ঢাকায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধঃ বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের তালা, অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া

Spread the love

141231154232_bd_khaleda_presser_640x360_focusbanglaনাজমিন রিয়া,বাংলাদেশ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে কার্যালয়ে ঢুকে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। রাত পৌনে ১টার দিকে কার্যালয়ে থাকা ৮ জনকে বের করে দেয় তারা। পরে কার্যালয়ে তালা দিয়ে পুলিশ চাবি নিয়ে যায়।এদিকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সব ধরণের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।রোববার বিকেল ৫ টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ডিএমপি।এরআগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আসতে গেলে তার পথ আটকায় পুলিশ। কার্যালয়ের ফটকের সামনে একটি ট্রাক আড়াআড়িভাবে রেখে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়। এর ১৫ মিনিট পর খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের বাসায় যাওয়ার জন্য ব্যারিকেড সরাতে বললে তা না হওয়ায় কিছুক্ষণ গাড়িতে অপেক্ষার করে আবার কার্যালয়ে ফিরে যান। রাতে সেখানেই অবস্থান করেন তিনি।৫ জানুয়ারির সমাবেশ নিয়ে সরকার ও বিএনপির মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ। গভীর রাতে ওই এলাকায় মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য।পুলিশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই অবস্থায় খালেদা জিয়ার গাড়ি বেরোতে দেওয়া হবে না। পুলিশ সদস্য ছাড়াও মহিলা পুলিশের একটি দল এবং গোয়েন্দা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। এর বাইরে ৭টি পুলিশ পিকআপ ওই সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে।গুলশানের কার্যালয় থেকে খালেদা জিয়ার পথ আটকানোর পাশাপাশি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসার সামনেও অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। রাতে তার বাসায় তল্লাশিও হয়েছে। তবে সে সময় বাসায় ছিলেন না ফখরুল। রোববার ভোর রাত ৩টার দিকে তার বাসার সামনে অবস্থান নেয় পুলিশ। মির্জা ফখরুল কোথায় আছেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।এদিকে রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান দেখা করতে গেলে সেখানে অবস্থানরত পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দেয়।

36891_0000প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বি. চৌধুরী এ মেজর মান্নান খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে এলে তাদের নিয়ে টানা-হেঁচড়া শুরু হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ১০ জনকে আটক করেছে। গত ৫ জানুয়ারি বিএনপিবিহীন দশম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। বিএনপি ওই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছে। ওই দিবসের বছরপূর্তির দিনে দলটি ঢাকায় সমাবেশ করতে চাইলেও আগের দিন শনিবার পর্যন্ত পুলিশের অনুমতি পায়নি। এ বিষয়ে পুলিশের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি। সকালে দ্বিতীয় দফায় ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বিফল হন বিএনপি নেতারা। তাদের জানানো হয়, ডিএমপি কমিশনার গাজীপুরে ইজতেমার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে সময় দিতে পারছেন না।
BNP-Officeএদিকে ওই দিনকে ‘সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসেবে উদযাপনের ঘোষণা দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি ইতোমধ্যে হুমকি দিয়েছে, অনুমতি না পেলেও সমাবেশ করবে তারা। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন ১৪ দলের নেতারাও তাদের রাজপথে মোকাবেলার হুমকি দিয়েছে।
বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, এটা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তারা কী করবে, সেটা তো আমাদের কোনো ব্যাপার নয়। আমাদের কথা হলো, যেই আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে চেষ্টা করবে, সেখানেই আমরা সচেষ্ট হব, নাশকতা করার প্রয়াস হলে আমরা তা প্রতিহত করব।
শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে বাধা না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি একটি জিনিস স্পষ্ট করে বলতে চাইÑ রাজনৈতিক দল তাদের কর্মসূচি দেবে। সেগুলো যদি অন্য লোকদের ডিস্টার্ব করে কিংবা জ্বালাও-পোড়াওয়ের ঘটনা ঘটে, নাশকতা হয়, সেখানে আমাদের কিছু করণীয় আছে।
এছাড়া রাজধানীতে রোববার বিকাল ৫টা থেকে সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাক‍া মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। রোববার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন ডিএমপি কমিশনার। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। ডিএমপির মিডিয়া উইংয়ের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


Spread the love

Leave a Reply