লিবিয়াকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রে’ পরিণত করার দায় ক্যামেরনের
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃব্রিটেনের সংসদের এক রিপোর্টে ২০১১ সালে লিবিয়ায় হস্তক্ষেপের জন্য ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে।
পার্লামেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি বলছে, বেনগাজির বেসামরিক জনগণকে রক্ষার জন্য বিমান হামলা চালানোর পর ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি রাজনৈতিক স্বার্থে লিবিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য উদ্বুদ্ধ হন।
অন্যদিকে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিবিয়ার প্রশ্নে একটি সংগতিপূর্ণ নীতিমালা তৈরি করতে ব্যর্থ হন বলে সংসদীয় কমিটির এই রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে।
বেনগাজি শহরে বিদ্রোহ দমনে গাদাফির বাহিনী অগ্রসর হওয়ার পরপরই ব্রিটেন এবং ফ্রান্স লিবিয়ায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে। সেটা ২০১১ সালের মার্চ মাসের কথা।
তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট সারকোজি এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের যুক্তি ছিলো, বেনগাজিতে মুয়াম্মার গাদাফির সরকার গণহত্যা চালাতে পারে।
ব্রিটিশ-ফরাসি সামরিক অভিযানে কিছুদিনের মধ্যেই গাদাফি সরকারের পতন হয়।
ঐ ঘটনার পাঁচ বছর পর ব্রিটিশ সংসদের এই কমিটি এখন তদন্ত করে বলছে, বেনগাজির মানুষের ওপর হুমকির যে যুক্তি তখন দেয়া হয়েছিলো তা ছিল অতিরঞ্জিত।
গোয়েন্দারা পরিস্থিতির সঠিক চিত্র তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছিল বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ক্রিসপিন ব্লান্ট মন্তব্য করেন, লিবিয়ায় সামরিক অভিযান নিয়ে ফ্রান্সের অতি-উৎসাহী সঙ্গী হয়েছিল ব্রিটেন।
”বেনগাজির মানুষের ওপর হুমকির যেসব প্রামাণ্য তথ্য দেয়া হয়েছিলো তা ছিল অতিরঞ্জিত। উপরন্তু বেনগাজির মানুষদের রক্ষার মিশন পরে বদলে গিয়ে তা লিবিয়ায় সরকার বদলের মিশনে পরিণত হয়। কিন্তু অভিযানের শুরুতে সেই উদ্দেশ্য ছিলোনা।”
এমপিদের রিপোর্ট বলছে, ত্রিপলিতে ক্ষমতা বদল হলে তার পরিণতি কি হবে, কি করতে হবে – সে ব্যাপারে তেমন কোনো পরিকল্পনা বা প্রস্তুতি ব্রিটেন বা ফ্রান্সের ছিলোনা ।
ইসলামী জঙ্গি এবং উপজাতি গোষ্ঠীগুলো লিবিয়ায় রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগ কিভাবে এবং কতটা নেবে তা নিয়েও পরিষ্কার কোনো ধারণা ছিলোনা।
তদন্ত কমিটি এই পরিস্থিতির জন্য প্রধানত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্যামরন দায়ী করেছে।
তাদের কথা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বার্থের যুক্তিতে মি. ক্যামেরন লিবিয়ায় সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত সংসদকে কার্যত পাশ কাটিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মাধ্যমে নিয়েছিলেন।
বিবিসির সংবাদদাতা জেমস র্যান্ডেল বলছেন, এমপিদের এই তদন্ত রিপোর্টের প্রধান বার্তাটি হলো: ইরাকের অভিজ্ঞতা থেকে মি. ক্যামেরন কোন শিক্ষা নেননি।