্রমানুযায়ী আমাদের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
মোজাম্মেল বাবু:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এরা কেউ এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার না। আমার বন্ধু হাছান মাহমুদ ছাড়া আমিই বোধহয় একমাত্র কোয়ালিফাইড এনভায়রনমেন্টালিস্ট। তাই প্রশ্নটা প্রথমে আমি করছি। বুয়েটের যারা দাবি করেন, তারা কেউ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, কেউ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, যাদের আমরা মিডিয়ায় বিশেষ বিশেষ পরিবেশবিদ বলি। আপনার কয়েকটি শব্দের সঙ্গে নতুন করে পরিচিত হওয়া প্রয়োজন। পরিবেশবাদী এক জিনিস, পরিবেশ-বাণিজ্য আরেক জিনিস। পরিবেশ নিয়ে যারা আন্দোলন করেন, সেটা একটা বাণিজ্য। পরিবেশ রাজনীতি আরেকটা জিনিস। তারা পরিবেশ নিয়ে রাজনীতি করে। পরিবেশ নিয়ে কাজ করে যারা ডলারে বেঁচে থাকে, তারা পরিবেশজীবী। পরিবেশ রাজনীতিবিদ এবং পরিবেশবিদদের নিয়ে চিন্তা করবেন না। তেলভিত্তিক কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে আপনি যখন সাময়িক সমস্যার সমাধান করছিলেন, তখন তারা বলবে কেন কয়লা পুড়ছেন না। কয়লা পুড়লে সাশ্রয় হবে। আপনি কয়লা তুলতে যাবেন, বলবে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। বলবে, এমন জায়গায় করেন, যেখানে মানুষ কম। আপনি মানুষ কমের জায়গায় সিলেক্ট করলেন, তখন বলবে সুন্দরবনের এই কাছে, সেই কাছে। আপনি বিশ্বাস করেন আর নাই করেন, আইসিস তৈরি করেছে ইহুদিরা। সে রকম এই সব পরিবেশবাদি আন্দোলনের পেছনে কাজ করে পেট্রোল ডলার। এই সব পেট্রোল বাণিজ্য অব্যাহত রাখার জন্যই কয়লার বিরোধিতা। আমাদের এগুলো শোনার কোনও সময় নেই। আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, ২০৩০-৪০ সাল পর্যন্ত ফুয়েল ডাইভারশনের মাধ্যমে ৫০ ভাগ সাশ্রয়ী কয়লা, ১০ শতাংশ সোলার এবং ২০ শতাংশ, ২৫ শতাংশ গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে যুগপোযোগী পরিকল্পনা আপনি করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ। আপনার দ্বারাই সম্ভব জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আমি নসরুল হামিদের (বিদ্যুৎ, খনিজ ও জ্বালানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ) কাছে সাংবাদিক হিসেবে, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) লেখা একটা চিরকূট দেখে বিস্মিত হয়েছি। আপনি লিখেছেন, সোলার বিদ্যুৎ করা হবে, তবে এমন জমিতে করা যাবে না, যেখানে ফসল হয়। যদি করাও হয়, তবে এটুকু গ্যাপ-গ্যাপ দিয়ে করা হয়, যেন কিছু আলো আর কোনও না কোনও ফলন হয়। তো এই রকম একজন নেতৃত্বকে যখন পরিবেশের কথা বলা হয়, সেটা সত্যিই মার চেয়ে মাসির দরদ বেশি। আমার শুধু একটাই প্রশ্ন পৃথিবীতে সব প্রযুক্তি আছে। আমাদের খালেদা জিয়া লন্ডনে গিয়ে যেই পানি খান সেটা হচ্ছে স্যুয়ারেজের পানি। স্যুয়ারেজের পানিকে রিসাইক্লিন করে লন্ডনের সিটি করপোরেশন পানের উপযুক্ত করে দিচ্ছে, এক শ শতাংশ গ্যারান্টিসহ।
পশুর নদীর পানি রিসাইক্লিন থেকে শুরু করে সব কিছুই সম্ভব। সব প্রযুক্তি আছে, শুধু আমার একটাই প্রশ্ন এই সমস্ত যেই ইঞ্জিনিয়ারিং সেটা আপনি নিজে মনিটরিং করবেন কিনা? কারণ আমাদের আস্থা একটু কম। আপনি একটি পৃথক সংস্থা করবেন। পরিবেশ, খাদ্য, জ্বালানি সব কিছু দেখার জন্য একটা বডি প্রয়োজন, সব কিছু একবারে দেখার জন্য। পৃথকভাবে দেখা সম্ভব না। আমি আপনার নেতৃত্বে এই রকম একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রস্তাব দিচ্ছি, যারা এই তিনটা বিষয়ের নিরাপত্তার সমন্বয় করবে। এটুকুই আমাদের প্রস্তাব।
