২০১৬ সালে বাংলাদেশিদের ১২১টি জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকিয়েছে ব্রিটেন

Spread the love

image_update_imgবাংলা সংলাপ ডেস্কঃ বাংলাদেশে জোরপূর্বক বিয়ে প্রতিরোধে সজাগ রয়েছে যুক্তরাজ্য। ২০১৬ সালে ব্রিটিশ নাগরিকদের এ ধরনের এক হাজার ৪২৮টি বিয়ে ঠেকাতে পরামর্শ এবং সহযোগিতা দিয়েছে দেশটি। এগুলোর মধ্যে ১২১টি ক্ষেত্রে ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।

১০ মার্চ ২০১৭ তারিখে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকারের ফোর্স ম্যারেজ ইউনিট (এফএমইউ)। এতে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের যুক্তরাজ্যে এনে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার প্রবণতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে এমন প্রবণতার দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানি নাগরিকদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে ৬১২টি ক্ষেত্রে।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে জোরপূর্বক বিয়ের প্রবণতা বেড়েছে। ২০১৫ সালে এমন প্রবণতা ৭ দশমিক ১ শতাংশ থাকলেও ২০১৬ সালে তা দাঁড়ায় ৮ শতাংশে।

তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে এশিয়ার আরেক দেশ ভারত। গত বছর দেশটির নাগরিকদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে ৭৯টি।

ব্রিটিশ সরকারের ফোর্স ম্যারেজ ইউনিট (এফএমইউ) বলছে, এই পরিসংখ্যান শুধু এফএমইউ-এর হাতে যেসব তথ্য এসেছে, তার ভিত্তিতে করা। জোরপূর্বক বিয়ে একটি গোপন অপরাধ। আমাদের উল্লেখিত তথ্যে নির্যাতনের পুরো মাত্রা প্রতিফলিত নাও হতে পারে। ২০১৬ সালে প্রতি মাসে ৩৫০টির মতো ফোন পেয়েছে এফএমইউ।

জোরপূর্বক বিয়ের শিকারে পরিণত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা একজনকে শনাক্তও করেছে এফএমইউ।

ফোর্স ম্যারেজ ইউনিট (এফএমইউ) বলছে, ইতোমধ্যে যারা জোরপূর্বক বিয়ের শিকার হয়েছেন কিংবা এ ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, তাদের বেশির ভাগের (প্রায় ৮০ শতাংশ) ক্ষেত্রেই এটা ঘটেছে তৃতীয় কোনও পক্ষের মাধ্যমে। বেসরকারি সংস্থা, সহকর্মী, বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে এ ধরনের বিয়ের সূত্রপাত হয়। এমন বিয়ে থেকে সরে আসতে চাইলে পরিবার থেকে আক্রমণাত্মক বা প্রতিশোধমূলক আচরণের ভয় কাজ করে ঘটনার শিকার হতে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে।

এ ধরনের বিয়ের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যে বিয়েতে ছেলে-মেয়ে উভয়ের সম্মতি থাকে না এবং তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, সেটাই জোরপূর্বক বিয়ে।

ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ডের আইনে এ ধরনের বিয়ে অবৈধ। জোরপূর্বক শাস্তির জন্য যুক্তরাজ্যে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতেই পাত্র-পাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে এ ধরনের বিয়ের প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

ব্রিটিশ নাগরিকদের জোরপূর্বক বিয়ে ঠেকাতে কাজ করে সরকারের ফোর্স ম্যারেজ ইউনিট। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতর, কমনওয়েলথ অফিস, স্বরাষ্ট্র দফতরের সমন্বয়ে এটি চালু করা হয়। এ সংস্থা যুক্তরাজ্যের ভেতরে এবং দেশের বাইরেও কাজ করে থাকে। ব্রিটিশ নাগরিক এবং দ্বৈত নাগরিকদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে থাকে সংস্থাটি।

লোকজনকে পরামর্শ প্রদান এবং শিকারে পরিণত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা ব্যক্তিদের সহায়তায় এফএমইউ-এর স্বতন্ত্র পাবলিক  হেল্পলাইন রয়েছে। সংস্থাটি ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সুরক্ষার মতো নানা পরামর্শ দিয়ে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক মনে হলে তাদের উদ্ধারেও কাজ করে এফএমইউ।

/এমপি/এএআর/


Spread the love

Leave a Reply