মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ দাঙ্গাকারীরা গণহারে মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করছে, নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করছে শিশু, নারী ও পুরুষদের

Spread the love

imageবাংলা সংলাপ ডেস্কঃ সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ দাঙ্গাকারীরা গণহারে মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করছে। হত্যা করছে মুসলিমদের।  নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে শিশু, নারী ও পুরুষদের। এরই মধ্যে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার কয়েক দফা বাংলাদেশের ভৌগূলিক সীমানা লংঘন করেছে । বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমার দূতাবাসকে সতর্ক করে নামমাত্র একটি বার্তা পাঠানো হয়েছে । এদিকে  মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেনাবাহিনী আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। এক্ষেত্রে উগ্রপন্থি রোহিঙ্গারাও জড়িত। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধানের অফিস থেকে শুক্রবার বলা হয়েছে, এরই মধ্যে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতায় কমপক্ষে ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। এর বেশির ভাগই রোহিঙ্গা মুসলিম। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সহিংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় খুঁজছে। এ যাত্রায় অনেকে এই বন্যা মৌসুমে ফুলে ফেঁপে থাকা নাফ নদীতে ডুবে মারা যাচ্ছেন। রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুর্দশার এমনই চিত্র তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশে ঠাঁই নিয়েছেন ৩৮ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। image (2)আরো ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান করছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশে তাদেরকে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। সীমান্তের নাফ নদীতে ডুবে মারা যাচ্ছে অনেক মানুষ। রাখাইনে সেনাবাহিনীর গণহারে বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ায় সেখানে উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, রাখাইনে সাম্প্রদায়িকতা চলে যেতে পারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মিয়ানমারের সেনাপ্রধান কমান্ডার ইন চিফ মিন অং হ্লাইংয়ের অফিস থেকে শুক্রবার নিহতের আপডেট সংখ্যা দেয়া হয়েছে। ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘৩০শে আগস্ট পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। তারা নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের ওপর ৫২টি হামলা করেছে। এসব হামলায় সন্ত্রাসীদের ৩৭০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত আটক করা হয়েছে ৯ জনকে।’ আট দিনের এই লড়াইয়ে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর কমপক্ষে ১৫ জন ও বেসামরিক সাধারণ ১৪ জন নিহত হয়েছেন। তবে গত শুক্রবার ৭৮ জন ‘সন্ত্রাসী’ নিহত হওয়ায় বর্তমানের সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা হয় নি। এএফপি লিখেছে, গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটাই হলো রাখাইনে সবচেয়ে তিক্ত, রক্তাক্ত ইতিহাসের অধ্যায়। এতে রাখাইন রাজ্য ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। জাতিগত ও ধর্মীয় বিভেদ প্রকট আকার ধারণ করেছে। image (1)অসংখ্য রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও অং সান সুচির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় বইছে। জাতিসংঘ বলছে, এরই মধ্যে স্থল রুট ও নাফ নদী ক্রস করে বাংলাদেশে পৌঁছেছে কমপক্ষে ৩৮০০০ রোহিঙ্গা। তবে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো বলছে, রাখাইনে নিহতের সংখ্যা সরকার স্বীকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপগুরো বলছে, রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রত্যন্ত গ্রামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাখাইন বৌদ্ধরা গণহত্যা চালাচ্ছে। মিয়ানমারের ওপর নজর রাখছে এমন একটি এনজিও ফোরটিফাই রাইটস। তারা বলছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দাঙ্গাকারীরা রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে গণহারে গুলি করে মানুষ মারছে। গ্রাম ঘেরাও করে যা ইচ্ছা তা-ই করছে। রোববার বিকালে তারা রাথেডাউং শহরের পাশে চুট পাইন গ্রামে ৫ ঘন্টা হত্যাযজ্ঞের উল্লাস চালিয়েছে তারা। তাদের শিকার হয়েছে শিশুরাও। তবে এ অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায় নি। কারণ, ওই এলাকায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাস্তবে সেখানে এক জটিল ও ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে। সহিংসতার জন্য উভয় পক্ষ একে অন্যকে দায়ী করছে। তবে এরই মধ্যে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে ব্যাপক হত্যাকা-ের খবর বেরিয়ে আসছে। ব্যাপকহারে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। কায়েত ইয়োই পাইন গ্রামের রোহিঙ্গা এক নারী (২৩) বলেছেন, তিনি দেখেছেন তার গ্রামে সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ দাঙ্গাকারীরা গণহারে মুসলিম নারীদের ধর্ষণ করছে। হত্যা করছে মুসলিমদের। তিনি বলেছেন, নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হচ্ছে শিশু, নারী ও পুরুষদের। image (3)


Spread the love

Leave a Reply