বাবা , তোমাকে বড্ড মিস করছি ,বালিশের নিচে চিঠি রেখে যেও …
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ বাবা কেমন আছ? তোমাকে বড্ড মিস করছি, এ কথা জানাতেই চিঠি লিখছি তোমায়। আমি নিশ্চিত, তুমি জানো আমি কীভাবে বড় হচ্ছি। কারণ মা খুব অসুস্থ আর গত সোমবার থেকে আমার কানও বন্ধ হয়ে আছে। কাল আমরা এখান থেকে চলে যাচ্ছি। এ সময়টা আমি স্কুল ও তোমাকে খুউব মিস করব। আমি জানি, তুমি স্বর্গে আছ। সেখানে কী তুমি ভালো আছ, বাবা! ওহ আর একটা কথা, এখান থেকে যাওয়ার আগে আমি একটা স্বপ্ন ও বড়দিনের উপহারের কথা বলি, শোনো। স্বপ্নটা হলো, বাবা অবশ্যই চিরকুটে কিছু একটা লিখে আমার বালিশের নিচে রেখে যাবে। চিঠি রেখে যেও বাবা।’
বাবার কাছে হৃদয় নিংড়ানো ভাঙা ভাঙা হাতের লেখা এই চিঠি স্কটল্যান্ডের এক ছোট্ট ছেলের। তার বাবা বেঁচে নেই। সামনে বড়দিনের ছুটি। স্কুল ছুটি হবে। অসুস্থ মা এই ছুটিতে তাকে নিয়ে অন্য কোথাও যাবেন। বাবা থাকলে হয়তো বড়দিনের উপহার কিনে দিতেন তাকে। কিন্তু তা তো হবে না। এসব ভেবে হয়তো বুকের ভেতর যন্ত্রণা হয় শিশুটির। সেই যন্ত্রণা কিছুটা কমাতে বাবার উদ্দেশে চিঠি লেখে সে। সেখানে সে তার ভালো-মন্দের কথা জানায়। জানায়, বড়দিনে তার কী কী উপহার চাই। উপহার আসুক না আসুক, সে খুব করে চায়, বড়দিনে অন্তত স্বপ্নে যেন বাবা তার বালিশের নিচে একটি চিঠি লিখে যায়। এসব কথা লিখে আকাশের ঠিকানায় মানে—বেলুনে ওই চিঠি বেঁধে উড়িয়ে দিয়েছে সে। সেই চিঠি উড়তে উড়তে গিয়ে পড়েছে দেশটির ডানফার্মলাইন শহরের টাউনহিল গ্রামের একটি মাঠে।
দ্য সানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্টুয়ার্ট ম্যাককোল নামের একজন আলোকচিত্রী বেলুনসহ এই চিঠিটি কুড়িয়ে পান। চিঠিটি পড়ে তাঁর হৃদয় ভেঙে যায়। চিঠিটি তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। আর এতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই ওই শিশুটিকে বড়দিনের উপহার দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু চিঠি পেলেও ওই শিশুটির খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
৩০ বছর বয়সী আলোকচিত্রী স্টুয়ার্ট ম্যাককোল বলেন, ‘চিঠিটি পাওয়ার পর আমি অনেক কেঁদেছি। এটা খুবই হৃদয়বিদারক। এই চিঠির আবেগ আমাকে ছুঁয়ে গেছে। চিঠিটি নিয়ে বাসায় আসার পরও আমি ওটার চিন্তায় বিভোর ছিলাম। কেউ না কেউ এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারবে ভেবে চিঠিটি আমি ফেসবুকে পোস্ট করি।’
চিঠির শেষে তারিখ দেওয়া ১ ডিসেম্বর। রং পেনসিল দিয়ে চিঠির মাঝে অনেকগুলো হৃদয় চিহ্ন আঁকা। আছে হাসির চিহ্নও। শুরুতে রয়েছে বড় করে লেখা ‘হাই ড্যাড’।
ছোট্ট হাতে লেখা ওই চিঠিতে শিশুটি তার বাবাকে আরও বলেছে, ‘এখানে আমার বড়দিনে কী উপহার চাই তা লিখে দিলাম। উপহারের তালিকা: ফুটবল খেলার বুট/স্টুডস, অ্যাস্ট্রোস, ফুটবলের রিবাউন্ডার নেট, নতুন প্রিমিয়ার লিগের বল, রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি, হাফ প্যান্ট ও রুবিক’স কিউব। বিদায়। ভালো থেকো, বাবা। তোমাকে অনেক ভালোবাসি।’