মোল্লা আমজাদ হোসেন:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সঙ্গে কাজ করি। গত দুই দশক আমি জ্বালানি নিয়ে কাজ করছি। আপনাকে ধন্যবাদ, রামপাল ইস্যু বিশেষ করে কয়লা নিয়ে যেই আলোচনা হচ্ছে এজন্য। আমাদের এখানে পরিবেশবাদী ও বাম ধরাণার রাজনীতিবিদরা একাকার হয়ে গেছেন। যেকোনও কিছুতেই তারা বিরোধিতা করেন। বাবু ভাই যথাযথই পয়েন্ট আউট করেছেন। যে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার সময়ও তারা একই রকমের বিরোধিতা করেছিলেন। তারা বলছেন রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে, অন্য কোথাও হোক। তবে বাঁশখালীতে যখন কয়লাবিদ্যুৎ করা হচ্ছে আবার তখনও তারা বিরোধিতা করছেন। আমি নিশ্চিত তাদের উদ্দেশ্য অর্ধসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের জ্বালানিখাতের উন্নতি, অগ্রগতি এটা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। আজকে যে সস্তায় জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে, তার সূত্রপাত ঘটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। নইলে আজকে আমাদের গ্যাস আমদানি করে বা বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে কিনে বিদ্যুৎখাত চালাতে হতো। এমনিতেই এই একটি গোষ্ঠীর মিথ্যাচারের কারণে আমরা নিজস্ব উচ্চমানের কয়লা ব্যবহার করতে ব্যর্থ হচ্ছি। এখন পর্যন্ত করতে পারিনি। উপরন্তু আমরা যখন আমদানি করা কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার উদ্যোগ নিয়েছি, তখন এই কমিউনিটি এটার বিরোধিতা করছে। যার কারণে এতদিন ধরে আমাদের মনে হচ্ছিল সরকারের মধ্যেও বিভ্রান্তি রয়েছে। কারণ সরকারের মধ্যে এমন দুই একজন মন্ত্রী আছেন, যাদের দলের লোকজনকেও আমরা প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখি। তখনই এই বিভ্রান্তি তৈরি হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সুনির্দিষ্ট কথা বলার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমার একটা ছোট্ট প্রশ্ন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না। এটা আমি আমার বিশ্বাস থেকে, হৃদয় থেকে নিশ্চিত। তবে সুন্দরবন অঞ্চলে শিল্পায়নের যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে, যদি নদীর দুই ধারে জমি দখল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয়, সেটা সুন্দরবনের ক্ষতি করতে পারে। পরিকল্পিত শিল্পায়ন ও দূষণমুক্ত শিল্পায়নে আপনার সরকার কী করবে জানতে চাই?
গোলাম সারওয়ার:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি সমকালে কাজ করি। মোজাম্মেল বাবুর অনেক তীর্যক মন্তব্য উপভোগ করলাম। যেমন আপনি করেছেন। এতেই বোঝা যায়, আসলে প্রশ্ন করার অবকাশ খুব কম আছে। কিন্তু আপনি সুবিস্তারে এই রামপাল প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, যে প্রশ্নগুলো আমাদের মনে ছিল এবং আছে, তার প্রত্যেকটির জবাব আপনি দিয়েছেন। সুতরাং, আপনি অনেক সময় বলেন, প্রশ্ন করেন, প্রশ্ন করেন। কিন্তু প্রশ্ন করার তেমন কিছুই নেই। আমরা আপনার সঙ্গে কিছু যোগ করতে পারি। সে ক্ষেত্রে এটি বলি যে, আপনি আজ যে কথাগুলো বললেন, আমার কেন জানি মনে হয়, আরও আগে যদি এগুলো বলা হতো, তাহলে এই পর্যায়ে তারা যেতে পারত না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি বলছি, সারা দেশে ব্যাপকভাবে প্রচার করা। কালকে সংবাদপত্রে ছাপা হবে, আজকে টেলিভিশনে যাচ্ছে, কিন্তু সারাদেশে এটা চলা দরকার। যারা এর বিরুদ্ধে কাজ করছে, তারা কিন্তু যথেষ্ট শক্তিশালী। আর আমি একটা কথা বলতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে, আপনার দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি দেশের ক্ষতি করছেন, দেশকে বিক্রি করছেন। কিন্তু যিনি দেশের জন্য জীবন দিতে পারেন, তাকে নিয়ে এই কথা। আমি মনে করি এর জোরালো প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বিদ্যুতের কথা বলেছেন। এই বিএনপি আমলে আমরা বিদ্যুতের কথা জানি। বিদ্যুতের অভাবে ঘুমাতে পারতাম না। এখন আমরা বিদ্যুতবিলাসী হয়ে পড়েছি। বিদ্যুৎ গেলে বিদ্যুৎ গেল কেন, এরকম বলাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরেকটি কথা আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলি, বেশ কয়েক বছর আগে সাতজন সাংবাদিক ভারত সফরে গিয়েছিলাম। আমাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমরা সারাদিন থেকেছিলাম। চমৎকার একটি গ্রাম। দেখে মনে হয় ছবির মতো সাজানো। সেখানে অ্যাশ ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থা আছে। শত-শত ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে, অ্যাশ নেওয়ার জন্য। আমাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলেছি। কি উজ্জ্বল! কি হাসিখুশি ছেলেমেয়ে! দিল্লি থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে পারে; আর রামপালে হতে পারবে না, এ কথা আমরা মানতে রাজি নই। আরেকটা ব্যাপার আমি বলি, শ্রীলঙ্কায় এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র করার পর পরিবেশবাদীরা আন্দোলন করেছিল। তখন একটা প্রস্তাব দিয়েছিল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। সেটি হচ্ছে, এলএনজির মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা সম্ভব কিনা। তারা অনেক চিন্তা ভাবনা করে দেখেছে, এটা আর্থিকভাবে কিছুতেই সম্ভব নয়। অনেক বেশি খরচ হবে। তারা এটা নাকচ করে দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিদ্যুৎকেন্দ্র ওখানেই হবে, ওখানেই করতে হবে। দেশের স্বার্থের চেয়ে আমরা বিদেশের স্বার্থ কিছুতেই মানতে পারি না। আমরা আপনার সঙ্গে আছি।
মনজুরুল আহসান বুলবুল:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি যোগাযোগ-বিজ্ঞানের ছাত্র। যোগাযোগ-বিজ্ঞানে বলা হয়, অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় সঠিক তথ্য দিয়ে। রামপাল নিয়ে যেসব তথ্য বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তার বিপরীতে আপনি যে তথ্য দিলেন, আমরা নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাস করি তা সঠিক তথ্য। এই লড়াইটি চালু রাখতে হবে; শুধু আজকের প্রেস কনফারেন্স নয়, সব জায়গাতেই। আমি শুধুমাত্র একটি জায়গায় বলতে চাই, আজকেও আমরা একটি পত্রিকায় খবর দেখিছি যে, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রায় ১৭৭টি অর্গানাইজেশন ভারতের এক্সিম ব্যাংককে রিকোয়েস্ট করেছে, তারা যেন এই প্রকল্পটিতে অর্থায়ন না করে। এবং আপনি আপনার বক্তব্যে বলেছেন যে, এক্সিম ব্যাংক প্রায় ৭০ পারসেন্ট বিনিয়োগ করবে। এখন ১৭৭টি অর্গানাইজেশনের চাপে এক্সিম ব্যাংক যদি কোনও ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তাহলে রামপাল প্রসঙ্গে আমাদের কোনও বিকল্প চিন্তা আছে কিনা? এটা হলো এক।
আরেকটি হলো, আপনার প্রেসসচিব বলেছেন যে, এই বিষয় (রামপাল) ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। আপনি যদি অনুমতি দেন, তাহলে রামপালের বাইরে একটি বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাই। (এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেয়ে) আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বাংলাদেশে আসছেন। গত কয়েক বছর ধরে আমরা ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের নানা বিষয়ের ওঠানামা দেখেছি। সেটা কখনও জিএসপি নিয়ে, কখনও গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে, কখনও পদ্মা সেতু নিয়ে। আমি শুধু জানতে চাচ্ছি, ওবামা প্রশাসনের শেষ মুহূর্তে জন কেরি কি বিশেষ কোনও বার্তা নিয়ে আসছেন? কৌশলগত কোনও বিষয়ে ঐকমত্যের ব্যাপার আছে?
রেজওয়ানুল হক রাজা:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি মাছরাঙা টেলিভিশনে কাজ করি। পার্লামেন্ট সেশন কাভার করতে গিয়ে একটি টার্ম আপনাদের কাছ থেকে শিখেছি। সেটা হচ্ছে, বিএনপি রিসেন্টলি এই ইস্যুতে যুক্ত হয়েছে। গত পরশুদিন তারা ব্রিফিং করেছে। তাদের ওই বক্তব্যের মধ্যে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে। আমি তা বাদ দিচ্ছি। বাট রামপাল নিয়ে কয়েক বছর ধরে আন্দোলন হচ্ছে। এবং আজ আপনি অনেক তথ্য-উপাত্ত দিয়েছেন। তারা যখন ব্রিফিং করেন, নানা তথ্য-উপাত্ত দেন। কোনটি সত্য, কোনটি মিথ্যা, আমাদের মতো সাধারণ মানুষরা তা অতোটা বুঝতে পারি না। আমি শুধু একটা জিনিস জানতে চাই যে, জঙ্গিবাদের কারণে আমরা দেশের মধ্যে একটা অস্বস্তির মধ্যে আছি। এই মুহূর্তে এই রামপাল ইস্যু নিয়ে যদি একটা গোলযোগ হয়, সেটি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক হবে। যারা আন্দোলন করছেন, তাদের মধ্যে আপনার একজন বন্ধুও আছেন; এটা সম্ভব কিনা—তাদের সঙ্গে বসে একটা আলোচনা করে বিষয়টি রিকনসিডার করার সুযোগ আছে কিনা?
