১৩ মন স্বর্ণের বৈধ কাগজ নেই আপন জুয়েলার্সের
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ বাবা এক লম্পট ছেলেও আরেক লম্পট । অত্থ্যাৎ লম্পট বাবার লম্পট সন্তান । ধর্ষণ মামলায় লম্পট ছেলে এখন কারাগারে আর বাবা দিলদার আহমেদ সেলিম চোরাকারবারী সোনা ব্যবসায় ঢাকার মেইন ডিলার । বাংলাদেশের শুল্ক গোয়েন্দারা বলছেন আপন জুয়েলার্সের কর্ণধাররা জব্দকৃত সাড়ে ১৩ মন স্বর্ণ এবং ৪২৭ গ্রাম হীরার বৈধ কাগজ দেখাতে পারেননি। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর গত কয়েকদিনে দু’দফায় অভিযান চালিয়ে বনানী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামীর পরিবারের মালিকানাধীন আপন জুয়েলার্স এর পাঁচটি বিক্রয় কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়। সেগুলো থেকে অবৈধ সন্দেহে এসব অবৈধ স্বর্ণ এবং হীরা উদ্ধার করার কথা বলা হয়েছিলো।
বৈধ কাগজ দেখানো এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মালিকপক্ষকে তলব করা হয়েছিল। বনানী দু’জন ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাফাত আহমেদের বাবা দিলদার আহমেদ এবং তার দুই ভাই আপন জুয়েলার্স এর মালিক। তারা তিন ভাই তলবের কারণে আজ (বুধবার) শুল্ক অধিদপ্তরে গিয়েছিলেন।। তাদের বেশ কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রধান ড: মইনুল খান সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাদের অভিযানে উদ্ধার করা আড়াইশ কোটি টাকা মূল্যের ৪৯৮ কেজি স্বর্ণ এবং ৪২৭গ্রাম হীরার ব্যাপারে মালিকপক্ষ কোন বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। এরপরও আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য এই মালিকদের বৈধ কাগজ দেখানোর জন্য ২৩শে মে পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। সেদিন তারা বৈধতার প্রমাণ দিতে পারলে আটক স্বর্ণ ছাড়া পাবে।তা নাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে তিনি উল্লেখ করেছেন।
বৈধ কাগজ না থাকলে স্বর্ণ পাচারের অভিযোগে এবং শুল্ক আইনে মামলা হতে পারে বলেও বলা হয়েছে। একইসাথে শুল্ক অধিদপ্তর বলেছে, সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণের মধ্যে খুব বেশি হলে দশ কেজির মতো স্বর্ণ কিছু গ্রাহকের হতে পারে- এটা মালিকরা জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে।ফলে গ্রাহকদের স্বর্ণ বাছাই করে তা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।
তবে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার পর বেরিয়ে এসেই সাংবাদিকদের মুখে পড়েন দিলদার আহমেদসহ আপন জুয়েলার্স এর তিন মালিক। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে দিলদার আহমেদ দাবি করেছেন, তিনি বৈধভাবে ব্যবসা করেন। তার মতই একইভাবে সারাদেশে অন্য স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাও ব্যবসা করেন। তিনি প্রশ্ন করেন — শুধু তার দোকান কেন বন্ধ করা হলো? সারাদেশের সব দোকান বন্ধ করা উচিত।
তবে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রধান ড: মইনুল খান বলেছেন, তাদের কাছে আপন জুয়েলার্স এর অবৈধ মজুদের ব্যাপারে আগের তথ্য ছিল। এছাড়া বনানীর ধর্ষণের মামলার ক্ষেত্রে পাচার করা স্বর্ণ দিয়ে ব্যবসার করার অভিযোগ এসেছে। ফলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে তারপর শুল্ক গোয়েন্দারা আপন জুয়েলার্স এর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
ড: মইনুল খান আরও বলেছেন, স্বর্ণের অন্য ব্যবসায়ীদের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। স্বর্ণ আমদানির ব্যাপারে জটিলতা দুর করার জন্য তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন।
তিনি বলেছেন, এ পর্যন্ত পাচার হয়ে আসা স্বর্ণ যা ধরা পড়েছে, সেগুলো দ্রুত নিলামে দিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া স্বর্ণ আমদানির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হয়। তাতে অনেক সময় লাগে এবং জটিলতা আছে বলে ব্যবসায়ীরা বলেছে। এই জটিলতা দুর করার জন্য শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছে।