তানজিন তিশার যতো রাগ
জাহিদ ভূঁইয়া: ছোটপর্দায় একের পর এক কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নাটক, টেলিছবি, বিজ্ঞাপন ও গানের মডেল হয়ে হয়েছেন আলোচিত। বলছি মডেল-অভিনেত্রী তানজিন তিশার কথা। ক’দিন আগেই কলকাতা থেকে একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং শেষে দেশে ফিরেছেন তিনি। ফিরেই ব্যস্ত হয়ে ওঠেছেন ভালবাসা দিবসের বেশ কিছু কাজ নিয়ে। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা ও অন্যান্য অনেক বিষয়ে আমাদের সময়’র সঙ্গে কথা বলেছেন তিশা।
নতুন বছর শুরু করলেন বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে। বিশেষ কোনো কারণ আছে কী?
সনক মিত্র দাদার নির্দেশনায় এর আগেও বেশ কিছু বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে, তার পুরো ইউনিটটিই একটি পরিবারের মতো। বেশ স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে কাজ করা যায়। বহুজাতিক কোম্পানীর পাউডারের নতুন বিজ্ঞাপনটির গল্প ভাবনা ও সনক দাদার কারণেই এ বিজ্ঞাপনে কাজ করার সম্মতি দিয়েছি। এতে আমার বিপরীতে ছিলেন সিয়াম আহমেদ। সবমিলিয়ে কাজটি নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। আশাকরছি, বিজ্ঞাপনটি প্রচারে এলে সবার ভালোলাগবে।
একটি খণ্ড নাটকেও তো কাজ করেছেন?
হ্যাঁ। কলকাতা থেকে ফিরেই ‘নাম জানা পথ’ নামের একটি নাটকে কাজ করেছি। এটি নির্মাণ করেছেন নিলয়। সহশিল্পী ছিলেন সৌমিক।
ব্যস্ততার তালিকায় আর যা কিছু আছে…
খালিদ হোসেন সম্রাট ভাইয়ের নির্দেশনায় শিগরিরই নতুন একটি নাটকের কাজ শুরু করব। এছাড়া ফেব্রুয়ারি প্রথম দিকে ভালবাসা দিবসের একটি নাটক ও একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে কাজ করব। লুৎফর রাসেলের পরিচালনায় নাটকটিতে আমার সহশিল্পী হিসেবে থাকবেন তৌসিফ মাহবুব। আর ‘জলের শরীর’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে আমার বিপরীতে অভিনয় করবেন জোভান ও সৌমিক।
শুনলাম ধারাবাহিক নাটকে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণটা বলবেন?
সত্যি বলতে কি, ধারাবাহিক নাটকের জন্য অনেক বেশি সময় দিতে হয়। গত বছর একটি ধারাবাহিকে কাজ করার পর অন্য অনেক কাজই করতে পারিনি। আর ধারাবাহিক নাটকে কাজ করে আমি প্রতিনিয়ত স্ক্রিনেও থাকতে চাই না। এ কারণেই ধারাবাহিকে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করবেন বলছিলেন। সেটি কি এ বছরই হবে?
চলচ্চিত্র হলো শিল্প-সংস্কৃতির সবেচেয়ে বড় মাধ্যম। আমার কাছে মনে হয়েছে, এ মাধ্যমে কাজ করার আগে নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করে নেওয়াটা জরুরি। সেই দিক থেকে আমি বলব, চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য এখন আমি পুরোপুরি প্রস্তুত। আর সেটা এ বছরই হবে ইনশাআল্লাহ্। এখন ব্যাটে-বলে সব মিলে গেলেই হলো। আর যদি কোনো কারণে এ বছর চলচ্চিত্রে অভিষেক না হয়, তাহলে হয়তো আর কখনওই এ মাধ্যমে কাজ করব না।
চলচ্চিত্রে কাজ করার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেবেন?
অবশ্যই কর্মাশিয়াল ফিল্ম হতে হবে। সেই সঙ্গে থাকতে হবে ভালো গল্প, পরিচালক ও বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।
গত বছর খবর রটেছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজের হাত ধরে আপনার চলচ্চিত্র অভিষেক হচ্ছে। সেটা নিয়ে কিছু বলতে চান?
গত বছর আমিও এমন বেশ কিছু খবর প্রকাশ হতে দেখেছি। কেউ কেউ বলেছিল, ‘রক্ত’ ছবির নায়িকা হিসেবে তানজিন তিশা চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করছেন। তবে জানি না, কোন সোর্স থেকে তারা এ খবরগুলো প্রকাশ করেছেন! এখন কথা হলো আমি যদি জাজ থেকে অভিনয় করতাম, সেটা জানাতে আমার প্রবলেমটা কোন জায়গায় ছিল? আমার কাছে তো মনে হয়, এমনটা যদি হতো, তাহলে আমিই নিজ থেকে সবাইকে জানাতাম। কিন্তু আমি অভিনয় করছি, আর আমিই কি-না জানিনা; বিষয়টা কেমন হয়ে গেল না! (হাসি) তাই যেকোনো খবর প্রকাশের আগে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মানুষদের সঙ্গে কথা বলে সঠিক খবরটাই প্রকাশ করা উচিত। তাহলে পাঠকরা বিভ্রান্ত হবেন না।
অভিষেকটা কি জাজ থেকে হওয়ার সম্ভাবনা আছে?
এটা বলতে পারছি না। তবে জাজের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু ব্যাটে-বলে মেলে নি। যদি ভবিষ্যতে কখনও ব্যাটে-বলে মিলে যায়, তাহলে অবশ্যই জাজের সঙ্গে আমাকে দেখা যাবে। তবে এটা ঠিক, ২০১৭ সালেই আমি চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করব। আর যদি না হয়, ঐ যে বললাম…
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। যে কারণে নিজেকে ভালো মানুষ বলে মনে হয়…
অনেক কারণই তো আছে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব? (হা হা হা) তার পরও আলাদা করে বলতে হলে বলব ‘হিংসা’ জিনিসটা আমার মধ্যে একেবারেই নেই। এছাড়া আমি খুব সেক্রিফাইস মাইন্ডের একটা মানুষ। ফরগিভ করতে অনেক পছন্দ করি। এখন কেউ যদি সেটার মিসইউজ করে, তাহলে আমার কিছু করার নেই। কিন্তু কারো কোনো ভুলকে খুব সহজেই আমি মাফ করে দিতে পারি। এই গুণটা কিন্তু সবার মধ্যে থাকে না।
কিছু দোষ, যা পাল্টাতে চান…
(হাসি) সত্যি কথা বলতে, আমার কিন্তু এমন কোনো দোষ নেই, যা কিনা পাল্টাতে হবে। তবে কিছু দিন আগে আম্মু আমাকে একটা কথা বলেছিল। পরে এটা নিয়ে আমি একটা স্টেটাসও দিয়েছি। আমার রাগটা হলো লাইসেন্স করা (হা হা হা)
আলাদীনের চেরাগ পেলে…
অবশ্যই চাইব, মানুষের চীপ মেন্টালিটির পরিবর্তন করতে। আমার মনে হয়, এটা করতে পারলে মানুষ ভালো হবে, সেই সঙ্গে দেশেরও পরিবর্তন হবে।
আরেকবার জন্মালে…
পূণর্জন্মে কিন্তু আমি বিশ্বাসী নই। তারপরও মনের অজান্তে যদি কখনও এটা নিয়ে ভাবি তখন মনে হয়, আবার জন্মালে যেন ‘তানজিন তিশা’ হয়েই জন্ম নেই।