ব্রিটেনের জঙ্গি কার্যক্রমে ‘সৌদি অর্থায়ন’ আড়াল করছেন থেরেসা মে?
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃযুক্তরাজ্যের জঙ্গিবাদে বিদেশি অর্থায়ন নিয়ে তৈরি ‘স্পর্শকাতর’ এক প্রতিবেদন প্রকাশের কথা ছিল গত বছরের বসন্তে। ‘পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া’র কথা জানিয়ে এখনও তা প্রকাশ করেনি থেরেসা মে’র সরকার। তবে ৮ জুনের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীরা চাপ সৃষ্টি করেছেন তার ওপর।
প্রতিবেদনটি দ্রুত প্রকাশ করতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন লেবার এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টির নেতারা। জঙ্গি তহবিলের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের ভূমিকাকে সন্দেহের অগ্রভাগে রেখে ওই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হয়।
সম্প্রতি দেশটিতে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র রফতানি লাইসেন্স বিক্রির পরিমাণ সাড়ে তিন বিলিয়ন পাউন্ড ছাড়িয়েছে। সমালোচকদের মতে, এসব অস্ত্র ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাত ও উগ্রপন্থার বিস্তার ঘটাচ্ছে। জিহাদি প্রপাগান্ডা সংক্রান্ত উপকরণ ও তহবিল কোথা থেকে আসে তা খতিয়ে দেখার জন্য লিবারেল ডেমোক্র্যাটসরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। সে দাবিতে সাড়া দিয়ে ২০১৫ সালে ডেভিড ক্যামেরন এ ব্যাপারে তদন্ত শুরুর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
২০১৬ সালের বসন্তে প্রতিবেদনটি প্রকাশের কথা ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে গত মাসে গার্ডিয়ান জানায়, সে তদন্ত প্রতিবেদন এখনও অপূর্ণই থেকে গেছে এবং স্পর্শকাতর বিষয়বস্তুর কারণে এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি। তবে ৩ জুন লন্ডন হামলার পর তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।
সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে বারবারই সমালোচিত হয়ে আসছে কনজারভেটিভ সরকার।
রবিবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় কার্লিসলেতে দেওয়া ভাষণে লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেন, সৌদি আরবসহ যেসব পারস্য উপসাগরীয় দেশ উগ্রপন্থী মতাদর্শকে উসকানি দিচ্ছে এবং তহবিল যোগাচ্ছে তাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের কিছু জটিল আলাপ শুরু করা প্রয়োজন। জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিদেশি অর্থায়নের উৎস সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি গোপন রাখাটা থেরেসা মে এর জন্য ভালো হবে না। এখানকার এবং মধ্যপ্রাচ্যের আইএসসহ জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলোর তহবিল কিভাবে বন্ধ করা যায় সে ব্যাপারে আমাদের মনযোগী হতে হবে।
সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে লেখা এক প্রতিবেদনে লিবারেল ডেমোক্র্যাটস এর নেতা টিম ফ্যারনও সরকারের তৈরি করা প্রতিবেদনটি প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘থেরেসা মে এর হাতে এখন দুটি উপায় আছে। হয় প্রতিবেদনটি প্রকাশ করবেন নাহয় তা লুকিয়ে ফেলবেন?’
প্রতিবেদনটি প্রকাশে দেরি হওয়া নিয়ে সোমবার রেডিও ফোর এর টুডে অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিমন্ত্রী কারেন ব্র্যাডলির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সরকার সন্ত্রাসী অর্থায়েনর বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা ‘হাস্যকর’।