শাবান মাহমুদ:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকাতে কাজ করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এই দেশে যখন স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছিল আপনার বাবার নেতৃত্বে, তখন একটি অংশ আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। আবার আপনি যখন ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে বারবার কাজ করছেন, তখন আমরা দেখেছি, ওই অংশেরই একটা অংশ, যারা উত্তরাধিকার সূত্রে বংশ পরস্পরায় তারা বেড়ে উঠেছে, তারা আপনার বিরোধিতা করে আসছে। এর ফলে আমরা দেখি, বাংলাদেশের উন্নয়নের বিপক্ষে একটি গ্রুপ বরাবরই সক্রিয় রয়েছে। তার ভেতর দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারপ্রধান হিসেবে কেবল আপনার কাছে আমি জানতে চাইব, এই অংশটি দেশ ও রাষ্ট্রের জন্য কতটা ক্ষতিকর। তারা যদি ক্ষতিকর হয়ে থাকে, দেশপ্রেমী জনগণ তাদের কিভাবে বয়কট করতে পারে? সরকারপ্রধান হিসেবে, উন্নয়নের নেত্রী হিসেবে, দেশের একজন গণমানুষের নেত্রী হিসেবে আপনি কী মনে করেন?
আনিস আলমগীর:
আমি এশিয়ান টিভিতে কাজ করি। আমার প্রশ্নটা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী রাজনীতি অনুপস্থিত। আমি দেখছিলাম, রামপাল ইস্যুতে আন্দোলন করছিল বাম রাজনৈতিক দলগুলো। তো হঠাৎ করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো যুক্ত হওয়াতে আপনি কি মনে করেন, ভারতবিরোধী রাজনীতি বাংলাদেশে একটা ট্রামকার্ড হিসেবে ইউজ হবে? আর আমার সেকেন্ড কোশ্চেন হচ্ছে, ব্যক্তিগতভাবে রামপাল নিয়ে আমার নিউট্রাল পজিশন ছিল। আর আজ আপনার প্রেজেন্টেশনের পরে আমার মনে হচ্ছে যে, বিদ্যুৎ প্রকল্প যে দরকার, এটা নিয়ে আমার আর কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু একটা বিষয় ক্লিয়ার হইনি আমি। টাকাটা আমরা দিচ্ছি। কিন্তু বিদ্যুৎ ভাগের ক্ষেত্রে ফিফটি-ফিফটি কেন? এটা কিন্তু সোস্যাল মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচার আছে, বিদ্যুৎটা অর্ধেক নিয়ে যাবে কেন?
শেখ নাজমুল হক সৈকত:
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমি এটিএন বাংলায় কাজ করি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, রামপাল নিয়ে বাম দলগুলো বিরোধিতা করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিএনপি। তাদের এই বিরোধিতার কারণে কি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ব্যহত হবে কিনা? আরেকটা প্রশ্ন হচ্ছে, আজকে এক মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি নিহত হয়েছে, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য জানতে চাচ্ছি।
একাত্তর টিভির বাবু”র প্রশ্ন:
পরিবেশ নিয়ে যারা কাজ করে এবং ডলারে পেমেন্ট পায় তারা পরিবেশজীবী। এইসব পরিবেশবাদী আন্দোলনের পেছনে কাজ করে পেট্রোডলার। আমাদের এগুলো শোনার সুযোগ নাই।
এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার-এর আমজাদ ভাই’র প্রশ্ন:
‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে বাংলাদেশের জ্বালানিখাতের অগ্রগতি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না, এটা আমার অন্তরের বিশ্বাস।
মাছরাঙা টেলিভিশনের রেজোয়ানের প্রশ্ন:
ভারতের এক্সিম ব্যাংক যদি এই (রামপাল) প্রকল্পে অর্থায়ন না করে তবে বিকল্প চিন্তা আছে কি না?” (একুশে টিভির সিইও বুলবুল ভাই’র প্রশ্ন)
5 ”সুন্দরবন রক্ষার জাতীয় কমিটি একটি আছে, তাদের সঙ্গে বসে এই বিষয়টি রিকনসিডার করার কোনো ইচ্ছা আপনার আছে কি না?”