আজ শুভ বড়দিন: ঘরহারা শিশুদের দুর্দশার মধ্য দিয়ে যিশুকে স্মরণ

Spread the love

birth-of-jesusবাংলা সংলাপ ডেস্কঃখ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন আজ। এই পবিত্র দিনে খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথেলহেমের এক আস্তাবলে জন্ম নিয়েছিলেন। খ্রিষ্টানেরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য যিশু জন্ম নিয়েছিলেন।

খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উপলক্ষে ইতালির রোমে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের ওই প্রার্থনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। যিশুর শরণার্থী জীবনের কথা স্মরণ করে দিয়েছেন তিনি। বিশ্বকে আহ্বান জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধ-সংঘাতে ঘরহারা মানুষদের প্রতি মানবিক হতে। শরণার্থী শিশুদের দুর্দশার মধ্য দিয়ে যিশুকে স্মরণের আহ্বান জানান তিনি। দাবি করেন, শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় ইউরোপের আরও বেশি কিছু করার আছে।

ভ্যাটিকানের প্রার্থনায় বেশ কয়েকজন কার্ডিনাল, বিশপসহ প্রায় এক হাজার মানুষ সমবেত হন। সেখানে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, এই সমৃদ্ধ বিশ্বে বড়দিনের বার্তা হলো মানবতা, সরলতা এবং গূঢ় রহস্যের বার্তা। তিনি আরও বলেন, ‘সদ্যোজাত যিশু কারও দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন, আবার অনেকেই তাকে বিভেদহীনভাবে স্বাগত জানিয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি শরণার্থী শিশুদের জীবন বাস্তবতায় নেমে আসা ভয়াবহ দুর্দশার কথা স্মরণ করেন।

শরণার্থী শিশুদের দুর্দশার মধ্য দিয়ে যিশুকে উপলব্ধি করার তাগিদ দেন পোপ। তিনি বলেন, ‘আজও সেই বিভেদহীনতা রয়েছে, যখন বড়দিন এমন এক ভোজসভায় পরিণত হয়েছে, যেখানে যিশু নন, আমরাই তার প্রধান চরিত্র। যখন বাণিজ্যের আলো ঈশ্বরকে ছায়ায় পরিণত করেছে আর আমরা কেবল উপহার পাওয়া ব্যাপারে উদ্বিগ্ন, কিন্তু প্রান্তিক মানুষদের প্রশ্নে থাকি নীরব।’

জেরুজালেমের ছোট্ট শহরতলী বেথলহামে জন্ম নেওয়া যিশুও শরণার্থী ছিলেন। স্বৈরাচারী শাসকের হাত থেকে বাঁচতে রাতের আঁধারে মায়ের হাত ধরে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়তে হয়েছিল তাকে। সেখানকার রাজা হেরোদের ভয়ে শরণার্থী জীবন বেছে নিয়ে মিসরে যেতে হয়েছিল যিশুকে। যুদ্ধ-সংঘাতে ঘরহারা মানুষদের কথা বলতে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিস যিশুর সেই শরণার্থী জীবনের কথা মনে করিয়ে দেন।

সিরীয় যুদ্ধ, গুলিবিদ্ধ শরণার্থী নৌকা এব্ং জন্মের আগেই মাতৃগর্ভে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া যুদ্ধ-কবলিত শিশুদের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ধন-সম্পদের প্রতি আসক্তি ইশ্বরকে আড়াল করে রেখেছে। অন্ধ করে রেখেছে অনেক মানুষকে, যে কারণে তারা ক্ষুধা-শরণার্থী জীবনের যন্ত্রণা আর যুদ্ধে যারা ক্লান্ত তাদের দিকে চোখ পড়ে না। তিনি বলেন, ‘ঠিক পথে বড়দিনের উৎসব পালন করতে চাইলে আমাদের এইসব ব্যাপারে প্রতি মনোযোগী হতে হবে।’

 


Spread the love

Leave a Reply