২৬৯ জনের তালিকায় ১১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জঙ্গি
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ জঙ্গিবাদী কার্যক্রমে জড়িয়ে ৮৫০ জন বিভিন্ন সময় যুক্তরাজ্য ছেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ২৬৯ জনকে শনাক্ত করতে পেরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তাদের প্রতিবেদন এবং তথ্যভান্ডারে এদের তথ্য রয়েছে। এই ২৬৯ জনের মধ্যে ১১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তারা আইএস ভূখণ্ডে হামলায় মারা গেছে কিংবা নিখোঁজ রয়েছে।
বিবিসির তথ্যমতে, ২৬৯ জনের মধ্যে দেড় শর মতো সিরিয়া ও ইরাকে গিয়ে মারা পড়েছে বা হদিস পাওয়া যায়নি। আর শ খানেক যুক্তরাজ্যে ফিরে এসে বিচারের মুখোমুখি হয়েছে। আত্মঘাতী হামলায়ও জড়িত কেউ কেউ।
মুহাম্মদ আবদুল মান্নানের পরিবার
যুক্তরাজ্যবাসী বাংলাদেশি আবদুল মান্নান ১২ সদস্যের পরিবারের প্রধান। পরিবারে রয়েছে তাঁর তিন নাতি-নাতনি। তাদের বয়স ১ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে মান্নানের পরিবার বাংলাদেশে ছুটি কাটানোর কথা বলে যুক্তরাজ্যের লুটন শহর ছাড়ে। মে মাসে তারা যুক্তরাজ্যে ফেরার জন্য রওনা হয় বাংলাদেশ থেকে। মাঝখানে নামে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। সেখান থেকে নিখোঁজ হয় তিন শিশুসহ ১২ জনের পুরো পরিবার। এর দুই মাস পর আইএসের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ওই পরিবার আইএসনিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডে আছে। পরিবারের পক্ষ থেকে আইএস বিবৃতি দিয়ে জানায়, তারা আইএস ভূখণ্ডে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অধিক নিরাপদে আছে। বিবিসি অবশ্য তখন ওই বিবৃতির সত্যতা খতিয়ে দেখতে পারেনি।
নিখোঁজ নয়জন হলেন মুহাম্মদ আবদুল মান্নান (৭৫), তাঁর স্ত্রী মিনেরা খানম (৫৩), মেয়ে রাজিয়া খানম (২১), ছেলে মোহাম্মদ জায়েদ হুসাইন (২৫), মোহাম্মদ তৌফিক হুসাইন (১৯), মোহাম্মদ আবুল কাসেম সরকার (৩১), মোহাম্মদ সালেহ হুসাইন (২৬), পুত্রবধূ সায়েদা খানম (২৭) এবং রওশনারা বেগম (২৪)। তিনটি শিশুর নাম-পরিচয় বলা হয়নি প্রতিবেদনে।
সাইফুল হক
যুক্তরাজ্যের কার্ডিফে থাকতেন সাইফুল হক। বাংলাদেশ থেকে গিয়ে পড়াশোনা করে কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছিলেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সিরিয়ার রাকা প্রদেশের কাছে জঙ্গিদের ওপর বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। এতে সাইফুলসহ ১০ জনের মৃত্যু হয় বলে ওয়াশিংটন জানায়। তিনি আইএসের প্রযুক্তি বিভাগে সম্পৃক্ত ছিলেন। জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে হ্যাকিং করতেন। পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা তখন জানিয়েছিলেন, সাইফুল বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের পরিকল্পনাকারী হিসেবে কাজ করতেন।
বিবিসি শুধু সাইফুলের আইএস এলাকায় চলে যাওয়ার কথা বললেও ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে কম্পিউটার প্রকৌশলী ও উদ্যোক্তা সাইফুল কেবল নিজেই আইএসে যোগ দেননি, সঙ্গে নিয়েছেন স্ত্রী, নিজের এক সন্তান এবং ভাইয়ের শিশুসন্তানকে। সাইফুল তাঁর বাবা, ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও একই মতবাদে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
অজ্ঞাত এক বাংলাদেশি
প্রকৃত নাম জানা যায়নি। তবে তিনি আবু সাইফ আল-ব্রিটেনি নামে পরিচিত ছিলেন। সিরিয়ার আলেপ্পোতে আইএসের ওপর মার্কিন জোটের বিমান হামলায় ২০১৪ সালের আগস্টে তিনি নিহত হন। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব র্যাডিকালাইজেশন জানায়, ওই ব্যক্তি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। তিনি সৌদি আরবে ইংরেজি শেখাতেন।