কনজারভেটিভ পার্টির নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টি বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দলটির নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের হ্যালিফেক্সে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। এতে তিনি বিশেষ করে ব্রেক্সিট (যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ) কার্যকর এবং অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেন।
থেরেসা মে বলেন, ব্রেক্সিট নিয়ে দেশের সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। এটা মোকাবিলায় স্থিতিশীল ও শক্তিশালী নেতৃত্ব জরুরি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের নির্বাচনে যিনি বিজয়ী হবেন; তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ব্রেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যের জন্য সর্বোত্তম চুক্তি করতে তাকে নিরলস কাজ করে যেতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পর যুক্তরাজ্যের জন্য ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তখন স্বাধীনভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাণিজ্য ও নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হবে। আমরা যদি এটাকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে না পারি, তাহলে এর পরিণাম হবে গুরুতর।
যুক্তরাজ্যে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দেওয়ার বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বার্ষিক ফি দিতে হয়। ইশতেহারে এটি দ্বিগুণ করার কথা বলা হয়েছে।
আগামী ৮ জুন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুদিন আগেই ইশতেহার ঘোষণা করে যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। এতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি শিল্পের অংশবিশেষ জাতীয়করণ করা এবং টিউশন ফি কমানোর মতো নানা প্রস্তাবনার উল্লেখ ছিল। লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন দলটির নেতৃত্বে একটি প্রত্যাশিত সরকার গঠনের লক্ষ্যে তার অঙ্গীকারের কথা জানান। এতে তিনি একটি মৌলিক ও দায়িত্বশীল পরিকল্পনার কথা বলেন।
লেবার পার্টি বলছে, থেরেসা মে সরকারের মানুষকে ভয় দেখানোর যে নির্বাচনি প্রচারণা কৌশল (ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা) তার একটি শক্তিশালী বিকল্প উত্থাপন করেছে লেবার পার্টি।
ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে জেরেমি করবিন বলেন, মানুষ চান দেশ হবে অধিকাংশ মানুষের জন্য; গুটিকতকের জন্য নয়। গত সাত বছর ধরে দেশের মানুষ এর বিপরীতটা দেখে আসছেন। এটা ছিল ধনী ও অভিজাতদের একটি ব্রিটেন। আগামী পাঁচ বছরে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এসবের আমূল পরিবর্তন সাধন করা।
এদিকে ইইউ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে আসার সময় ‘ডিভোর্স বিল’ অর্থাৎ ‘বিচ্ছেদসংক্রান্ত খরচ’ বাবদ ১০০ বিলিয়ন ইউরো পরিশোধ করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন থেরেসা মে প্রশাসনের ব্রেক্সিটবিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আইনসম্মতভাবে যতটুকু পরিশোধ করা প্রয়োজন, যুক্তরাজ্য কেবল ওই পরিমাণ অর্থই পরিশোধ করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চাহিদামাফিক অর্থ যুক্তরাজ্য পরিশোধ করবে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রেক্সিট বিলের পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন ইউরো থেকে বাড়িয়ে ১০০ বিলিয়ন নির্ধারণ করেছে বলে ফিনান্সিয়াল টাইমসে একটি খবর প্রকাশের পর ডেভিস এ প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘বাধ্যবাধকতাগুলোকে’ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। তবে এক্ষেত্রে কী পরিমাণ বিল ধরা হয়েছে তা তারা দেখেননি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন খুব তোয়াক্কা না করার আচরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আইটিভির গুড মর্নিং ব্রিটেন অনুষ্ঠানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ডেভিস।